উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানির চাপ এবং অমাবশ্যার জো’র জোয়ারের প্রভাবে বরিশালের কীর্তনখোলা সহ বিভাগের বিভিন্ন নদীর পানি বিপদসীমার অতিক্রম করেছে। এ কারণে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, দোকানপাঠ, ফসলি জমিসহ বিস্তির্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বরিশাল নগরীর অনেক এলাকাও পানিতে তলিয়ে যায়। কোথাও হাটু পানি আবার কোমড় সমান পানির কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন ওইসব এলাকার বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩ টার পর থেকে কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রমকরে ধীরে ধীরে খাল ও ড্রেন হয়ে নগরীর বিভিন্ন প্রবেশ করে। এতে নগরীর সদর রোড সহ বিভিন্ন সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘর বাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন সব শ্রেণি পেশার মানুষ। সব চেয়ে সমস্যায় পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ। বিভিন্ন স্থানে রান্না করার চুলা ডুবে যাওয়ায় অনেক পরিবারে রান্নাও বন্ধ হয়ে গেছে। আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে।
নগরবাসী জানান, গত তিন চার দিন ধরে বিকেলে জোয়ারের পানি শহরে প্রবেশ করছে। তবে দুই দিন ধরে পানির উঠছে বেশী।
বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ফসলি জমি, পুকুর তলিয়ে লাখ লাখ টাকার মাছ ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ও রাস্তাঘাট ভেঙ্গে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। নিচু এলাকার হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাট, বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছে এলাকাবাসী।
মেঘনা তীরবর্তী উলানিয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লিটন জানান, পানিবন্দি মানুষদের বিভিন্ন নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যর পক্ষ থেকে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পানির তীব্র স্রোতে বরিশাল সদরের লামচরি, বাবুগঞ্জের আগরপুর, রহমতপুর, মেহেন্দিগঞ্জ সদর, শ্রীপুর, চরগোপালপুর, উলানিয়া সহ বিভিন্ন উপজেলায় নদী ভাঙন তীব্র হয়েছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার, হিজলার ধর্মগঞ্জ নদীর পানি ১৮ সেন্টিমিটার, মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীর পানি ৬৪ সেন্টিমিটার, আমতলীর বুড়িশ্বর নদীর পানি ৩৭ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটার বিষখালী নদীর পানি ৫০ সেন্টিমিটার, বরগুনার বিষখালী নদীর পানি ৫৭ সেন্টিমিটার এবং ভোলার তেতুলিয়া নদীর পানি ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
বরিশালসহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় গত কয়েকদিন ধরে লাগামহীন বৃষ্টি হয়েছে। এতে মানুষের জীবন যাত্রা ব্যহত হচ্ছে।