সহজ হয়ে এলো খাদ্যে ক্যানসারের অণুজীব শনাক্তকরণ। একটি মোবাইল ফোন অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে এই কাজ করা যাবে সহজে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বাংলা সংস্করণে এই সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।
ড্রিমল্যাব নামের অ্যাপটি ইম্পিরিয়াল কলেজ লন্ডন এবং ভোডাফোন ফাউন্ডেশনের মধ্যে একটি অংশীদারত্বের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে, যার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে নেচার পত্রিকায়।
অ্যাপ্লিকেশনটি এখন পর্যন্ত ৮৩ হাজারেরও বেশি বার ডাউনলোড করা হয়েছে।
মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা ঘুমিয়ে থাকার সময়, অর্থাৎ ফোনটি যখন অলস পড়ে থাকে তখনই এই অ্যাপটি কাজ করে।
অ্যাপটি একটি অ্যালগরিদম ব্যবহার করে প্রতিদিন আট হাজারেরও বেশি খাদ্যকণা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে থাকে। তার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয় বিশদ তথ্য সংবলিত ডেটাবেইস।
মূলত এর মাধ্যমে সেই অণুজীবগুলোকে খোঁজা হয় যেগুলো বিভিন্ন ল্যাব পরীক্ষায় ক্যানসার দমনে সফল প্রমাণিত হয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, বর্তমানে প্রচলিত অ্যান্টি-ডায়াবেটিক ও অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল ওষুধ ক্যানসার নির্মূল থেরাপিতে ভূমিকা পালন করতে পারে।
ইম্পিরিয়াল কলেজ লন্ডনের অস্ত্রোপচার ও ক্যানসার বিভাগের প্রধান গবেষক ড. কিরিল ভেসেলকভ বলেন, “এটি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। পরবর্তী ধাপে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেখা হবে, যে বিভিন্ন ওষুধের সমন্বয় এবং খাদ্য-ভিত্তিক অণুজীবগুলো মানুষের ওপর কেমন প্রভাব ফেলে।”
ক্যানসার রিসার্চ ইউকে’এর স্বাস্থ্য তথ্য কর্মকর্তা উইলিন উ বলেন, “এই গবেষণার মাধ্যমে আমরা হয়তো নতুন ক্যানসার থেরাপি খুঁজে বের করতে বা এর পথ পেতে সক্ষম হব। মূলত যেই থেরাপি আমাদের খাদ্য এবং পানীয়তে প্রাকৃতিকভাবে রয়েছে।”
আরও বলেন, “ক্যানসারের চিকিৎসায় এই পদ্ধতিটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। সেখানে এটা দেখা প্রয়োজন যে এটি ক্যানসারের চিকিৎসায় আদৌ কার্যকর কিনা।”
উইলিন বলেন, “এটি প্রমাণিত যে আপনি আঁশযুক্ত খাবার বিশেষ করে ফল ও সবজি বেশি খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারবেন। সেই সঙ্গে প্রক্রিয়াজাত মাংস, লাল মাংস এবং উচ্চ ক্যালরি-যুক্ত খাবার বা পানীয় খাওয়ার হার কমিয়ে আনাটাও জরুরি।”গবেষণায় দেখা গেছে, গাজর, আখরোট ও কমলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করা অণুজীব রয়েছে। আঙুর, ধনেপাতা এবং বাঁধাকপিতেও ক্যানসার বিরোধী অণুজীব রয়েছে।