রমজান হলো গুনাহ মাফের মাস। স্বয়ং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সুসংবাদ দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছেন, ‘যে লোক রমজান মাসের রোজা রাখবে ইমান ও চেতনাসহকারে (সওয়ারের আশায়) তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ হয়ে যায়।’ বুখারি, মুসলিম।
এটি এমন এক পবিত্র মাস, যে মাসে আল্লাহর কৃপা বান্দার জন্য উন্মুক্ত হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কাছে রমজান মাস উপস্থিত। এটি অত্যন্ত বরকতময় মাস। আল্লাহ এ মাসে তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দরজাসমূহ উন্মুক্ত হয়ে যায়, এ মাসে জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এ মাসে বড় বড় ও সেরা শয়তানগুলো আটক রাখা হয়। আল্লাহর জন্য এ মাসে একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। যে লোক এই রাতের মহাকল্যাণ লাভ থেকে বঞ্চিত থাকল, সে সত্যই বঞ্চিত ব্যক্তি।’ নাসায়ি, মুসনাদে আহমদ ও বায়হাকি।
রোজাদারদের আখেরাতে পুরস্কৃত করা হবে নানাভাবে। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যে লোক এক দিন আল্লাহর পথে রোজা রাখবে, আল্লাহ তার মুখমণ্ডল জাহান্নাম থেকে সত্তর বছর দূরে সরিয়ে রাখবেন।’ বুখারি, তিরমিজি, নাসায়ি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ ও মুসলিম।
হাদিসে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আখেরাতের জীবনে রোজা ও কোরআন চর্চাকারীদের জন্য আল্লাহর দরবারে শাফায়াতকারী হিসেবে আবির্ভূত হবে।
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘রোজা ও কোরআন রোজাদার বান্দার জন্য শাফায়াত করবে, রোজা বলবে, হে আল্লাহ! আমি এ ব্যক্তিকে দিনে খাবার ও অন্যান্য কামনা-বাসনা থেকে ফিরিয়ে রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, হে আল্লাহ! আমি এ ব্যক্তিকে রাতের নিদ্রা থেকে ফিরিয়ে রেখেছি। আপনি আমাদের সুপারিশ গ্রহণ করুন। আল্লাহ তাদের সুপারিশ গ্রহণ করবেন।’ হাকিম, আহমদ। রমজানে গুনাহ মাফের জন্য আমাদের বেশি বেশি ইবাদত করতে হবে। আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নিজের মনকে আল্লাহমুখী করার প্রয়াস চালাতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে রোজা পালন ও পাপমুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন।
লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।