ঈদুল আজহার টানা ৫ দিনের ছুটি শনিবার শেষ হয়েছে। তবে এখনও কর্মস্থলের দিকে ছুটছে বহু মানুষ। তাই বরিশালে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও থ্রি হুইলারসহ ছোট গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নামে নৈরাজ্য বন্ধ হয়নি।
জানা গেছে, এসব পরিবহনে রূপাতলী থেকে লঞ্চঘাট ও নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে যেতে জনপ্রতি সাধারণ ভাড়া ১৫ টাকা। কিন্তু ঈদের দু’দিন আগে থেকেই তারা এই স্বল্প দূরত্বে ভাড়া আদায় করছে জন প্রতি ৩০ থেকে ৫০ টাকা। ফলে বিপাকে পড়েছেন হাজারো যাত্রী।
হাসান নামের এক যাত্রী জানান, ঈদের ছুটিতে গ্রামে এসে আবার কাজের প্রয়োজনে ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে। তাই রূপাতলী থেকে হলুদ রঙের অটো রিকশায় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে যেতে ১৫ টাকার ভাড়ার পরিবর্তে ৫০ টাকা দিতে হলো। বাড়তি টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চালকরা দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ তাদের। একই অভিযোগ করেছেন ঢাকাগামী আরেক যাত্রী লিটন দাস। তিনি জানান, প্রকাশ্যে এভাবে ভাড়ার নামে চাঁদাবাজি চললেও দেখার কেউ নেই।
অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন হলুদ অটো ও থ্রি হুইলারের অধিকাংশ চালক। তাঁরা বলেন, যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়াই নেয়া হতো। কিন্তু ঈদের কারণে আগের চেয়ে বাড়িয়ে নেয়া হচ্ছে। আগামী দুই এক দিনের মধ্যে আগের ভাড়া নেয়া হবে।
বরিশাল জেলা থ্রি-হুইলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কামাল হোসেন লিটন মোল্লা বলেন, যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া না নিতে চালকদের বলে দেয়া হয়েছে। এরপরও কেউ অতিরিক্ত ভাড়া নিলে তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা ও মহানগর অটো শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জামাল গাজী বলেন, শুনেছি অনেক চালক নিজেদের ইচ্ছামতো যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন। এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। তাই ব্যবস্থা নিতে পারছি না।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (ট্রাফিক) উপ-কমিশনার এসএম তানভীর আরাফাত জানান, ভুক্তভোগী কোনো যাত্রী এ ধরনের অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-টিআইবি পরিচালিত বরিশাল জেলা সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)’র সভাপতি গাজী জাহিদ হোসেন বলেন, যেকোনো উৎসবের সময়ই প্রশাসনের সহায়তায় যানবাহনের ভাড়া বাড়তি আদায় করা দীর্ঘদিন ধরে একটা প্রচলন হয়ে গেছে। তাই এ বিষয়ে সব সময়ই পুলিশও দায়সারা কথা বলে। ফলে এ ধরনের দুর্নীতিগ্রস্ত চালকরা নির্বিঘেœ ভাড়ার নৈরাজ্য চালিয়ে যায়।