১০ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে বরিশালের সিটি বাস সার্ভিস। ২০০৩ সালে সাতটি দোতলা বাসে এই সার্ভিস চালু হলেও ২০১৩ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। এতে বাড়ে যাত্রীদের হয়রানি। গুণতে হয় বাড়তি ভাড়া।
জানা গেছে, যাত্রীদের কম খরচে যাতায়াতের জন্য বরিশাল সিটি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছিল ২০০৩ সালে। কিন্তু দুই বছর চলার পর অজানা কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৯ সালে তৎকালীন মেয়র প্রয়াত শওকত হোসেন হিরণের হাত ধরে পুনরায় সিটি বাস সার্ভিস চালু হয়েছিল। কিন্তু চার বছরের মাথায় আবার বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, রুপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে বরিশাল নদীবন্দর, নদী বন্দর থেকে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এবং সেখান থেকে রুপাতলী বাস টার্মিনাল পর্যন্ত বিভিন্ন সড়কে বাসগুলো চলাচল করতো। তবে সেই সার্ভিস ২০১৩ সালের পর আর চলেনি। এরপরই নগরীতে বেড়েছে থ্রি-হুইলার ও সিএনজি অটোরিকশার দৌরাত্ম্য।
এসব যানবাহনের কারণে তীব্র যানজটের সঙ্গে বাড়তি ভাড়া গুণে হয়রান নগরবাসী। তাই আবারও সিটি সার্ভিস চালুর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
নগরবাসী বলছেন, সিটি সার্ভিস থাকলে অন্য পরিবহনের ভাড়া কমে যায়। কিন্তু ১০ বছর ধরে সেই সার্ভিস বন্ধ থাকায় এখন গ্যাস ও ব্যাটারি চালিত থ্রি-হুইলার জাতীয় যানবাহনে নদী বন্দর থেকে রুপাতলী পর্যন্ত মাত্র কয়েক কিলোমিটার পথ যেতে গুনতে হয় ১৫-২০ টাকা। একইভাবে রুপাতলী থেকে নথুল্লাবাদ ও বিবির পুকুর পাড় এবং বিবির পুকুর পাড় থেকে আবার নথুল্লাবাদ ও চৌমাথায় যেতেও গুণতে হয় একই রকমের ভাড়া। যে ভাড়া নিয়ে প্রায়ই যাত্রীদের সাথে বাকবিত-া হচ্ছে যাত্রীদের।
স্থানীয় বাসিন্দা সরোয়ার আলম বলেন, আগে থ্রি হুইলারগুলোতে কম দূরত্বের যাত্রীদের তোলা হতো না। এখন বরিশালে এত পরিবহন হয়েছে যে, সব দূরত্বের যাত্রীদের যেমন তুলছে। ভাড়াও অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে আদায় করছে।
তিনি বলেন, এই শহরের রাস্তা অনুপাতে থ্রি-হুইলারের সংখ্যা অনেক বেশি। যেমন বরিশাল শহরের মতো কোনো সিটিতে এত বেশি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা কোথাও নেই। তার ওপর সিএনজি চালিত থ্রি-হুইলার, সিএনজি ও প্যাডেল চালিত রিকশা তো রয়েছেই।
গণসংহতি আন্দোলন জেলার আহ্বায়ক দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু বলেন, নাগরিকদের কথা চিন্তা করে সিটি সার্ভিসের দাবি ইতোমধ্যে আমরা উত্থাপন করেছি। অটোরিকশা, সিএনজি, মাহিন্দ্রা যাই বলা হোক না কেন, বরিশাল শহরে ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নৈরাজ্য চলছে। যার প্রভাব পড়ছে যাত্রীদের ওপর। সিটি সার্ভিস চালু হলে যাত্রা যেমন নিরাপদ হবে, তেমনি ভাড়া নিয়ে ছোট পরিবহনগুলোর নৈরাজ্যও বন্ধ হবে
ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে শহরে ২৫ হাজার অবৈধ যান বাহন চলাচল করছে। এদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের অনুমোদিত আড়াইহাজার সিএনজি এবং পাঁচ হাজার ইজিবাইকের রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানান জনসংযোগকর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস।
বরিশাল বিআরটিসি বাস ডিপোর ম্যানেজার জামসেদ আলী বলেন, যাত্রীদের যাতায়াতে দ্বিতল বাস সার্ভিস বন্ধ থাকায়, সেগুলো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতে চালু রাখা হয়েছে। সরকারি ভাবে উদ্যোগ নেয়া হলে যাত্রীদের জন্য দ্বিতল বাস আবার চালু করা হবে।