ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে একই বিভাগের তিন শিক্ষককে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠায় রুহুল আমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়াও দায়িত্বে অবহেলার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জাহিদুল কবীরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আর এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়।
জানা যায়, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুহুল আমিন গত চার বছর ধরে নানাভাবে উত্যক্ত করে আসছিল বলে গত মঙ্গলবার অভিযোগে জানিয়েছেন একই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও দুই শিক্ষিকা।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রুহুল আমিন মঙ্গলবার একাডেমিক কমিটির সভা শেষ হওয়ার পর বিভাগীয় প্রধানকে চোখ টিপ দিলে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন এবং এর আগেও তাকে বিভিন্ন সময় এসএমএস, মেসেঞ্জারে অশ্লিল ছবিসহ নানাভাবে হয়রানি করা হয়। এছাড়াও একই বিভাগের আরো দুই শিক্ষিকাকেও উত্যক্ত করে আসছিল। এ ব্যপারে তারা সাবেক ভিসি মোহিত উল আলমের কাছেও মৌখিক অভিযোগ করেন বলে উল্লেখ করা হয় ওই অভিযোগ পত্রে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার ভিসি স্বাক্ষরিত এক নোটিশে অভিযুক্ত শিক্ষক রুহুল আমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই সাথে দায়িত্বে অবহেলার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জাহিদুল কবীরকে অব্যহতি প্রদান করা হয়। আর এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হককে প্রধান করে ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. একেএম জাকির হোসেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবা কানিছ কেয়াকে সদস্য করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রুহুল আমিনের জবাব, একাডেমিক সভায় ভাল রেজাল্টধারী শিক্ষার্থীদের মাস্টার্সে ফেল করিয়ে তাদের শিক্ষাজীবন ধবংস করতে চেয়েছিল বিভাগীয় প্রধানসহ কতিপয় শিক্ষক-শিক্ষিকা। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে এরকম জঘন্য মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জাহিদুল কবীর জানান, আমাকে কি কারণে অব্যহতি দিয়েছে আমি জানিনা। তবে আমি ঘটনা শুনার পরপরই শিক্ষিকার বাসায় গিয়ে খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করেছি।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নারী শিক্ষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছি এবং এ বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার ব্যপারে প্রক্টর জাহিদুল কবীরের বিরুদ্ধে কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করায় তাকেও অব্যহতি দিয়েছি। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট প্রকাশ করার পরে আমরা সিন্ডিকেটে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।