এপ্রিল ২৫, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
করোনা জাতীয়

প্লাজমা দিতে চান এই চিকিৎসক দম্পতি

তাঁরা দুজনেই কক্সবাজারের টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকৎসক। হাসপাতালে সেবা দিতে গিয়ে প্রথমে স্ত্রী ফাহিম তাসনুভা আক্রান্ত হন। এর পর আক্রান্ত হন স্বামী সুলভ আচার্য। চিকিৎসা শেষে গত ১৬ মে দুজনের দ্বিতীয়বারের মতো করোনা নেগেটিভ আসে। এর পর থেকে ১৪দিনের কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। নিজেদের সুস্থতার পর এখন তাঁরা অন্যান্য রোগীর সুস্থতার জন্য প্লাজমা দিতে প্রস্তুত।

ফাহিম তাসনুভা বলেন, দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছি। আমার মেয়েটির (৫) সঙ্গে ঈদ কাটালাম। এখন করোনা রোগীর সেবায় আবার কাজে যোগ দেব। যদি চট্টগ্রামে প্লাজমা সংগ্রহ করা হয় তাহলে আমরা দুজন প্লাজমা দেব। এই এন্টিবডি অন্য রোগীদের কাজে লাগবে।

কিছু উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তাসনুভা কক্সবাজারে নমুনা দেন ২৭ এপ্রিল। পরদিন তাঁকে জানানো হয় তিনি নেগেটিভ। এর পর তিনি চট্টগ্রাম ফিরে পরিবারের সদস্যদের সংস্পর্শে আসেন। এর পর ১ মে কক্সবাজার থেকে পুনরায় জানানো হয় তিনি কোভিড-১৯ পজিটিভ। ওইদিনই জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। একবার নমুনা নেগেটিভ আসার পর ১৪ মে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেন। ১৬ মে তাঁর দ্বিতীয়দফা নেগেটিভ আসে। একইদিন তার স্বামী সুলভেরও দ্বিতীয়বারের মতো করোনা নেগেটিভ আসে।
সুলভ বলেন, আমি বাসায় চিকিৎসা নিয়েছি। আমার উপসর্গ ছিল মৃদু। করোনা থেকে সুস্থ হয়েছি। এখন চাই মানুষের পাশে দাঁড়াতে। প্লাজমা দিয়ে অন্যান্যদের সাহায্য করতে। প্লাজমা দেওয়াটা রক্ত দেওয়ার মতো একটা ব্যাপার। এতে কোনো ক্ষতি নেই।
স্ত্রী আক্রান্ত হওয়ার পর সুলভের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ৩ মে তার করোনা পজিটিভ আসে। এর পর সুলভের ছোট ভাইয়েরও করোনা পজিটিভ হয়। করোনা ভাইরাস থেকে কীভাবে নিজেকে এবং স্বজনদের দূরে রাখা যায় তা অকপটে বলেছেন এই চিকিৎসক দম্পতি। যদি আক্রান্ত হয়ে যায় তাহলে কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে তাও জানালেন সুলভ।
সুলভ বলেন, তৃতীয় বিশ্বে মানুষ বিভিন্ন ছোঁয়াচে রোগের সঙ্গে সংগ্রাম করে আসছে। তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। তার মানে এটা নয় যে করোনায় আমি আক্রান্ত হবো না। যদি আক্রান্ত হই তাহলে আমাকেও ভাইরাসটির সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে। ভাইরাসটির খারাপ দিক হচ্ছে সেটা দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। তাই তাকে বংশবৃদ্ধিতে বাধা দেওয়ার জন্য আমাকে কিছু কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যদি ঘরে ১০ জন ডাকাত ঢোকে তাহলে তাদের প্রতিরোধের জন্য সেভাবে অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে চেষ্টা করতে হবে। করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পর নাক এবং মুখ দিয়ে গরম ভাব নিতে হবে। ভাবের পাশাপাশি মুখ দিয়ে গরম পানি, লাল আদা চা, লং এলাচি, রসুন ইত্যাদি খেতে হবে। এতে করে গলায় থাকা ভাইরাসটি বংশবৃদ্ধিতে বাধা পাবে।
উপসর্গ দেখা দিলে নিজেকে অন্যদের কাছ থেকে আলাদা করে রাখার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি দ্রুত পরীক্ষার ওপরও জোর দেন। দ্রুত শনাক্ত হলে সংক্রমণ ঝুঁকি কমে আসবে বলে জানান তারা। এ ছাড়া ক্লোরিন থেরাপির ওপর জোর দেওয়া হয়।
তাসনুভা বলেন, ব্যবহার্য কাপড়চোপড় সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। বাইরে থেকে ঘরে যাওয়ার আগে জুতা, কিংবা অন্যান্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র ব্লিচিং পাউডার, স্যানিটাইজার সাবান ইত্যাদি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। আর আক্রান্ত হলে আতংকিত না হয়ে কেবল কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। তার মধ্যে চার বেলা গরম পানি পান উল্লেখযোগ্য। এতে সুফল মেলে।
গুরুতর রোগীদের প্লাজমা পদ্ধিতে চিকিৎসা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ জন্য ঢাকায় করোনাজয়ী রোগীদের প্লাজমা সংগ্রহ শুরু হয়েছে। তাদের প্লাজমায় এন্টিবডি থাকে। এই এন্টিবডি অন্য রোগীর শরীরে প্রবেশ করালে তাতে ভালো ফল আসছে বলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বলা হচ্ছে। তবে চট্টগ্রামে প্লাজমা সংগ্রহ এখনো শুরু হয়নি।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official