রমজান মাসকে কেন্দ্র করে সারা দেশে টিসিবির নানা রকম প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রিতে ব্যাপক সাড়া মিলছে। ন্যায্যমূল্যে ভেজালমুক্ত নানা রকম পণ্য ক্রয় করতে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন টিসিবি কতৃক নির্ধারিত বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে। সরেজমিনে ঘুরে গেছে খোলা বাজারের তুলনায় কম দামে বিক্রি হচ্ছে টিসিবির পণ্য, ফলশ্রুতিতে সাধারণ মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য টিসিবির বিক্রয়কেন্দ্র থেকে কেনার জন্য লাইনে দাঁড়াচ্ছেন।
টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে ১৮৭টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে- রাজধানীতে ৩৫টি স্থানসহ চট্টগ্রামে ১০টি, অন্যান্য বিভাগীয় শহরে ৫টি ও জেলা সদরে ২টি করে স্থানে টিসিবি পণ্য বিক্রি চলছে। ভ্রাম্যমাণ ট্রাক ছাড়াও সারাদেশে টিসিবির ২ হাজার ৮২৭ জন ডিলার ও নিজস্ব ১০টি খুচরা বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রির এ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে যাতে সাধারণ মানুষ তাদের সাধ্যের মধ্যে প্রয়োজনীয় বাজার সদাই করতে পারে। টিসিবির এই কর্মসূচির আওতায় বিক্রি হওয়া পণ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম ভোজ্যতেল, চিনি, মসুর ডাল, ছোলা, খেজুর ইত্যাদি।
টিসিবি সূত্রে আরও জানা যায়, ভ্রাম্যমাণ ট্রাক থেকে প্রতিকেজি চিনি ৪৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ ৪ কেজি চিনি কিনতে পারছেন। একই মানের চিনি খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে। একইভাবে মসুরের ডাল (মাঝারি সাইজ) টিসিবি পণ্য বিক্রয়কেন্দ্রে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা, যা একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ ৪ কেজি পর্যন্ত কিনতে পারছেন। একই মানের মসুরের ডাল খোলা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে। সয়াবিন তেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা, যা একজন ভোক্তা একসঙ্গে ৫ লিটার পর্যন্ত কিনতে পারছেন। খোলা বাজারে ছোলা ৮০ টাকায় বিক্রয় করা হলেও টিসিবি বিক্রয়কেন্দ্রে ছোলা বিক্রয় করা হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে, যা একদিনে সর্বোচ্চ ৪ কেজি কেনা যাবে। খেজুর বিক্রি করা হচ্ছে প্রতিকেজি ১৩৫ টাকা। অথচ খোলা বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম ২৫০ থেকে ৩২০ টাকা। একজন ভোক্তা দৈনিক সর্বোচ্চ এক কেজি খেজুর কিনতে পারছেন।
সারাদেশে বিভিন্ন ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, খোলা বাজারের তুলনায় অনেক কম দাম এবং ভালো মানের হওয়ায় তারা টিসিবি পণ্য ক্রয় করার দিকে ঝুঁকছেন। ন্যায্য মূল্য, ভালো মানের কারণে টিসিবি পণ্যের চাহিদা বেশি থাকায় অধিকাংশ টিসিবি পণ্য বিক্রয়কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছেন ক্রেতারা। সেজন্য ভোক্তাদের কাছ থেকে টিসিবি বিক্রয়কেন্দ্র আরো বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত টিসিবি পণ্য বিক্রির কথা থাকলেও ভোক্তাদের চাহিদার কথা বিবেচনায় অধিকাংশ জায়গাতেই বিকেল ৩ টারও পরে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। রমজান মাসে টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে ভালো মানের পণ্য বিক্রি নিশ্চিত করায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ক্রেতারা।