দক্ষিণাঞ্চলের পেয়ারার মোকাম ঝালকাঠির ভীমরুলী গ্রাম। সেখানে বর্তমানে পেয়ারার দাম খুবই কম। এতে পেয়ারা গাছ থেকে তোলার শ্রমিক মজুরিও হয় না। তাই হতাশ হয়ে পেয়ারা বিক্রি না করে ফিরে যান পেয়ারা চাষিরা।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার ভীমরুলী গ্রামের পেয়ারা চাষি সুজন হালদার শানু বলেন, ‘আমরা ১শ’ টাকায় ১ মণ পেয়ারা বিক্রি করি। সেই পেয়ারা ঢাকায় কেজিপ্রতি ১০০-১২০ টাকা বিক্রি হয়। ১ মণ পেয়ারা বিক্রি করে ২ কেজি চালও কেনা যায় না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার কীর্তিপাশা, ভীমরুলী, শতদাসকাঠি, খাজুরা, মিরাকাঠি, ডুমুরিয়া, জগদীশপুর, খোদ্রপাড়া, পোষন্ডা, হিমানন্দকাঠি, বেতরা, কাপড়কাঠি ও পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানার বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে পেয়ারা বাগান। সড়ক ও জলপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে এ মোকাম থেকে পেয়ারা সরবরাহ করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, দ্রুত পচনশীল এ ফল ঢাকা, চট্টগ্রামের মতো বড় শহরে নিয়ে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই স্থানীয় বাজারে পাইকারদের কাছে নামমাত্র মূল্যে পেয়ারা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে তারা। ফলে কিছু মানুষ বিনাশ্রমে বিপুল পরিমাণ মুনাফা পাচ্ছে। অন্যদিকে কঠোর পরিশ্রম করেও চাষিরা স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করতে পারছে না।
শতদাসকাঠি গ্রামের বিপুল হালদার বলেন, ‘আমার এক একর ২৫ শতাংশ জমিতে পেয়ারার বাগান রয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। আমরা পেয়ারা মহাজনদের কাছে বিক্রি করি। মহাজনরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেন। এতে মহাজন ও পাইকাররা লাভবান হচ্ছেন।
ভবেন্দ্রনাথ হালদার বলেন, ‘প্রতিবছর বড় বড় কোম্পানি যদি জেলি তৈরির জন্য এখান থেকে পেয়ারা কিনতো, তাহলে আমরা বেশি লাভবান হতাম। সবচেয়ে ভালো হতো ভীমরুলী গ্রামে জেলি কারখানা স্থাপন করলে।
ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘এ বছর ৬৫০ হেক্টর জমিতে পেয়ারার আবাদ হয়েছে। গড়ে ৮ টন করে ফলন হয়েছে। তবে চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না, বিধায় হতাশ হয়ে আগ্রহ হারাচ্ছেন।