বরিশাল নগরজুড়ে “গলাকাটা” ও “ছেলেধরা” আতঙ্কের মধ্যে ভর করছে নগরবাসী। স্কুল এবং রাস্তা থেকে শিশুদের ধরে নেয়া হচ্ছে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে সর্বত্ত।
আর এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণঞ্চলের জনপদে। ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গ্রামাঞ্চলের শিশু ও অভিভাবকরা। ‘ছেলে ধরা’ আতঙ্কে গ্রামের শিশুরা বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে।
অনেক গৃহকর্তারা শিশুদের বিদ্যালয় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।অপরিচিত লোক দেখলেই মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। এতে বিপাকে পড়েছে ভিক্ষুকরা। অপরিচিত কেউ ভিক্ষা চাইতে গেলে গৃহস্থরা ভিক্ষা না দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন।
বরিশালের বিভিন্ন উপজেলার কোথাও না কোথাও শিশু ধরে নিয়ে গলা কাটছে এমন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের মাঝে। প্রতিদিনই গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে ‘ছেলে ধরা’র খবর আসছে। তবে ঘটনা অনুসন্ধান করতে গেলে তার সুনির্দিষ্ট কোনো সত্যতা মিলছে না। গতকাল নগরীর আলেকান্দা রিফিউজি কলোনি এলাকায় স্প্রে দিয়ে এক গৃহিণীর গলায় চাকু দিয়ে আঘাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে । স্থানীয়রা জানায়,সেখানে গত ৩ দিনে স্কুল ছাত্রী সহ ৩ জনকে স্প্রে দিয়ে অচেতন করা হয়েছিলো তবে কে বা কারা এই এরকম করেছে তার কোনো সূত্র এখনো পাওয়া যায়নি। শেবাচিম সূত্র বলছে গত ২দিনে একই এলাকার দুই গৃহবধুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পর পর ৩টি ঘটনার পরে রিফিউজি কলোনি এলাকায় স্প্রে দিয়ে গলাকাটার আতংক ছড়িয়ে পড়েছে ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার সন্ধায় রিফিউজি কলোনির বাসিন্দা মোঃ ইউসুফ এর মেয়ে স্কুল ছাত্রী টুম্পা ( ১৪) তার নিজ বাসায় লেখাপড়া করার সময় কেউ রহস্যজনক ভাবে তার বাসয় প্রবেশ করে তাকে স্প্রে দিয়ে অচেতন করে। এ সময় তার মা পিছন থেকে দেখে ডাকচিৎকার দিলে ঘাতক পালিয়ে যায়। এরপর পরের দিন গত শনিবার সন্ধায় একই এলাকার রুবেলের স্ত্রী রিয়ার বাসায় সেই অজ্ঞাত কেউ প্রবেশ করে এবং তাকে স্প্রে দেওয়ার সময় তার ডাকচিৎকারে ঘাতক পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে রবিবার সন্ধা ৭ টার দিকে স্থানীয় শ্রমিক লীগ নেতা শাহ আলম এর বাসার পিছনের দরজায় দাড়িয়ে থাকে অজ্ঞাত ঘাতক। দরজা খোলা মাত্রই তার স্ত্রী রুবিকে স্প্রে করে মুখোশধারী অজ্ঞাত এক ব্যক্তি।
এ সময় ঘাতকের হাতে থাকা চাকুর আঘাতে রুবির গলায় আঘাত লাগে এতে সে সামান্য আঘাত পায় ও চিৎকার দেয় তার চিৎকারে শুনে শাহ আলমের মেয়ে ঘরে ঢুকতেই মুখোশধারী ঘাতক পালিয়ে যায় তখন স্প্রে দেয়ার কারণে রুবি অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে তাকে মূমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে শেবাচিমে ভর্তি করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি সাউথ মোয়াজ্জেম হোসেন ভুঁইয়া, কোতয়ালী থানার এসি মোঃ রাসেল, ওসি নুরুল ইসলাম পিপিএম সহ পুলিশের কর্মকর্তারা।
এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরিকল্পিত ভাবে কেউ আতংক ছড়াচ্ছে। অন্য কোন উদ্দেশ্যকে প্রবাহিত করার জন্য কেউ আতংক ছড়াচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে বরিশালের বিভিন্ন স্থানে গলা কাটা আতংকের সংবাদ পুরটাই গুজব, আর এরকম গুজব থেকে জনগণকে সচেতন করার জন্য বরিশাল মেট্রো পলিটন পুলিশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচার করা হবে যে এ সবই গুজব।