এক প্রেমিকার সঙ্গে তিনজনের প্রেমের সম্পর্ক। বিষয়টি জেনে যায় ৩ নম্বর প্রেমিক। মেনে নিতে পারেনি প্রেমিকার এমন আচরণ। সেই ক্ষোভে প্রেমিকার ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করে ৩ নম্বর প্রেমিক মহব্বত হাওলাদার অপু। প্রেমিকের ছোড়া অ্যাসিডে ঝলছে যায় প্রেমিকা ও তার ছোট বোন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে প্রেমিক অপু এসব কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ভোলার পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন বলেন, ভোলায় দুই বোনের ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপের দায় স্বীকার করেছে অপু। ভুক্তভোগী এক বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে সে একাই এই কাজে অংশ নেয়।
এর আগে শুক্রবার গভীর রাতে দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের শান্তিরহাট এলাকার নিজ বাড়ি থেকে মহব্বত হাওলাদার অপুকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
দুপুরে পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে জানান, এবছর এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থী তানজিম আক্তার মালার ৩ নম্বর প্রেমিক অপু এ ঘটনায় জড়িত।
গত ১৪ মে গভীর রাতে প্রেমিকা তানজিম আক্তার মালার ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করে প্রেমিক অপু। এ সময় মালা ও তার ছোট বোন মার্জিয়ার মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়।
ঘটনার পর পরই আহতদের স্বজনরা অ্যাসিড নিক্ষেপের জন্য একই বাড়ির ফারুকের ছেলে রাজিবকে সন্দেহ করে মামলা দেয়। ওই সময় মালাও জানায়, রাজিব তাকে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। ব্যর্থ রাজিব এই কাজ করেছে। এ ঘটনায় রাজিবের বাবা ফারুক রাঢ়িকে গ্রেফতারও করে পুলিশ।
এদিকে, নির্দোষ রাজিবের পরিবার প্রকৃত ঘটনা বের করতে পুলিশকে নানা তথ্য দেয়। পাশাপাশি ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনুসন্ধান চালিয়ে এ ঘটনায় অপুর সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ।
শনিবার ডিবি কার্যালয়ে অপু জানায়, ভোলা সরকারি কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করছে সে। মালার সঙ্গে তার মোবাইলে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের প্রেম হয়। জীবনের প্রথম প্রেম হিসেবে মালাকে সে ভীষণ ভালোবাসে। কিন্তু কয়েকদিন পর সে জানতে পারে মালার সঙ্গে তিনজনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে।
ফলে মালার ওপর ভীষণ ক্ষিপ্ত হয় অপু। সিদ্ধান্ত নেয় অ্যাসিড নিক্ষেপের পর মালাকে কেউ বিয়ে করতে রাজি হবে না। ব্যাটারি চার্জের দোকান থেকে অ্যাসিড সংগ্রহ করে সে। এরপর গভীর রাতে বাইসাকেল চালিয়ে মালাদের বাড়ি যায়। জানালা খোলা পেয়ে ঘুমন্ত মালার ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায় অপু। সেই অ্যাসিডে ঝলছে যায় মালা ও তার ছোট বোন মার্জিয়া। বর্তমানে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপারের পাশপাশি উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিন মাহমুদ, সহকারী পুলিশ সুপার শেখ সাব্বির হোসেন ও ডিবি পুলিশের ওসি শহিদুল ইসলাম।