দুদিন পরই দেশে উদযাপিত হবে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। প্রবাসে থাকা বাংলাদেশিরা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের ঈদ উদযাপনকে আনন্দময় করতে বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন। ফলে ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে দেশে আসছে বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। গত পাঁচদিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকারও বেশি।সদ্য শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ২১ হাজার কোটি ডলারের কিছু বেশি। শুরু হওয়া নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম পাঁচদিনেই প্রবাসী আয়ে জোয়ার দেখা যাচ্ছে।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যমতে, কোরবানির ঈদ বা ঈদুল আজহার আগে প্রবাসীরা দুহাত ভরে পাঠাচ্ছেন তাদের উপার্জন। চলতি জুলাই মাসের প্রথম পাঁচদিনে ৫৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ঈদের আগে দেশে থাকা স্বজনরা যেন একটু ভালো করে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, কোরবানির পশু কিনতে পারেন, সেজন্য প্রতিবছর ঈদের আগেই রেমিট্যান্স আসে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি।বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, যে হারে রেমিট্যান্স আসছে, তা খুবই ইতিবাচক। সাধারণত প্রতি ঈদের আগেই রেমিট্যান্স বাড়ে। তবে এবারের রেমিট্যান্স আসার হার একটু বেশি। ঈদের দুদিন বাকি। এ দুদিনে আরও বেশি রেমিট্যান্স আসবে বলে আশা করছি।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, ডলারপ্রতি এখন পাওয়া যাচ্ছে ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা। ব্যাংকের ডলার সংকট কাটাতে রেমিট্যান্স আহরণে বিশেষ সুবিধার আওতায় আরও বেশি টাকা দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এছাড়া সরকার আড়াই শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা দিচ্ছে রেমিট্যান্সে। এতে ডলারপ্রতি ৯৫-৯৬ টাকা পাচ্ছেন গ্রাহকরা।মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বাড়ে। সেই ধারায় দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্স দুই হাজার ৪০০ কোটি ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে। প্রবাসী আয়ের ঢল অব্যাহত থাকে ২০২১ সালের মধ্যভাগ পর্যন্ত। এরপর হঠাৎ করেই ছন্দপতন শুরু হয় দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি গুরুত্বপূর্ণ এ খাতে। ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স বাড়বে। গত ছয়মাসে আরও ১০ লাখের মতো শ্রমিক বিদেশে গেছেন। তাদের পাঠানো আয় অচিরেই রেমিট্যান্সের খাতে যোগ হবে। ফলে বাড়বে রেমিট্যান্স।