এপ্রিল ২৮, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
ইসলাম প্রচ্ছদ

হালাল রিজিক অন্বেষণে হালাল ব্যবসা করা চাই

 আজ বারো রমজানুল করীম। পবিত্র কোরআনে উল্লেখ রয়েছে যে, নামাজ শেষ হওয়ার পর তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর ফজল (রিজিক) অন্বেষণ কর। (সুরা জুমা- আয়াত- ৯) নবীয়ে করীম সা. বলেছেন যে, হালাল রিজিক অন্বেষণ করা ফরজ ইবাদতের সমান গুরুত্বপূর্ণ (কানজুল উম্মাল খন্ড ২) হযরত উমর রা. বলেছেন তোমাদের কেউ যেন জীবিকার অন্বেষণ ছেড়ে অলস বসে না থাকে। (কানজুল উম্মাল খন্ড ২) কোরআন এবং হাদিসের বিভিন্ন ভাষ্য স্পষ্ট ভাবে নির্দেশ করা হয়েছে।

আল্লাহ পাকের ইবাদত করার পাশাপাশি নিজের জীবিকা উপার্জনের জন্য ও বৈধ সব রকমের চেষ্টা করতে হবে। অব্যাহতভাবে সেই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। শুধু এই নয় বৈধ উপায়ে রুজির চেষ্টাও ইবাদত। এ জন্য আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে প্রচুর ছওয়াব মিলবে। হালাল জীবিকা উপার্জনের যত পদ্ধতি আছে ব্যবসা বাণিজ্য এসবের মধ্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। পৃথিবীতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে ব্যবসাই সবচেয়ে বড় উপার্জনের মাধ্যম। সভ্যতা সংস্কৃতির উপকরণ গুলোর মধ্যে এটিই অন্যতম উপকরণ (আলা মাজাহিবুল আরাবায়া খন্ড ২. পৃ: ২০২) ইসলাম ব্যবসা বাণিজ্যকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব এবং ব্যাপক উৎসাহ দিয়াছে। কোরআন শরীফে বলা হয়েছে তোমরা একে অপরের ধনসম্পদ অবৈধ উপায়ে আত্মসাৎ কোরো না। পারস্পরিক সম্মতিতে ব্যবসা বানিজ্যের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করো (সুরা নিসা আয়াত ২৯) নবীয়ে করীম সা. বলেছেন সৎ ও আমানতকারী ব্যবসায়ীগণ হাশরের দিনে নবী ও শহীদদের সঙ্গে অবস্থান করার সৌভাগ্য অর্জন করবে। (তিরমীজি শরীফ) তিনি আরো বলেছেন, যে ব্যক্তি ব্যবসা করে তার বাড়িতে প্রাচুর্য ও কল্যাণ সৃষ্টি হয়। ইসলাম কোন ক্ষেত্রেই বলগাহীন স্বাধীনতা দেয়নি। সবক্ষেত্রেই রয়েছে নির্দিষ্ট নীতিমালা। আয় উপার্জন ও ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম ঘটেনি। এক্ষেত্রে মৌলিকভাবে ইসলামের দুটি মূলনীতি রয়েছে। যথা: ১. ব্যবসা বাণিজ্য উপাদান ও মৌলিক দিক থেকে বৈধ হতে হবে। যেমন: মদ, জুয়া, সুদ, ঘুষ ইত্যাদির সঙ্গে জড়িত হওয়া ইসলামে অনুমোদন নেই। কারণ এসব বিষয় ইসলামে হারাম করা হয়েছে। দুই. ব্যবসা বাণিজ্য সকল অবস্থায় বৈধ পন্থায় হতে হবে অর্থাৎ সেখানে কোন ধরণের ধোঁকাবাজি ভেজাল ও ফাঁকফোকর থাকতে পারবে না।

প্রিয় নবী সা. বলেছেন উত্তম উপার্জন হলো কল্যাণকর বেঁচাকেনা। হস্ত শিল্পের মাধ্যমে জীবন পরিচালনার উপকরণ সংগ্রহ করা। (আল মাজাহিবুল আরাবায়া খন্ড: ২ পৃ: ২০২) মাবরুর তথা কল্যাণ কর বেচাকেনা হলো, যাতে ক্রেতা বিক্রেতার পারস্পরিক সহযোগিতা ও কল্যাণ নিশ্চিত হয়। এতে কোন ধরণের প্রতারণা আত্মসাৎ ও আল্লাহর নাফরমানি থাকবে না। রাসুল সা. বলেছেন নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং অন্যকে ক্ষতি করা উচিত নয়। ধোঁকা, প্রতারণা ও ফাঁকিবাজি ইসলামে মানবাধিকার লংঘন হিসাবে চিহ্নিত। কোন মুসলমান সত্যের সঙ্গে মিথ্যাচার সংমিশ্রণ করতে পারে না। কোরআন শরীফে উল্লেখ রয়েছে হে মুমিনগণ তোমরা সত্যের সঙ্গে অসত্যের সংমিশ্রণ ঘটাবে না। আর মন্দ জিনিস ভালো বলে চালিয়ে দেওয়া, ভালোর সঙ্গে মন্দের মিশ্রণ ঘটিয়ে ধোঁকা দেওয়া, ওজনে নিজের স্বার্থ রক্ষায় কম বেশি করা, বেশি দামি বস্তুর সঙ্গে কম দামি বস্তু বা অন্য কোন ভেজাল মিশিয়ে খাঁটি জিনিস চড়া দামে বিক্রি করার প্রতারণা। ধোঁকাবাজ, মিথ্যুক, খাদ্য ভেজাল মিশ্রণকারী লোকদের সমাজের মানুষ ভালো চোখে দেখেনা। তাদের বিশ্বাস করেনা। অন্তর থেকে সম্মান করেনা। দুনিয়াতে লাঞ্চনা ও ব্যর্থতা এরা নিজের চোখে দেখতে পারেন। সুতরাং সামাজিক দায়বদ্ধতার পাশাপাশি মাহে রমজান শরীফের মূল্যবোধই কেবল এসব অপরাধ থেকে সমাজকে মুক্ত রাখতে পারে।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official

বরিশালে দুর্ঘটনায় নিহত ২

banglarmukh official

পাকিস্তানে ট্রেনে জিম্মি দেড় শতাধিক যাত্রী উদ্ধার, ২৭ সন্ত্রাসী নিহত

banglarmukh official

পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেন হাইজ্যাক, জিম্মি শতাধিক

banglarmukh official