নাজিরপুর উপজেলার নাওটানা বিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী আফসান মিম সাংবাদিকদের জানায়, বিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের শিক্ষক মিন্টু স্যার তার কাছ থেকে উপবৃত্তির বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য এক শত টাকা নিয়েছেন। একই শ্রেণীর মুক্তা ঢালী জানায়, প্রধান শিক্ষক এ টাকা চেয়েছেন, তাই বাংলা ম্যাডাম রানু আপার কাছে আমি বিকাশ একাউন্টের জন্য এক শত টাকা দিয়েছি।
ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র দিপু মিস্ত্রী জানায়, উপবৃত্তির একাউন্ট খুলতে গেলে বিদ্যালয়ের অফিস থেকে তার কাছে এক হাজার টাকা দাবী করা হয়। গরীব অসহায় পিতা দিলীপ মিস্ত্রী ওই টাকা দিতে না পারায় সে (দিপু) স্থানীয় মাসুদের ঘরে কাজ করে পাওয়া ৩শ’ টাকা বিদ্যালয়ে দিয়ে মোবাইলে বিকাশ একাউন্ট খুলেছে। এছাড়া, ১০ম শ্রেনীর চাতুকি মিস্ত্রী, নেয়ামত উল্লাহ তারা বিদ্যালয়ের মিন্টু স্যারকে ওই টাকা দিয়েছে।
স্থানীয় সংবাদকর্মীরা সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পান, ওইসব টাকা নেয়ার রশিদ হিসেবে বিদ্যালয়ের সিলসহ (গোল) ছোট একটি কাগজ দেয়া হয়েছে। তবে তাতে টাকার কোন পরিমান উল্লেখ নাই।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা উত্তোলনের জন্য বিকাশ একাউন্ট খুলতে কাজ করা মো. সাইদুল ইসলাম সবুজ জানান, বিকাশের একাউন্ট খুলতে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে কোন টাকা নেয়ার নিয়ম নেই।
বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত জীববিজ্ঞানের মিন্টু লাল মৈত্র ও বাংলার শিক্ষিকা রানু ম্যাডামের কাছে টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষকের নির্দেশেই এ টাকা উত্তোলন করেছেন বলে জানান।
প্রধান শিক্ষক মো. আলী আশ্রাফ জানান, ওই সব শিক্ষার্থীদের কাছে অনেক টাকা পাওনা আছে তাই তাদের কাছ থেকে ওই টাকা নেয়া হয়েছে।
উপজেলার দীর্ঘার একাডেমী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র সজীব গাইন জানায়, তার উপবৃত্তির টাকা তুলতে মোবাইলে একাউন্ট খুলতে বিদ্যালয়ে গেলে বিদ্যালয়ের সঞ্জয় স্যারকে খরচ ববাদ ৩০ টাকা দিতে হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম এ ব্যাপারে জানান, উপবৃত্তির টাকা শিক্ষার্থীদের দেয়ার সময় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোন টাকা নেয়ার বিধান নেই। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়াসহ টাকা ফেরত দিতে বাধ্য করা হবে।