26 C
Dhaka
এপ্রিল ৩০, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
করোনা

নমুনা পরীক্ষায় নতুন কৌশল নিচ্ছে সরকার

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর তিন মাস পর সরকার এখন দিনে ৩০ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষার টার্গেট করে পরীক্ষার বিকল্প উপায় নিয়ে নতুন কৌশল নিতে চাইছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশের সব জেলায় পিসিআর পরীক্ষা ল্যাব বসানোর পাশাপাশি অ্যন্টিজেন টেস্ট পদ্ধতি শুরু করার ব্যাপারে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে পরীক্ষার বিকল্প উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে বলেও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যেহেতু সংক্রমণের বিস্তার ঘটছে, এই অবস্থায় পিসিআর পরীক্ষা ওপর নির্ভরতা কমাতে অনেক বিলম্ব করা হচ্ছে।

সর্বশেষ বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে তথ্য দিয়েছে, তাতে ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৫৯টি ল্যাবে সাড়ে ১৭ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর তিন মাস পার হলেও দিনে ২০ হাজার নমুনা পরীক্ষার টার্গেটে পৌঁছানো যায়নি।

সরকারের বিশেষজ্ঞ কমিটির একাধিক সদস্য বলেছেন, এখন তারা ৩০ হাজার নমুনা পরীক্ষার টার্গেট হাতে নিয়েছেন। কিন্তু তারা মনে করেন, সংক্রমণ এখন ঊর্ধ্বমুখী, এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি করা সম্ভব না হওয়ায় অনেক মানুষ ইতিমধ্যেই সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন, যার সঠিক হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না।

সরকার এতদিন পিসিআর পরীক্ষার বাইরে অন্য কোনো ব্যবস্থা বা বিকল্প কিছু করেনি। এমনকি সরকারের পক্ষ থেকে র‌্যাপিড কিট টেস্টের বিরোধিতা করা হয়েছে।

এখন দেশের বড় শহরগুলোর ল্যাবরেটরিতে পিসিআর মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলছেন, তারা প্রত্যেক জেলায় পিসিআর পরীক্ষার ল্যাব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন।

একই সাথে তিনি বলেছেন, পিসিআর পদ্ধতির বিকল্প হিসেবে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরুর পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা টেস্ট অবশ্যই বাড়াবো। সব জেলায় পিসিআর মেশিন দেয়া যায় কি না এবং উপজেলা পর্যায়ে পরীক্ষার সহজ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা যায় কি না – এর সাথে আরও বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকে পরীক্ষার সুযোগ দেয়া, এসব বিষয় আমরা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছি। এজন্য একটি পরিকল্পনা তৈরির কাজ চলছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এই পরিকল্পনা তৈরি হয়ে যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

অধ্যাপক আজাদ আরও বলেন, ‘পিসিআর টেস্ট আর আমরা কত করবো, সেটাও বিবেচনার বিষয় আছে। অন্য ধরনের টেস্ট, যেমন অ্যান্টিজেন টেস্ট আছে। র‌্যাপিড টেস্ট আছে।”

তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে যেহেতু সংক্রমণের তিন মাসের বেশি হয়েছে, সে কারণে অনেকে অ্যান্টিবডি ডেভলভ করে থাকতে পারে। সেটা নির্ণয়ের একটা সুযোগ সৃষ্টি করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

সরকারের যে বিশেষজ্ঞ কমিটি পরীক্ষার বিকল্প উপায় নিয়ে পরামর্শ দিয়েছে, সেই কমিটির একজন সদস্য অধ্যাপক শাহ মনির বলেছেন, অ্যান্টিজেন পরীক্ষা অগ্রাধিকার দিয়ে তারা সরকারকে তাদের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

‘পিসিআর ল্যাব বাড়িয়ে ৬০টি পর্যন্ত করা গেছে। আরও হয়তো কিছু বাড়ানো যাবে। কিন্তু ৩০ হাজার পরীক্ষা করার মতো পিসিআর ল্যাবের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে কি না-তা নিয়ে সীমাবদ্ধতা আছে। তবে সরকার চেষ্টা করছে। কিন্তু চ্যালেঞ্জ হবে এটা করা। সুতরাং আমরা যদি বিকল্প কিছু বের করতে পারি, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা জানি, যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ’র অনুমোদন পেয়েছে, এমন একটি ডিভাইস তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে খুব দ্রুত পরীক্ষা করা সম্ভব। সুতরাং আমরা যদি অ্যান্টিজেন ডিভাইস পাই, সেটা আমরা এক্সপ্লোর করে দেখবো। এটা ব্যবহার করার একটা সিদ্ধান্ত আমরা দিয়েছি।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, অ্যান্টিজেন এবং অ্যান্টিবডি, সব ধরনের পরীক্ষার বিষয় নিয়েই সক্রিয়ভাবে চিন্তা করা হচ্ছে।

কিন্তু অধ্যাপক শাহ মনির মনে করেন, র‌্যাপিড টেস্ট হচ্ছে অ্যান্টিবডি টেস্ট, এর মাধ্যমে সঠিক চিত্র পাওয়া যায় না। সেজন্য তারা অ্যান্টিজেন টেস্টকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।

অ্যান্টিজেন টেস্ট আসলে কী-সে সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে আরএনএটাকে আলাদা করে নিয়ে তারপর এর পরীক্ষা করতে হয়। এতে অনেক সময় লেগে যায়। আর অ্যানটিজেন ডিভাইস সরাসরি আরএনেএ শনাক্ত করবে। ফলে এটা সহজে এবং কম সময়ে করা যাবে।’

সরকারের সাথে নমুনা সংগ্রহের কাজ করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। এই সংস্থার নমুনা সংগ্রহের প্রকল্পের মোর্শেদা চৌধুরী বলেছেন, ‘পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু সেটা ধীরগতিতে। সেটা পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে বৃদ্ধি না করায় নমুনা সংগ্রহের পরেও রোগী শনাক্তের কাজে বিলম্ব হচ্ছে।’

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এখন সংক্রমণের হারের সাথে পাল্লা দিয়ে পিসিআর পদ্ধতির পাশাপাশি পরীক্ষার বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া না হলে সংকট আরও বাড়বে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, তারা বিকল্প উপায়ের ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন সাত দিনের মধ্যেই বিষয়গুলো চূড়ান্ত করবেন।–বিবিসি বাংলা

সম্পর্কিত পোস্ট

করোনা: বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে

banglarmukh official

বিশ্বে একদিনে করোনা শনাক্ত প্রায় ৫ লাখ, মৃত্যু ১১৫২

banglarmukh official

করোনায় মৃত্যুশূন্য দিনে শনাক্ত ২৯৯, হার ১৩.৬০ শতাংশ

banglarmukh official

করোনায় আরও ৪৫৪ মৃত্যু, শনাক্ত আড়াই লাখের নিচে

banglarmukh official

বিশ্বে করোনায় একদিনে ১১৮৯ মৃত্যু, শনাক্ত ৪ লাখ ৩২ হাজার

banglarmukh official

বিশ্বে করোনায় আরও ১১৭০ মৃত্যু, শনাক্ত সোয়া চার লাখ

banglarmukh official