ভারতের আম্বানি পরিবারের বিয়ে বেশ নজরকাড়া হয়েছিল। ওই বিয়েকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিয়ে বলেও আখ্যা দিয়েছিল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। সম্প্রতি প্রবাসী ভারতীয় তথা দক্ষিণ আফ্রিকার বিতর্কিত ব্যবসায়ী পরিবার গুপ্ত ব্রাদার্স-এর দুই উত্তরাধিকারীর বিয়ে হয়েছে। এখন এই বিয়ে দুটি নিয়েও বেশ আলোচনা হচ্ছে। কারণ বিয়েতে মোট খরচ করা হয়েছে ২০০ কোটি রুপি।
আম্বানি পরিবারের আয়োজিত বিয়েতেও পুরো বলিউড নেচেছিল। এ বিয়েতেও মোটা অর্থের বিনিময়ে বলিউড তারকা ক্যাটরিনা কাইফ সিদ্ধার্থ মালহোত্রা, নোরা ফাতেহি, ঊর্বশী রাউতেলা, র্যাপার বাদশা, কৈলাশ খের, জাভেদ আলি, আস্থা গিল এবং শ্রুতি পাঠকের মতো শিল্পীরা। ছিলেন টেলিভিশনের ‘নাগিন’ থেকে ইন্ডিয়ান আইডল অভিজিত সবন্ত, এমনকি যোগগুরু বাবা রামদেবও!
বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে প্রায় ২০০ অতিথি বিয়েতে যোগ দিয়েছিলেন। নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন এ দেশের রাজনীতিকরাও। এখনও পর্যন্ত এটাই ভারতের এ বছরের সবচেয়ে দামি বিয়ে বলে মনে করা হচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশের সাহরানপুরের বাসিন্দা এই গুপ্ত পরিবার। ১৯৯৩ সালে তারা দক্ষিণ আফ্রিকা চলে যান। সেখানে সাহারা কম্পিউটার্সের প্রতিষ্ঠা করেন। ‘দ্য নিউ এজ’ নামে একটি সংবাদপত্রও তাঁদের মালিকানাধীন।
তিন ভাই অজয় গুপ্ত, অতুল গুপ্ত এবং রাজেশ গুপ্ত মিলে ব্যবসা সামলান। অজয় গুপ্তর ছেলে সূর্যকান্ত গুপ্তর বিয়ে ছিল গত বৃহস্পতিবার। আর এক ভাই অতুল গুপ্তর ছেলে শশাঙ্কের বিয়ে ছিল শনিবার। দিল্লি নিবাসী হিরে ব্যবসায়ী সুরেশ সিঙ্ঘলের মেয়ে কৃতিকার সঙ্গে বিয়ে হয়েছে সূর্যকান্তের। শশাঙ্কের বিয়ে হয়েছে দুবাইয়ের ব্যবসায়ী বিশাল জালানের মেয়ে শিবাঙ্গির সঙ্গে।
আউলিতে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত একটি বিলাসবহুল রিসর্টে এই বিয়ের অনুষ্ঠান বসে। তার বেশ কিছু দিন আগে থেকেই ওই এলাকার সমস্ত হোমস্টে এবং হোটেল বুক করে নেওয়া হয়। বিমানে চাপিয়ে বিদেশ থেকে উড়িয়ে আনা হয় অতিথিদের। তাদের দামি উপহারও দেওয়া হয়।
তবে জাঁকজমক করে এই বিয়ের আয়োজন নিয়ে কম বিতর্কও হয়নি। বিয়েতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে চেয়ে সেখানে একটি হেলিপ্যাড বানাতে চেয়েছিল গুপ্ত পরিবার। কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি করে সেখানে হেলিপ্যাড বানানোর অনুমতি দেয়নি উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট। বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালীন পরিবেশের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তার জন্য তিন কোটি টাকা আগাম জমাও করতে হয়েছিল তাদের।
বহু বারই বিতর্কে নাম জড়িয়েছে এই গুপ্ত পরিবারের। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তাদের। এমনকি গুপ্ত পরিবারই আড়াল থেকে জুমা সরকারকে পরিচালনা করত বলেও অভিযোগ উঠেছিল।