এপ্রিল ২০, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
খেলাধুলা ঢাকা প্রচ্ছদ ফুটবল

মেসি যেদিন মাতিয়েছিলেন ঢাকার মাঠ

ঢাকায় পা রাখলেন লিওনেল মেসি। সে সময়কার হোটেল শেরাটনে ছিল আর্জেন্টাইন দলের আবাস। ফাইল ছবি

যেন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। সেই অত্যাশ্চর্য গল্পের মতোই বাঁশির সুর বাজিয়ে সবাইকে নিজের দিকে টানেন লিওনেল মেসি। বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার তিনি—এই পরিচয়টাই সবাইকে বশ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বাংলাদেশের ফুটবল ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের তলানিতে থাকলেও এ দেশের ফুটবলপ্রেমীরা গর্ব করতে পারেন একটি জায়গায়—বিশ্বসেরা মেসি যে খেলে গেছেন তাঁদের ঘরের আঙিনায়। আর্জেন্টাইন মহাতারকাকে অন্তত জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, বাংলাদেশের মানুষ তাঁকে ভালোবাসে কতটা! দিনটি ছিল ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১১! ক্যালেন্ডারের পাতায় মেসির বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখার সেই দিনটি চিরস্মরণীয় লাখো-কোটি ফুটবলপ্রেমীর কাছে।

প্রায় সাত বছর হতে চলল। কিন্তু সে দিনটি হয়তো ভোলেননি অনেকেই। মেসির আর্জেন্টিনা ঢাকায় নামার পরদিনই, ৬ সেপ্টেম্বর নাইজেরিয়ার বিপক্ষে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সেই প্রীতি ম্যাচটিতে দর্শক উপচে না পড়লেও গ্যালারি ছিল ভরা। টিকিটের চড়া মূল্যের কারণে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গ্ল্যামারাস ফুটবল ম্যাচটিতে সাধারণ মানুষের উপস্থিতির হার কম থাকলেও ঢাকায় এসেছেন মেসি, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে খেলছেন—এই তৃপ্তিই উদ্বেলিত ও আনন্দিত করেছিল দেশের মানুষকে। টিকিটের চড়া মূল্য না ধরে আসলে উপায় ছিল না আয়োজক বাফুফের। বাংলাদেশের মানুষের কাছে মেসি যতটা প্রিয়, সে তুলনায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের আসনসংখ্যা যে সীমিত। মাত্র ২৫ থেকে ৩০ হাজার দর্শকের স্টেডিয়ামে শৃঙ্খলা বজায় রাখতেই যে টিকিটের চড়া মূল্য প্রয়োজন ছিল

ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সে ম্যাচে মেসি। ফাইল ছবি

মাঠে যাঁরা সেদিন এসেছিলেন, তাঁদের পয়সা উশুল হয়েছিল ভালোমতোই। মেসি প্রথম থেকেই খেলেছিলেন। দারুণ খেলেছিলেন। একপর্যায়ে তো নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা গোলের খুব কাছাকাছিই চলে গিয়েছিলেন। নাইজেরিয়ান অধিনায়ক ওবি মিকেলের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে দ্রুতগতিতে একে একে ছিটকে ফেলেছিলেন পাঁচজনকে। শেষ পর্যন্ত তাঁর বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটটি জালে জড়ালে তা হতে পারত তাঁর সেরা গোলগুলোর একটি। কিন্তু সেটি হয়নি। কেবল মেসির ওই দৌড় দেখেই মাঠের দর্শকেরা সেদিন ভুলে গিয়েছিলেন টিকিটের অগ্নিমূল্য!

মেসি যেদিন ঢাকায় নামলেন, সে দিনটি ছিল অন্য রকম। গোটা ঢাকায় ছিল বাড়তি নিরাপত্তার চাদর। কিন্তু মেসিরা বিমানবন্দর থেকে বের হতেই পরিচিত হলেন এ দেশের মানুষের ভালোবাসার প্রতি। বিমানবন্দর থেকে হোটেল পর্যন্ত তাঁর আসার পথে রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে ছিল মানুষ—মেসিকে এক নজর দেখতেই। আর্জেন্টিনার সেই দলটিতে ছিলেন সার্জিও আগুয়েরো, অ্যাঙ্গলে ডি মারিয়া, সার্জিও রোমেরো ও গঞ্জালো হিগুয়েইন কিংবা হাভিয়ের মাচেরানোর মতো তারকারা। কিন্তু মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিলেন ওই মেসিই। রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে থাকা জনতার লক্ষ্যও ছিল তাই, যদি বাসের জানালায় টানানো পর্দার ফাঁক গলে একটিবারের মতো দেখা যায় স্বপ্নের তারকাকে।

নাইজেরিয়াকে সে ম্যাচে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা। তিন গোলের দুটিতেই ছিল মেসির অবদান। গোল করেছিলেন হিগুয়েইন ও ডি মারিয়া। বাকি গোলটি অবশ্য ছিল আত্মঘাতী। নাইজেরিয়ার পক্ষে একমাত্র গোলটি ছিল চিনেদু ওবাসির। মেসি সেদিন পুরো ম্যাচ খেলেননি। দ্বিতীয়ার্ধের একটা পর্যায়ে তুলে নেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু যতক্ষণ মাঠে ছিলেন, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামকে তিনি মাতিয়েছিলেন আপন মহিমায়। সেদিন আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়ার প্রীতি ম্যাচটি পুরোপুরিই হয়ে উঠেছিল মেসিময়।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মাঠে অতীতে অনেক তারকাই খেলেছেন, আলো ছড়িয়েছেন। কিন্তু ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ওই রাতে মেসি দর্শকদের নিয়ে গিয়েছিলেন স্বপ্নের জগতে, যে জগতের সঙ্গে ঢাকার দর্শকদের পরিচয় ছিল না তেমন একটা।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official

বরিশালে দুর্ঘটনায় নিহত ২

banglarmukh official

পাকিস্তানে ট্রেনে জিম্মি দেড় শতাধিক যাত্রী উদ্ধার, ২৭ সন্ত্রাসী নিহত

banglarmukh official

পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেন হাইজ্যাক, জিম্মি শতাধিক

banglarmukh official