বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় নভেল করোনাভাইরাসে সাড়ে ৭ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সংক্রমণের হারও অনেক বেশি বলেও জানিয়েছে তারা।
গতকাল ৫ জুন, শুক্রবার ‘বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানে দ্রুত বাড়ছে সংক্রমণ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরে এসব তথ্য জানায় লন্ডনিভিত্তিক সাময়িকীটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সরকারিভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের যে সংখ্যা জানানো হচ্ছে প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়েও অনেক বেশি। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ ভারত, পাকিস্তানেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সরকারের প্রকাশিত পরিসংখ্যানের চেয়ে বেশি।
ইকোনমিস্ট বলছে, কম পরীক্ষার অর্থই হচ্ছে- প্রকৃত চিত্র আরো বেশি খারাপ হতে পারে।
তিন দেশে সরকারিভাবে প্রকাশিত সাড়ে ৩ লাখের বেশি আক্রান্ত এবং প্রায় ৯ হাজার মানুষের মৃত্যু নিয়ে আক্রান্ত ও সংক্রমণের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত পরিমিত দেখাচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, তবে এখনো অনেক মানুষ আক্রান্ত হলেও গণনার বাইরে রয়েছেন। লকডাউন প্রত্যাহারের আগে থেকেই তা নিয়ে ভয় ছিল। এখন সেই ভয় আরও বাড়ছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়- আইসিডিডিআর,বির কর্মকর্তা জন ক্লেমেনসের অনুমান, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতেই করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ইতোমধ্যে সাড়ে সাত লাখ ছাড়িয়ে থাকতে পারে। তবে সরকারের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬০ হাজার ৩৯১ জন; যাদের প্রায় অর্ধেকই ঢাকার।
সরকারি হিসেবে শুক্রবার (৫ জুন) পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত ৬০ হাজার ৩৯১ জনের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ঢাকার বাসিন্দা। এর আগের ২৪ ঘণ্টার ৩০ জনের মৃত্যু হওয়ায় দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮১১ জনে দাঁড়িয়েছে।
ব্রিটিশ এই সাময়িকী বলছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে জারিকৃত লকডাউনের বিধি-নিষেধের বেশিরভাগই গত সপ্তাহ থেকে তুলে নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ভারত। ১৭০ কোটি মানুষকে মুক্ত করে দেয়ায় বিপর্যস্ত অর্থনীতির এই অঞ্চলের এক পঞ্চমাংশ স্বস্তিতে ফিরবে। কিন্তু লকডাউন প্রত্যাহার করে নেয়ায় সংক্রমণ আবারও দ্রুতগতিতে বাড়তে পারে।
এতে বলা হয়, চলমান এই ধারাবাহিকতায় প্রতি দুই সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, এই অঞ্চলে করোনা সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছাবে আগামী জুলাইয়ের শেষের দিকে। শুধু তাই নয়, সেই সময়ে সরকারি পরিসংখ্যানেও আক্রান্ত ৫০ লাখে পৌঁছাতে পারে এবং মৃতের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়াতে পারে।