সমাজিক জীবনে প্রতিনিয়তই একজনের সঙ্গে অন্যজনের দেখা-সাক্ষাৎ হয়। প্রতিনিয়ত দেখা-সাক্ষাৎ হওয়া মানুষগুলোর একজনের সঙ্গে অন্যজনের ৫টি হক বা অধিকার রয়েছে। যারা একজনের আবদার বা আহ্বনে অন্যজন সাড়া দেবে। এটি ইসলামের দিকনির্দেশনা। এ হক বা অধিকারগুলো কী? এ সম্পর্কে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই বা কী বলেছেন?
পরস্পরের সঙ্গে আবদার-আহ্বান কিংবা আচার-আচরণ কেমন হবে, তা সুস্পষ্টভাবে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হাদিসের বর্ণনাটি তুলে ধরা হলো-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু বলেছেন (এক) মুসলমানের ওপর (অপর) মুসলমানের পাঁচটি হক বা অধিকার রয়েছে। তাহলো-
১. সালাম দিলে তার উত্তর দেওয়া;
২. কেউ অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাওয়া;
৩. কেউ মারা গেলে তার জানাযার নামাজে শরিক হওয়া;
৪. কেউ দাওয়াত দিলে তাতে অংশগ্রহণ করা এবং
৫. কেউ হাঁচি দিলে তার উত্তর দেওয়া।’ (বুখারি ও মুসলিম)
হাদিসের শিক্ষা
এ হাদিসে এক মুসলমানের ওপর অপর মুসলমানের প্রাপ্য পাঁচটি হকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ পাঁচটি হকই ফরজে কিফায়া পর্যায়ের। হকগুলো হলো-
১. সালাম দেয়া সুন্নাত; উত্তর দেয়া ওয়াজিব। এটি এমন একটি সুন্নাত, যা ফরজের মতোই উত্তম। কেননা সালামের মাধ্যমে বিনয় ও নম্রতা প্রকাশ পায়। এর মাধ্যমে একটি ওয়াজিব আদায় করা হয়।
২. প্রতিবেশি অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাওয়া সুন্নাত। তাঁর খোঁজ খবর নেওয়া। এমনকি প্রতিবেশি যদি অমুসলিমও হয় তবুও তার খোঁজ-খবর নেওয়া জরুরি।
৩. মৃতব্যক্তির জানাযায় অংশগ্রহণ করা ফরজে কিফায়া। মৃতব্যক্তির জানাযা আদায় থেকে দাফন পর্যন্ত সঙ্গ দেওয়া মুস্তাহাব।
৪. দাওয়াতের দুটি অর্থ হতে পারে-
ক. কাউকে সাহায্য করার জন্য কেউ আহ্বান করলে, তাঁর ডাকে সাড়া দেওয়া;
খ. কারো দাওয়াত কবুল করা; এ দাওয়াত কবুল করা তখনই আবশ্যক, যখন তা গ্রহণ করলে কোনো গোনাহ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে। এমনিভাবে মেজবানের কামাই-রোজগার যদি হালাল হয় তবে দাওয়াত গ্রহণ করা ওয়াজিব। আর কামাই-রোজগার যদি সুস্পষ্ট হারাম হওয়া প্রমাণিত হয় তবে দাওয়াত বর্জন করা ওয়াজিব।
৫. কোনো মুসলমান হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললে, তাঁর উত্তরে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা। হাঁচির উত্তর দেয়ার ক্ষেত্রে মানুষ ভালো-মন্দ উভয়েই সমান। তবে নেককারদের হাঁচির জবাব হাসিমুখে দেওয়া উত্তম।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁদের হকগুলো যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।