নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে স্বামীর কাছে টাকা পাওয়ার অজুহাতে গৃহবধূকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ ও দিনভর স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ওই গৃহবধূ।
শনিবার সকাল ১০টায় মেহেন্দীগঞ্জের কাজিরহাট এলাকার ভঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভঙ্গা গ্রামের জাকির হোসেন সরদারের ছেলে সোহাগ সরদার ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করেছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ। ঘটনার পর নির্যাতিতা গৃহবধূ মুলাদী হাসপাতালে ভর্তি হলেও প্রভাবশালীরা তাকে নিয়ে গেছেন।
জানা গেছে, গৃহবধূর স্বামী ওই গ্রামের কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা ধার নেন। পাওনা টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়ে গৃহবধূর স্বামী এলাকা ছেড়ে চলে যান। সোহাগ সরদার গৃহবধূর স্বামীর কাছে ১০ হাজার টাকা পাবে বলে দাবি করেন।
কুরবানির ঈদের পর থেকে সোহাগ সরদার ওই গৃহবধূকে তার স্বামীর কাছে পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু অসহায় গৃহবধূ টাকা পরিশোধ করতে না পারায় শনিবার সকালে তাকে বাড়িতে ডেকে নেন।
গৃহবধূ জানান, পাওনা টাকার বিষয়ে কথা আছে বলে সোহাগ সরদার তাকে ঘরে ডেকে নেন। তিনি ঘরে যাওয়ার পরপরই সোহাগ দরজা বন্ধ করে দেয়। ঘরের মধ্যে কেউ না থাকায় সোহাগ তার হাত ও মুখ বেঁধে একাধিকবার ধর্ষণ করে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড়ে ও আঘাত করে অমানুষিক নির্যাতন চালায়।
ওই দিন বিকাল ৪টার দিকে সোহাগ বাইরে গেলে কৌশলে গৃহবধূ পালিয়ে কাজিরহাট থানায় যান। সেখানে গৃহবধূ সোহাগ সরদারের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দেন এবং অসুস্থতার কারণে রাতেই মুলাদী হাসপাতালে ভর্তি হন।
গৃহবধূ আরও জানান, শনিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই সোহাগ সরদারের লোকজন বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে। রোববার বিকালে হাসপাতালে জনৈক নেছার উদ্দীনের সহযোগিতায় সোহাগের লোকজন সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে মীমাংসা করার নামে গৃহবধূকে হাসপাতালে ভর্তি বাতিল করে তুলে নিয়ে যায়।
ঘটনার পর থেকে সোহাগ সরদার এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ায় এবং মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সাইয়েদুর রহমান বলেন, অসুস্থ নারীকে চিকিৎসা না দিয়ে অনৈতিকভাবে ভর্তি বাতিল করা হলে সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাজিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জুবায়ের আহমেদ জানান, আটকে রেখে নির্যাতনের ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় গৃহবধূ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।