এপ্রিল ২০, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
আদালতপাড়া জাতীয় প্রচ্ছদ

সাবরিনাসহ ৮ আসামির ১১ বছরের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের শীর্ষ কর্মকর্তা ডা. সাবরিনাসহ ৮ আসামিকে ১১ বছরে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেন মঙ্গলবার দুপুরে আলোচিত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন।

সাবরিনা ছাড়া মামলার বাকি আসামিরা হলেন—সাবরিনার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরী, সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির ও তার স্ত্রী তানজীনা পাটোয়ারী, শফিকুল ইসলাম, প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইন্সেসের স্বত্বাধিকারী জেবুন্নেছা রিমা, বিপ্লব দাস। আসামিরা সবাই কারাগারে রয়েছেন।

আসামিদের প্রত্যেককে দণ্ডবিধির তিনটি ধারায় এই সাজা দিয়েছে আদালত। এর মধ্যে দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় ৩ বছর, ৪৬৬ ধারায় ৪ বছর আর ৪৭১ ধারায় ৪ বছর মোট ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ২৯ জুন এ মামলায় রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার ১৯ জুলাই রায়ের দিন ঠিক করা হয়।

এর আগে মামলাটিতে গত ১১ মে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। গত ২০ এপ্রিল মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

মামলার তদন্ত শেষে গত ৫ আগস্ট আদালতে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিটে জেকেজি হেলথ কেয়ারের কম্পিউটারে এক হাজার ৯৮৫টি ভুয়া রিপোর্ট ও ৩৪টি ভুয়া সার্টিফিকেট জব্দের কথা বলা হয়েছে। গত বছর ২৩ জুন জেকেজির সিইও আরিফসহ পাঁচজনকে আটক করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। ওই ঘটনায় তেজগাঁও থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ২২ জুন জেকেজির সাবেক গ্রাফিক্স ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরু ও তার স্ত্রী তানজীন পাটোয়ারীকে আটক করে পুলিশ। হিরু স্বীকারোক্তি দিয়ে জানান, তিনি ভুয়া করোনা সার্টিফিকেটের ডিজাইন তৈরি করতেন, যার সঙ্গে জেকেজি গ্রুপের লোকজন জড়িত। ওই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জেকেজির সিইও আরিফুলসহ চারজনকে আটক করে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীর জ্ঞাতসারেই সব কিছু হয়েছে বলে পুলিশকে জানান আটক ব্যক্তিরা।

এরপর ওই বছর ১২ জুলাই ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে ১৩ জুলাই ৩ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। ওই রিমান্ডের পর ১৭ জুলাই তার ফের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ২৩ জুন আরিফ চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেয় পুলিশ। ১৫ জুলাই তাকে ফের ৪ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। সব আসামিই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

২০২০ সালের ৫ আগস্ট এ মামলায় ঢাকা সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী। একই বছরের ২০ আগস্ট সাবরিনাসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত।

ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক। তিনি আরিফের চতুর্থ স্ত্রী। তার প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রী রাশিয়া ও লন্ডনে থাকেন। তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে তালাক হয়েছে তার। চতুর্থ স্ত্রী ডা. সাবরিনার কারণেই করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ পায় জেকেজি হেলথকেয়ার।

প্রথমে তিতুমীর কলেজ মাঠে স্যাম্পল কালেকশন বুথ স্থাপনের অনুমতি মিললেও প্রভাব খাটিয়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ৪৪টি বুথ স্থাপন করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। নমুনা সংগ্রহের জন্য মাঠকর্মী নিয়োগ দেন তারা। তাদের হটলাইন নম্বরে রোগীরা ফোন দিলে মাঠকর্মীরা বাড়ি গিয়ে এবং বুথ থেকেও নমুনা সংগ্রহ করতেন। এভাবে নমুনা সংগ্রহ করে তারা ২৭ হাজার রোগীকে করোনা টেস্টের রিপোর্ট দেন, যার মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনা আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ জনের রিপোর্ট প্রতিষ্ঠানটি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করে। প্রতিটি সার্টিফিকেটের বিনিময়ে তারা ৫ হাজার টাকা করে নিয়েছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে

banglarmukh official