এপ্রিল ২৬, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
ইসলাম ধর্ম

কেয়ামতের দিন প্রত্যেককে নিজের আমলনামা পড়তে বলা হবে

‘(কেয়ামতের দিন প্রত্যেককে বলা হবে) তুমি তোমার কিতাব (আমলনামা) পাঠ করো। আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব-নিকাশের জন্য যথেষ্ট।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১৪)

তাফসির: গত পর্বে বলা হয়েছিল, প্রত্যেকের যাবতীয় কৃতকর্ম লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়। এই লিপিবদ্ধ দস্তাবেজের নাম আমলনামা। আলোচ্য আয়াতের মূল কথা হলো, কেয়ামতের দিন প্রত্যেকের হাতে হাতে তার আমলনামা দেওয়া হবে। সবাইকে বলা হবে, ‘তুমি তোমার আমলনামা পাঠ করো।’ এই আমলনামা দেখে নিজেরাই নিজেদের চূড়ান্ত পরিণতি সম্পর্কে অবগত হবে।

কেয়ামতের দিন যাদের হিসাব নেওয়া হবে, তারা দুই শ্রেণিতে বিভক্ত হবে। প্রথম শ্রেণি হলো, যাদের হিসাব খুব সহজ হবে। সেটি শুধু আমলনামা প্রদর্শন করার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন যারই হিসাব নেওয়া হবে, সে ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি জানতে চাইলাম, হে আল্লাহর রাসুল, আল্লাহ কি বলেননি, যার আমলনামা ডান হাতে দেওয়া হবে, তার হিসাব সহজ করে নেওয়া হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এটি হচ্ছে শুধু প্রদর্শনের ক্ষেত্রে। আর কেয়ামতের দিন যার হিসাব জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে নেওয়া হবে, তাকে অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৫৩৭)

দ্বিতীয় শ্রেণি হলো, যাদের হিসাব খুব কঠিন করে নেওয়া হবে। ছোট-বড় প্রত্যেক বিষয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যদি তারা মিথ্যা বলে বা তথ্য গোপন করার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের মুখে সিলমোহর এঁটে দেওয়া হবে। তখন তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কথা বলতে থাকবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব, তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।’ (সুরা : ইয়াসিন, আয়াত : ৬৫)

হাশরের ময়দানের মূল প্রশ্ন হবে, ‘তোমার রব কে? তোমার নবী কে? এবং তোমার দ্বীন কী?’ এ তিনটি প্রশ্ন ঘিরে আরো অনেক প্রশ্ন উত্থাপিত হবে। এর কয়েকটি হলো—

এক. শিরক সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘ওই দিন আল্লাহ তাদের ডেকে বলবেন, তোমরা যাদের আমার শরিক দাবি করতে, তারা কোথায়?’ (সুরা : কাসাস, আয়াত : ৬২)

দুই. নবী-রাসুলদের প্রতি ঈমান না আনা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাদের ডেকে বলবেন, তোমরা রাসুলদের কী জবাব দিয়েছিলে?’ (সুরা : কাসাস, আয়াত : ৬৫)

তিন. মানুষের যাবতীয় কাজকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমার রবের কসম! আমি অবশ্যই তাদের সবাইকে তাদের কাজকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করব।’ (সুরা : হিজর, আয়াত : ৯২-৯৩)

চার. অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যবহার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তার পেছনে পোড়ো না। নিশ্চয়ই কান, চোখ ও অন্তর—এগুলোর প্রতিটিই জিজ্ঞাসিত হবে।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৩৬)

পাঁচ. জীবন, সম্পদ ও অর্জিত জ্ঞান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন প্রত্যেক ব্যক্তির দুই পা নিম্নোক্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হওয়ার আগ পর্যন্ত নিজ জায়গায় স্থির থাকবে। (প্রত্যেককে জিজ্ঞেস করা হবে) তার বয়স সম্পর্কে, কী কাজে সে তা নিঃশেষ করেছে। জ্ঞান সম্পর্কে, এর মাধ্যমে সে কী আমল করেছে। সম্পদ সম্পর্কে, কোথা থেকে (কী উপায়ে) সম্পদ উপার্জন করেছে, আর কোন কাজে ব্যয় করেছে। আর তার শরীর সম্পর্কে, কী কাজে সেটি ক্ষয় করেছে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪১৭)

সম্পর্কিত পোস্ট

রোজা রেখে আতর-পারফিউম ব্যবহার করা যাবে?

banglarmukh official

গর্ভবতী নারীর রোজার মাসয়ালা

banglarmukh official

তারাবির নামাজ ছুটে গেলে করণীয়

banglarmukh official

রোজা অবস্থায় কি দাঁত ব্রাশ করা যাবে?

banglarmukh official

চাঁদ দেখা গেছে, সৌদি আরবে রোজা শুরু শনিবার

banglarmukh official

শাবান মাসে কত তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখা যাবে

banglarmukh official