বাগেরহাটের শরণখোলায় করোনায় কর্মহীন নিম্ন মধ্যবিত্ত ও হতদরিদ্রদের প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আর্থিক সহায়তার তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ার পর তা সংশোধনে মাঠে নেমেছে উপজেলা প্রশাসন। যেহেতু মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এই অর্থ প্রদান করার কথা, তাই এই সুযোগে এক ইউপি সদস্য তার নিজের মোবাইল নম্বরটি জুড়ে দিয়েছেন ৪০ জন সুবিধাভোগীর নামের পাশে।
এছাড়া তালিকায় চৌকিদার, সরকারি বিভিন্ন সুবিধাভোগকারী ও সচ্ছল ব্যক্তির নাম রয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অনিয়মে জড়িতদের নাম জানাতে প্রথমে জানাতে অপারগতা প্রকাশ করলেও পরে উপজেলা প্রশাসন তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করে। ৪০ জন সুবিধাভোগীর নামের তালিকায় নিজের মোবাইল নম্বর জুড়ে দেয়া ইউপি সদস্য হচ্ছেন শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রাকিব হাসান। তিনি এই কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন।
জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত চূড়ান্ত তালিকা উপজেলা পরিষদে জমা দেওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে অনিয়ম ধরা পড়ে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের মধ্যে খোন্তাকাটা ইউনিয়নে অনিয়মের মাত্রা একটু বেশি বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। সুফলভোগীদের নামের পাশে তাদের প্রত্যেকের মোবাইল নম্বর সংযুক্ত করার কথা থাকলেও কিছু ইউপি সদস্য অসৎ উদ্দেশ্যে সেখানে তাদের নিজেদের মোবাইল নম্বর দিয়েছেন।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা প্রদানের ব্যবস্থা করায় তারা এই অপকৌশলের আশ্রয় নেয়। তাছাড়া তালিকায় অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছল ও সরকারি অন্যান্য সুবিধাভোগীদের নামও দেওয়া হয়। এসব অনিয়ম ধরা পড়ার পর সরকারি কর্মকর্তাদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে তালিকা সংশোধন করা হচ্ছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত তালিকায় সুবিধাভোগীদের নামের পাশে বেশ কয়েকজন ইউপি সদস্যদের ফোন নম্বর ছিল। এক মেম্বারের ফোন নম্বর ছিল ৪০ জনের নামের পাশে।
এছাড়া স্বচ্ছল ও সরকারের অন্যান্য সুবিধাভোগ করছে এমন ব্যক্তিদের নামও ছিল তালিকাতে। এসব অনিয়ম নজরে আসার পর সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে সঠিক তালিকা করা হয়েছে। আগামী ১৭ মে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তা পাঠানো হবে।
অনিয়মকারী ইউপি সদস্যদের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।