এপ্রিল ২৮, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
ক্রিকেট খেলাধুলা

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ২৪২ রান

তিনবার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেও ট্রফিটা ছোঁয়া হয়নি ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ডের। এবার চতুর্থবার। এবার কি পারবে ইংলিশরা? স্বাগতিক হয়ে লর্ডসের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মোকাবেলা করতে নেমে ইংলিশদের শিরোপা প্রত্যাশা অনেক বেশি। সেই প্রত্যাশা পূরণে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন বোলাররা। এবার দায়িত্ব ব্যাটসম্যানদের।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ইংলিশ বোলারদের তোপের মুখে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের সামনে মাত্র ২৪২ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে পেরেছে তারা।

লর্ডসে টস জিতে আগে ব্যাট করলেই জয় নিশ্চিত- এমন একটা ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে যেন ইতিমধ্যে। কিন্তু সেই ধারণা সম্ভবত ভেঙে দিতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড। টস জিতে ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ডকে শুরু থেকেই বেশ ভালোভাবেই চেপে ধরতে সক্ষম হয়েছে ইংলিশ বোলাররা। নিয়মিত বিরতিতে একের পর এক উইকেট হারাতে হারাতে শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান করতে সক্ষম হয়েছে নিউজিল্যান্ড।

England

হেনরি নিকোলস আর টম ল্যাথাম ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই ঠিকভাবে দাঁড়াতে পারেননি ইংলিশ বোলারদের সামনে। সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন হেনরি নিকোলস। ৪৭ রান করে আউট হন টম ল্যাথাম। ৩০ রান করেন কেন উইলিয়ামসন।

টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর শুরু থেকেই নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখে ইংলিশ বোলাররা। শুরুতেই উইকেট পড়তে পারতো ক্রিস ওকসের বলে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই তার বলে এলবিডব্লিউর আবেদন ওঠে এবং আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা আঙ্গুল তুলে দেন। হেনরি নিকোলস ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি রিভিউ চেয়ে বসলেন। তাতেই দেখা গেলো বল স্ট্যাম্পের অনেক ওপর দিয়ে চলে যেতো। যে কারণে, ধর্মসেনাকে স্যারেন্ডার করে আউট ফিরিয়ে নিতে হয়েছে।

কিন্তু সপ্তম ওভারে আর বাঁচতে পারলেন না। ক্রিস ওকসের বলেই ব্যাটে লাগাতে পারলেন না গাপটিল। বল আঘাত করলো প্যাডে। আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা আঙ্গুল তুলে দিলেন। আবারও রিভিউ নিলেন গাপটিল। কিন্তু এবার আর রক্ষা হলো না। আউটই হয়ে যেতে হলো গাপটিলকে।

পুরো টুর্নামেন্টে বাজে পারফর্ম করা মার্টিন গাপটিলের কাছে কিউইদের প্রত্যাশা ছিল ফাইনালে অন্তত তিনি কিছু করে দেখাবেন। সে লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামার পর ১৮ বল খেলেন ১৯ রানের ইনিংস। ২টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কা মারেন ১টি। কিন্তু বেশিদুর এগুতে পারলেন না। ১৯ রান করেই আউট হয়ে গেলেন তিনি।

Eng-NZ

এরপর ইংলিশ পেসারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মনে হচ্ছিল নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকবে কিউইরা। কিন্তু কেন উইলিয়ামসন আর হেনরি নিকোলসের ব্যাটে ভালোই জবাব দিতে শুরু করে নিউজিল্যান্ড।

কিন্তু রান তোলার গতি ছিল কম। তবে, ধরে খেলার চেষ্টা করছিলেন উইলিয়ামসন এবং নিকোলস। দু’জনের ব্যাটে ২১.২ ওভারে ১০০ রানের গণ্ডিও পার হয় কিউইরা। কিন্তু ২৩তম ওভারে লিয়াম প্লাঙ্কেটের দুর্দান্ত এক আউট সুইঙ্গার বলে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন উইলিয়ামসন।

আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা প্রথমে আউট দেননি। ইংল্যান্ড নিশ্চিত ছিল ওটা আউট। এ কারণে, তারা রিভিউ নিলো এবং শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো ব্যাটের কানা ছুঁয়ে গিয়ে বল জমা পড়েছে জস বাটলারের গ্লাভসে। ৭৪ রানের জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হলেন নিকোলস আর উইলিয়ামসন। ১০৩ রানে পড়লো কিউইদের দ্বিতীয় উইকেট।

Nz-eng

এরপরই বুড়ো হাড়ের ভেলকি দেখাতে শুরু করেন লিয়াম প্লাঙ্কেট। এটা তার শেষ বিশ্বকাপ। ৩৫ বছরে পা রাখা এই বোলার যেন পণ করেই নেমেছেন, লর্ডসের ফাইনালকে স্মরণীয় করে রাখবেন। সে লক্ষ্যেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বল করে যাচ্ছেন। শুধু বল করে যাওয়াই নয়, দুর্দান্ত দুই ডেলিভারিতে নিউজিল্যান্ডের সেট দুই ব্যাটসম্যানকে দেখিয়ে দিয়েছেন সাজঘরের পথ।

প্রথমে কেন উইলিয়ামসন এবং পরে তিনি ফিরিয়ে দেন হেনরি নিকোলসকে। গাপটিল কিংবা উইলিয়ামসন ফিরে গেলেও ব্যাট হাতে দারুণ স্থিরতার পরিচয় দিচ্ছিলেন হেনরি নিকোলস। শুধু তাই নয়, ধীরস্থির ব্যাটিং করে হাফ সেঞ্চুরিও তুলে নেন। ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার।

কিন্তু ২৭তম ওভারের পঞ্চম বলে প্লাঙ্কেটের লেন্থ বল কভার ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন নিকোলস। কিন্তু বল ব্যাট ফাঁকি দিয়ে গিয়ে চলে যায় স্ট্যাম্পে। বোল্ড। ৭৭ বলে ৫৫ রান করে বোল্ড হয়ে ফিরে যান হেনরি নিকোলস। ১১৮ রানে পড়ে তৃতীয় উইকেট।

১৪১ রানের মাথায় নিউজিল্যান্ড হারায় তৃতীয় উইকেট। এ সময় রস টেলরকে হারিয়ে বেশ বিপদে পড়ে য়ায় নিউজিল্যান্ড। দলের সেরা ব্যাটসম্যানদের প্রায় সবাই বিদায় নেন এনে একে, বড় ধরনের কোনো ভূমিকা রাখা ছাড়াই। মার্ক উডের বলে ১৫ রান করে লেগ বিফোর হয়ে সাজঘেরে ফিরে যান রস টেলর।

টেলর আউট হওয়ার পর জুটি বাধেন টম ল্যাথাম আর জিমি নিশাম। এ দু’জন চেষ্টা করেন বিপর্যয় কাটিয়ে দলের রানকেও সমৃদ্ধ করার। কিন্তু ৩২ রানের জুটি গড়ার পর টিকতে পারেননি তারা। দলীয় ১৭৩ রানের মাথায় লিয়াম প্লাঙ্কেটের দারুণ এক ডেলিভারিতে জো রুটের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৯ রানে ফিরে যান নিশাম।

nicols

কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম চেষ্টা করেন টম ল্যাথামের সঙ্গে জুটি বাধার। কিন্তু ২৮ বলে ১৬ রান করে ফিরে যেতে হয় তাকেও। ক্রিস ওকসের বলে উইকেট দেন তিনি। টম ল্যাথামের সামনে সুযোগ ছিল হাফ সেঞ্চুরি করার। কিন্তু ক্রিস ওকসের একটি ফুলটস বল খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন পরিবর্তিত ফিল্ডার জেমস ভিন্সের হাতে।

পরের ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারেননি। মিচেল সান্তনার ছিলেন ৫ রানে অপরাজিত। ৪ রান করে ফিরে যান ম্যাট হেনরি। ১ রানে অপরাজিত থাকেন ট্রেন্ট বোল্ট।

১০ ওভারে ৪২ রান দিয়ে লিয়াম প্লাঙ্কেট তুলে নেন ৩ উইকেট। ৯ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন ক্রিস ওকস। জোফরা আর্চার আর মার্ক উড নেন ১টি করে উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস : নিউজিল্যান্ড এবং ব্যাট করার সিদ্ধান্ত
নিউজিল্যান্ড : ২৪১/৮, ৫০ ওভার (নিকোলস ৫৫, টম ল্যাথাম ৪৭, উইলিয়ামসন ৩০, গাপটিল ১৯, নিশাম ১৯, টেলর ১৫, গ্র্যান্ডহোম ১৬; ক্রিস ওকস ৩/৩৭, প্লাঙ্কেট ৩/৪২, আর্চার ১/৪২, মার্ক উড ১/৪৯)।

সম্পর্কিত পোস্ট

মিরপুরে তামিমরা দিলেন মুশফিককে সংবর্ধনা

banglarmukh official

এশিয়ান কাপ নিশ্চিতে একই গ্রুপে বাংলাদেশ-ভারত

banglarmukh official

আইরিশদের হোয়াইটওয়াশ করতে সহজ লক্ষ্য পেল বাংলাদেশ

banglarmukh official

এবার ওয়ানডে সিরিজেও খেলা হচ্ছে না শান্তর

banglarmukh official

মিরপুরে শারমিনের ব্যাটে ভর করে বাংলাদেশের রেকর্ড পুঁজি

banglarmukh official

কথা শোনেননি তাসকিন, ছয় উইকেট পাওয়ার পর যা লিখলেন স্ত্রী

banglarmukh official