বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ চেয়ে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১টায় প্রশাসনিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে এ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের পদত্যাগ করার আল্টিমেটাম দেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্তমান উপাচার্য ও প্রক্টর ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন নানাভাবে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেছে। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের নানা অভিযোগ থাকলেও সবসময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের তাঁবেদারি করার কারণে কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন হননি। এই ভিসি ও প্রক্টর যতদিন শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে চেপে থাকবেন, ততদিন সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাদ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাবেন না।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কখনো চলতো বরিশাল সিটি করপোরেশন সাবেক দুই মেয়রের কথায়, আবার কখনো চলতো সদরের সংসদ সদস্যদের কথায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি-প্রক্টরসহ অনেক শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইতে আওয়ামী লীগের নেতাদের বাসায় বেশি দেখা যেতো। এসব বিষয় কখনোই সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে নেননি।
সমাবেশ থেকে তাদের দুজনকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা; অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সব স্তরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে নিযুক্ত ব্যক্তিদের গণপদত্যাগের সম্মুখীন করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক। তিনি ট্রেজারার হিসেবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২২ সালে যোগদান করেন। এরপর তৎকালীন উপাচার্যের মেয়াদকাল শেষে হলে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া। পরে আলোচনায় থাকা সিনিয়র অধ্যাপকদের পেছনে ফেলে রাজনৈতিক বিবেচনায় ২০২৪ সালে সরাসরি উপাচার্য পদে নিয়োগ পান তিনি।
সম্প্রতি ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের আগে একাধিক সভা করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য পুলিশের পাশাপাশি শিক্ষকদের ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি যে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাশে অবস্থান নেন তাদের ওপরও চাপ সৃষ্টি করেন। তবে সম্প্রতি প্রকাশ্যে তার কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চেয়ে আবারও আলোচনায় আসেন তিনি।
সমাবেশে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের মো. সিহাব, ইংরেজি বিভাগের মিজানুর রহমান মিজান, ইতিহাস বিভাগের মোশারফ হোসেন, বাংলা বিভাগের মো. আশিক আহমেদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।