সংশোধিত বাজেটে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনেকখানি বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তা ছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের জন্য এ মন্ত্রণালয় বিশেষ বরাদ্দ পাবে।
আজ বুধবার দুপুরে যোগাযোগ করা হলে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগামী অর্থবছরে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনেক বেশি বাড়বে যা সংস্কৃতিকর্মীদের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে।
বাজেটে সংস্কৃতি খাতে এবারের বরাদ্দ নিয়ে সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা ছিল। রীতিমতো প্রতিবাদ সভা করে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলেন সংস্কৃতিকর্মীরা। সংস্কৃতিকর্মীরা মনে করেন, গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সাংস্কৃতিক জাগরণের প্রণোদনা হিসেবে এই বাজেট অপ্রতুল। তাঁদের প্রস্তাব ছিল, জাতীয় বাজেটের ন্যূনতম ১ শতাংশ সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ দেওয়া হোক। সেটা না হলে সাংস্কৃতিক জাগরণ সম্ভব হবে না।
প্রসঙ্গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৮ দশমিক ১ শতাংশ। এর মধ্যে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে ৫৭৫ কোটি টাকা। এই বাজেট দেশের সংস্কৃতিচর্চার জন্য মোটেও সন্তোষজনক নয় বলে মন্তব্য করেছেন দেশের বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। গত বছর এ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৫১০ কোটি টাকা, সংশোধিত বাজেট ছিল ৬২৫ কোটি টাকা।
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটকে হতাশাজনক মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতিজনেরা। তাদের মতে, একটি সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে, জঙ্গিবাদ ও মাদকের ভয়াবহতা দূর করতে সংস্কৃতি খাতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো অত্যাবশ্যক ছিল। কিন্তু বাজেটপ্রণেতারা সে পথে না হেঁটে, হেঁটেছে ভিন্ন পথে। সংস্কৃতি খাতকে মোটেও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। অবশেষ আজ সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী আশ্বাসে তারা আশার আলো দেখছেন।
আজ সকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থার ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর হয়। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনার বিবরণ তুলে ধরে সংস্কৃতি-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রায় ৭০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা অপেরা হাউস নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে। প্রতি উপজেলায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র/কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৪০০ আসনবিশিষ্ট মিলনায়তন, ২৫০ আসনবিশিষ্ট সিনেপ্লেক্স, মুক্তমঞ্চ ও ক্যাফেটেরিয়া নির্মিত হবে যার নকশা প্রণয়নের কাজ ইতিমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক ভূঞা, আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দিলীপ কুমার সাহা, বাংলা একাডেমির সচিব আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এর আওতাধীন ১৭টি দপ্তর বা সংস্থার বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থার পক্ষে স্ব স্ব দপ্তর প্রধানেরা চুক্তিতে সই করেন।