26 C
Dhaka
এপ্রিল ৩০, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
ইসলাম ধর্ম প্রচ্ছদ

যে কারণে অহংকার করবে না মুমিন

অহংকার মারাত্মক পাপ। যা মানুষের সব আমলকে ধ্বংস করে দেয়। দুনিয়ার প্রথম পাপ বা গোনাহের সৃষ্টি হয়েছে এ আহংকারের মাধ্যমে। অহংকারের মাধ্যমেই ইবলিস চিরদিনের জন্য অভিশপ্ত হয়েছে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যার অন্তরে তিল পরিমাণ অহংকার থাকবে; সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর যার অন্তরে তিল পরিমাণ ঈমান রয়েছে সে জাহান্নামে যাবে না।’ (তিরমিজি)

কুরআন এবং হাদিসের আলোকে অহংকার এমন এক মারাত্মক আচরণ। যা একজন বিনয়ী ও সফল ব্যক্তিকে তার সফলতার উচ্চাসন থেকে নিমিষেই নিচে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।

কোনো বক্তিকে গরিব বলে ছোট করলে অহংকার হবে না বরং তার আত্ম-সম্মানে বাধে এরকম হেয় করলেই তা অহংকার হিসেবে পরিগণিত হবে।

অহংকার হচ্ছে দুনিয়ার সব রোগের মা। এ কারণে আরবিতে অহংকারকে ‘উম্মুল আমরাজ’ বা সব রোগের জননী বলা হয়।

হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করে আল্লাহ তাআলা সব ফেরেশতাদেরকে এ মর্মে নির্দেশ দিলেন যে, তোমরা আদমকে সেজদা কর। সব ফেরেশতা আল্লাহর নির্দেশ মেনে নিলেও শয়তান সেজদা করতে অস্বীকৃতি জানায়। কুরআনে সে ঘটনাকে অহংকার হিসেবে উল্লেখ করে। আল্লাহ বলেন-
‘সে অস্বীকৃতি জানাল এবং অহংকার করল। আর সে কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৩৪)

আর অহংকার এ ঘটনাই হলো পৃথিবীর প্রথম অহংকারের সূচনা। আর এর মাধ্যমেই প্রথম পাপের সূচনা হয়। যে কারণে ‘মুয়াল্লেমুল মালায়েকা’ খ্যাত ইবলিসকে জান্নাত থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছিল।

সুতরাং অহংকার থেকে সাবধান। অহংকার মানুষের সব আমলকে ধ্বংস করে চির জাহান্নামি হিসেবে সাব্যস্ত করে তোলে। অহংকার সম্পর্কে সচেতনতা লাভে এ কথাগুলো মনে রাখতে হবে-

কোনো বিষয়ে নিজেকে অন্যের তুলনায় সম্মানিত বা বড় মনে করা, অর্থ-সম্পদ বা বয়সে বড় হয়ে ছোট কাউকে ছোট মনে করা আবার অহংকার নয়; বরং অহংকার হলো কাউকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা বা অবজ্ঞা করা বা হেয় করাই হলো অহংকার।

আল্লাহ তাআলা কোনো অহংকারী ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না। তিনি অহংকারী ব্যক্তিকে অনেক নেয়ামত থেকে বঞ্চিত রাখবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘দুনিয়াতে যারা অন্যায়ভাবে অহংকার প্রকাশ করে, তাদেরকে আমি অবশ্যই আমার নিদর্শনাবলী থেকে বিমুখ রাখবো।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ১৪৬)

অহংকারী ব্যক্তি কোনোভাবেই জান্নাতে যেতে পারবে না। জান্নাতে যেতে হলে বা পরকালের চূড়ান্ত সফলতা পেতে হলে অবশ্যই তাকে অহংকারমুক্ত থাকতে হবে।

হাদিসে জান্নাতের বিপরীতে যেভাবে জাহান্নামের তুলনা করা হয়েছে তেমনি ঈমানের বিপরীতে অহংকারের কথা বলে মুমিন মুসলমানকে সতর্ক করা হয়েছে। যাতে মুমিন ব্যক্তি অহংকার ত্যাগ করে ঈমানকে মজবুত করতে পারে। অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে পারে।

যুগে যুগে ইসলাম বিরোধী বড় বড় নেতা তথা ফেরাউন, নমরুদ, আবু লাহাব, উতবা, শায়বা এবং আবু জাহেলরা এ অহংকারের কারণেই সত্যকে মেনে নিতে পারেনি। ইসলাম গ্রহণ করতে পারেনি। তারা নিক্ষেপিত হয়েছে ধ্বংসের অতল গহ্বরে। আবার যুগে যুগে সব নবি রাসুলই আল্লাহ তাআলার আনুগত্য ও বিনয়ের কারণেই লাভ করেছে সফলতা।

সর্বোপরি অহংকার হলো আল্লাহর চাদর। যে ব্যক্তি অহংকার (আল্লাহর চাদর) নিয়ে টানাটানি করবে, আল্লাহ তাদের পছন্দ করেন না বরং ধ্বংস করে দেন। পক্ষান্তরে যারা আল্লাহ তাআলাকে বেশি বেশি ভয় এবং সম্মান করে তারাই হলো অধিক সম্মানিত ও সফল।

এ কারণেই আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে সম্মানিত সেই ব্যক্তি, যে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুক্তাকি বা আল্লাহভিরু।’ (সুরা হুজরাত : আয়াত ১৯)

আল্লাহ তআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়া ও পরকালের পতনের মূল অহংকার থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালে সম্মানিত ও সফল হওয়ার তাওফিক দান করুন।

আমিন।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official

বরিশালে দুর্ঘটনায় নিহত ২

banglarmukh official

পাকিস্তানে ট্রেনে জিম্মি দেড় শতাধিক যাত্রী উদ্ধার, ২৭ সন্ত্রাসী নিহত

banglarmukh official

পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেন হাইজ্যাক, জিম্মি শতাধিক

banglarmukh official