দয়ালু আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দা হাজীদের হজ কবুল করেন, তাদের অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেন। ফলে তারা কাবাঘর থেকে মাসুম বাচ্চার মতো নিষ্পাপ হয়ে বাড়ি ফেরেন।
হজ আর্থিক সামর্থ্যের অধিকারী মুসলমানের জন্য অবশ্যপালনীয় ইবাদত। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম হজ। তবে এটি শুধু ধনীদের জন্য অবশ্য পালনীয়। যেমন ইসলামের আরেকটি স্তম্ভ জাকাতও কেবল ধনীদের জন্য পালনীয়।
হজের আসল পাথেয় হলো তাকওয়া। মুমিনরা হজ পালনের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ পায়। এ সুযোগ যারা পায় তারা সত্যিকার অর্থে সৌভাগ্যবান।
হজ সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য এমন একটি অবশ্যপালনীয় ইবাদত যে, কেউ সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ পালনে কার্পণ্য করলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হবে।
সূরা আলে ইমরানের ৯৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘মানুষের ওপর আল্লাহর হক এই যে, কাবাঘর পর্যন্ত আসার সামর্থ্য যাদের আছে তারা হজ করার জন্য এখানে আসবে। যারা প্রত্যাখ্যান করবে (অর্থাৎ সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ করতে আসবে না) তারা জেনে রাখুক যে, আল্লাহ সৃষ্টিজগতের মুখাপেক্ষী নন।’ সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা হজ পালনে অনীহা প্রদর্শন করে মহানবী (সা.)-এর হাদিসে তাদের কঠোরভাবে ভর্ত্সনা করা হয়েছে।
হজ পালন উপলক্ষে হাজীরা রসুল (সা.)-এর রওজা জিয়ারতের জন্য মদিনায় যান। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘মদিনা জিয়ারত করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।’ আবু দাউদ।
তিনি আরও বলেন, রওজা জিয়ারতকারীরাও অশেষ সৌভাগ্যের অধিকারী। এর মাধ্যমে দুটি কবুল হজের সওয়াব পাওয়া যায়।
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো মুসলমান যখন কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আমাকে সালাম করে আল্লাহ তখন আমার রুহ ফিরিয়ে দেন এবং আমি তার সালামের জবাব দিই। মুসনাদে আহমাদ।
হজ পালনের জন্য অবশ্যই পাথেয় দরকার। সারা দুনিয়া থেকে মুমিনরা হজের জন্য আরাফায় যান। এজন্য হজ পালনকারীদের আর্থিক সামর্থ্যের বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে সব ইবাদতের মতো হজের জন্য আসল পাথেয় হলো তাকওয়া। অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি ভয় বা তাঁর হুকুম তামিল করার ঐকান্তিক বাসনা।
সূরা বাকারার ১৯৭ নম্বর আয়াতেও এ বিষয়টি নির্দেশিত হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘হজের সফরের জন্য পাথেয় সঙ্গে নিয়ে যাবে। তবে তাকওয়াই হচ্ছে সর্বোত্তম পাথেয়।’ এ বছর দুনিয়ার যেসব মুসলমান আল্লাহর মেহমান হিসেবে মক্কায় যাচ্ছেন পরম করুণাময় তাদের সবাইকে সুস্থভাবে হজ পালনের তওফিক দিন।
লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।