28 C
Dhaka
এপ্রিল ১৯, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অর্থনীতি জাতীয় বাজার

চামড়া: ব্যাপারীরা খুশি, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

যশোরের রাজারহাটে চামড়ার জমজমাট বেচাকেনা হয়েছে। তবে হাটে ব্যাপারীরা ন্যায্য দামের কথা বললেও হাসি ফেরেনি ক্ষুদ্র ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের মুখে। বিক্রেতারা বলছেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে অনেক কমে চামড়া বিক্রিতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

শনিবার (১৬ জুলাই) রাজারহাট চামড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বরাবরের মতই দাম নিয়ে হতাশ মৌসুমি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কিনছেন না ব্যবসায়ীরা। হাট জমলেও বাইরের ব্যাপারী ও ট্যানারি মালিকরা না আসায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিকট জিম্মি হতে হচ্ছে তাদের। হাটে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদ পরবর্তী বড় হাটে চামড়ার দাম না পেয়ে হতাশ তারা। সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না। অনেকেই প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন নির্ধারিত দামের অর্ধেকে। আর ছাগলের চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে না পারায় সেগুলোর দাম পাওয়াই দুষ্কর।

এদিন যশোরসহ নড়াইল, সাতক্ষীরা ও মাগুরার বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী চামড়া নিয়ে রাজারহাটে আসেন।

রাজারহাটে চামড়া বিক্রি করতে আসা ফরিদপুরের ব্যবসায়ী বিপুল দাস বলেন, হাটে ৫০০ পিস গরুর চামড়া এনেছি। প্রতিটি চামড়া কিনেছি ৪০০-৭০০ টাকা দরে। লবণ, শ্রমিক খরচ ও পরিবহন বাবদ প্রতিটি চামড়ায় আরও ২০০ টাকা করে খরচ হয়েছে। হাটে বড় চামড়া বিক্রি করেছি ৯০০ টাকা, আর ছোটগুলো ৪০০ টাকা দরে। এর মধ্যে ২০টি চামড়া বিক্রি হয়নি। গড়ে চামড়া বিক্রি হয়েছে সাড়ে ২২ টাকা ফুট দরে। সরকার নির্ধারিত দামের অর্ধেক পেয়েছি।

গোপালগঞ্জ থেকে আসা জয়ন্ত পোদ্দার বলেন, এবার ৫০০ পিস গরুর চামড়া কিনেছি। হাটে ২০০ পিস গরু ও ১০০টি ছাগলের চামড়া এনেছি। গরুর চামড়া ৭০০ টাকা দরে আর ছাগলের চামড়া ২০-২৫ টাকা দরে বিক্রি করেছি। গরুর চামড়াপ্রতি খরচ বাদ দিয়ে ১০০ টাকা করে গচ্চা গেছে। এছাড়া গড়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লোকসানের মুখে পড়েছি।

ব্যবসায়ীরা জানান, ট্যানারিগুলো ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট চামড়া সর্বোচ্চ ৪৪ টাকা দর দিলেও এ চামড়াকে প্রয়োজনীয় লবণ দিয়ে উপযুক্ত করে তুলতে তাদের প্রতি বর্গফুটের দাম পড়ে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। আর ট্যানারি মালিকরা বকেয়া টাকা না দেওয়ায় ইচ্ছে থাকলেও তারা বেশি চামড়া কিনতে পারেননি।

বৃহত্তর যশোর চামড়া হাটের সাবেক ইজারাদার ও চামড়া ব্যবসায়ী সিফাত হোসেন বলেন, আমরা সরকার নির্ধারিত দামে ভালো মানের গরুর চামড়া কিনেছি। তবে নষ্ট হয়ে যাওয়া চামড়া কম দামে বিক্রি হবে এটা স্বাভাবিক। কেননা এবার বেশিরভাগ হাটে উঠা চামড়া নানা কারণে নষ্ট হয়ে গেছে।

চামড়া হাটের সাবেক ইজারাদার শেখ হাসানুজ্জামান হাসু বলেন, সরকার নির্ধারিত দামেই ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনছেন। ক্ষুদ্র বিক্রেতারা বেশি দামে চামড়া কিনলে লোকসান তো হবেই। তবে, কিছু ছাগলের চামড়া প্রসেসিংয়ের অভাবে নষ্ট হয়েছে। এদিন হাটে এক কোটি টাকার চামড়া কেনাবেচা হয়েছে।

ট্যানারি মালিকদের কাছে প্রায় ১০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বলে জানিয়েছেন চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুকুল। তিনি বলেন, ঢাকার বাইরে এবার চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ৪০-৪৪ টাকা। সরকার নির্ধারণ করা দামেই চামড়া ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে। সকাল হতে ৪০-৪৩ টাকা ফুট দরে চামড়া বিক্রি হয়েছে। হাটে কমপক্ষে ১০ হাজার গরু ও ১০ হাজার ছাগলের চামড়া উঠেছে।

বৃহত্তর যশোর চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মমিনুল মজিদ বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দামেই ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনছেন। ভালোমানের চামড়ার দাম বিক্রেতারা পেয়েছেন। এদিন হাটে বিপুল পরিমাণ চামড়া নিয়ে আসেন বিক্রেতারা।

এদিকে চামড়া ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যাপারীরা চামড়া কিনতে এসেছেন এখানে। ভালো দামেই চামড়া বেচাকেনা হচ্ছে। তবে এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে ট্যানারি মালিকদেরকে অবশ্যই বকেয়া পরিশোধের মানসিকতায় ফিরতে হবে। রাজারহাট মোকামে ছোট-বড় মিলিয়ে ৩ শতাধিক আড়ৎ রয়েছে। যেখানে প্রায় ২০ হাজার ব্যবসায়ী এর ওপর নির্ভরশীল।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official