এপ্রিল ১৬, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
ইসলাম ধর্ম

জালেম ও জুলুম সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?

ইসলামে সব ধরণের জুলুম/অত্যাচার কঠোরভাবে হারাম। জুলুমকারী সবচেয়ে ঘৃণিত ও নিকৃষ্ট। আল্লাহ তাআলা নিজের জন্য জুলুমকে হারাম করে নিয়েছেন। এটি মানুষের জন্যও নিষিদ্ধ। এটি কবিরা গুনাহ বা মহাপাপ। কোরআন-সুন্নাহর একাধিক বর্ণনায় বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে ওঠে এসেছে।জুলুমকে আল্লাহ তাআলা নিজের জন্য হারাম করে নিয়েছেন মর্মে হাদিসে কুদসিতে নবিজী ঘোষণা করেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আমার বান্দারা! আমি আমার নিজের জন্যে জুলুম করা হারাম করে নিয়েছি এবং তোমাদের পরস্পরের মধ্যেও জুলুম হারাম করেছি। সুতরাং তোমরা একজন অন্যজনের উপর জুলুম করো না।’ (মুসলিম, তিরমিজি)শুধু জুলুম বা অত্যাচার করাই হারাম নয়, বরং অন্যকে জুলুমে সহযোগিতা করা এবং জালিম/অত্যাচারীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা এবং ঘনিষ্ঠতা রক্ষা করাও হারাম।জালেমদের প্রতি কঠোর সতর্কবার্তামানুষের ওপর জুলুম করা ভয়াবহ গুনাহ ও মারাত্মক শাস্তির কারণ। যার শাস্তি কোনো না কোনো উপায়ে দুনিয়ার জীবন থেকেই শুরু হয়ে যায়। অহংকার ও গর্বের কারণে জালেম/অত্যাচারীরা মনে করে, কেউ তাদেরকে কখনো পাকড়াও করবে না। অথচ আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে তাদেরকে সতর্কবার্তা দিয়েছেন এভাবে-১. وَ سَیَعۡلَمُ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡۤا اَیَّ مُنۡقَلَبٍ یَّنۡقَلِبُوۡنَ‘আর অত্যাচারীরা অচিরেই জানতে পারবে, তাদের গন্তব্যস্থল কোথায়?’ (সুরা আশ-শুআরা : আয়াত ২২৭)আয়াতে ‘তাদের গন্তব্যস্থল কোথায়?’ এর মর্মার্থ হলো- জাহান্নাম। এখানে পাপীদের জন্য রয়েছে কঠিন সতর্কবাণী। হাদিসে পাকেও এ সতর্কবাণী এসেছে এভাবে-‘অত্যাচার করা থেকে দূরে থাকো! কারণ অত্যাচার কেয়ামতের দিন অন্ধকারের কারণ হবে।’ (মুসলিম)২. وَ لَا تَحۡسَبَنَّ اللّٰهَ غَافِلًا عَمَّا یَعۡمَلُ الظّٰلِمُوۡنَ ۬ؕ اِنَّمَا یُؤَخِّرُهُمۡ لِیَوۡمٍ تَشۡخَصُ فِیۡهِ الۡاَبۡصَارُ – مُهۡطِعِیۡنَ مُقۡنِعِیۡ رُءُوۡسِهِمۡ لَا یَرۡتَدُّ اِلَیۡهِمۡ طَرۡفُهُمۡ ۚ وَ اَفۡـِٕدَتُهُمۡ هَوَآءٌ – وَ اَنۡذِرِ النَّاسَ یَوۡمَ یَاۡتِیۡهِمُ الۡعَذَابُ فَیَقُوۡلُ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا رَبَّنَاۤ اَخِّرۡنَاۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیۡبٍ ۙ نُّجِبۡ دَعۡوَتَکَ وَ نَتَّبِعِ الرُّسُلَ ؕ اَوَ لَمۡ تَکُوۡنُوۡۤا اَقۡسَمۡتُمۡ مِّنۡ قَبۡلُ مَا لَکُمۡ مِّنۡ زَوَالٍ‘(হে নবি!) তুমি কখনো মনে করো না যে, সীমালংঘনকারীরা (জালেমরা) যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ উদাসীন। আসলে তিনি সেদিন পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দেন, যেদিন সব চোখ স্থির হয়ে যাবে।ভীত-বিহব্বল চিত্তে আকাশের দিকে চেয়ে তারা ছুটাছুটি করবে। নিজেদের প্রতি তাদের দৃষ্টি ফেরবে না এবং তাদের অন্তর হবে (জ্ঞান) শূন্য।(হে নবি!) সেদিন সম্পর্কে তুমি মানুষকে সতর্ক কর; যেদিন তাদের শাস্তি আসবে, যখন সীমালংঘনকারীরা (জালেমরা) বলবে, ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে কিছু সময়ের জন্য অবকাশ দাও; আমরা তোমার আহবানে সাড়া দেব এবং রাসুলদের অনুসরণ করবো।’ (তখন তাদেরকে বলা হবে,) ‘তোমরা কি আগে শপথ করে বলতে না যে, তোমাদের কোনো পতন নেই?’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪২-৪৫)জুলুমের শাস্তিজাহান্নামে জুলুম/জালেমদের অনেক ধরণের কঠোর শাস্তি রয়েছে। জুলুমের অপরাধী/জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে কম শাস্তি যাকে দেওয়া হবে; তার বিবরণ থেকে বুঝা যায়; জাহান্নাম কত কঠিন জায়গা। আর জুলুমের শাস্তি কত মারাত্মক! হাদিসে পাকে এসেছে-হজরত নুমান বিন বশির রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘কেয়ামতের দিন জাহান্নামীদের মাঝে সবচেয়ে সহজ ও হালকা শাস্তি দেওয়া হবে যে ব্যক্তিকে; সে হলো তার পায়ের তলাতে দুটো জ্বলন্ত অঙ্গার থাকবে, যার কারণে তার মাথার মগজ ছোট মুখ বিশিষ্ট হাড়ির ন্যায় উথলাতে থাকবে।’ (বুখারি, মুসলিম)সুতরাং সাবধান!জালেম ও জুলুমের শাস্তি হবে কঠিন। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা আগে থেকেই এই বলে সতর্ক করেছেন, ‘নিশ্চয়ই যারা জালেম, তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ২২)মুমিন মুসলমানের উচিত, জুলুম থেকে বিরত থাকা। জুলুমের সহযোগিতা থেকে বিরত থাকা। কোরআন-সুন্নাহর সতর্কবার্তা অনুযায়ী নিজেদের জুলুম থেকে বিরত রাখা ঈমানের একান্ত দাবি।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে জুলুম ও জালেম হওয়া থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সম্পর্কিত পোস্ট

রোজা রেখে আতর-পারফিউম ব্যবহার করা যাবে?

banglarmukh official

গর্ভবতী নারীর রোজার মাসয়ালা

banglarmukh official

তারাবির নামাজ ছুটে গেলে করণীয়

banglarmukh official

রোজা অবস্থায় কি দাঁত ব্রাশ করা যাবে?

banglarmukh official

চাঁদ দেখা গেছে, সৌদি আরবে রোজা শুরু শনিবার

banglarmukh official

শাবান মাসে কত তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখা যাবে

banglarmukh official