26 C
Dhaka
অক্টোবর ৩০, ২০২৪
Bangla Online News Banglarmukh24.com
প্রচ্ছদ বরিশাল

ভরা মৌসুমেও বরিশালে ইলিশের বাজার চড়া

ভরা মৌসুমেও নদী ও সাগরের পর্যাপ্ত ইলিশের দেখা মিলছে না বরিশালের বাজারে। এতে কিছুটা হতাশ জেলে ও আড়তদাররা। সরবরাহ কম হওয়ায় ইলিশের বাজার চড়া বলে মনে করছেন বিক্রেতারা। আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে আশাবাদী হয়ে ক্রেতারা ইলিশ কিনতে বাজারে ভিড় করলেও অধিক দামের কারণে ফিরে যাচ্ছেন অন্য মাছ নিয়ে। তবে সরকারের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই।

বরিশাল নগরীর প্রধান মৎস্য অবতরণকেন্দ্র পোর্ট রোড ঘুরে দেখা যায়, ৭শ থেকে ৯শ গ্রাম ওজনের ইলিশের বর্তমান বাজার দর মণপ্রতি ৬০ হাজার টাকা, এক কেজি ওজনের মাছ ৭০ হাজার থেকে ৭২ হাজার টাকা মণ দরে, ১১শ গ্রামের বেশি ওজনের ইলিশ ৮০ হাজার টাকা, ৫শ থেকে ৬শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৫৪ হাজার টাকা এবং ৩শ থেকে ৪শ গ্রাম (গোডলা) ২৯ হাজার মণ দরে এবং জাটকা ইলিশ মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৪ হাজার টাকা দরে। তবে গত মৌসুমে ইলিশের দাম তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম ছিল বলে ব্যবসায়ীরা জানান। বর্তমানে বর্ষার মৌসুম হলেও বরিশালের পোর্ট রোডে ইলিশের আমদানি খুবই কম। বলা যায়, যেখানে স্বাভাবিক সিজনে ১৫ থেকে ২০টি ট্রলার আসত, সেখানে এখন আসছে সর্বোচ্চ পাঁচটি ট্রলার। যাতে সব মিলিয়ে আসছে ৬০ মণের মতো ইলিশ। এ কারণে দামও অনেকটা বেশি। কেননা মাছটির প্রচুর চাহিদা থাকলেও সরবরাহ নেই।

পোর্ট রোডের মেসার্স এম আর ফিস আড়তের মালিক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের স্টোর করা যে মাছ রয়েছে সেটার দাম কিছুটা কম। তবে তাজা ইলিশের দাম অনেক বেশি। বর্তমানে এক কেজি সাইজের ইলিশ ১ হাজার ৬২৫ টাকা কেজি দরে, ১২শ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি ১ হাজার ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, নদীর ইলিশের দাম বেশি, সাগরের ইলিশের দাম কম, কারণ স্বাদে তফাৎ রয়েছে। পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়লে তো দাম কমবে, মাছ না থাকলে দাম কমার প্রশ্নই আসে না। তবে কালোবাজারিরা যদি অবৈধভাবে ইলিশ ভারতে পাচার না করে তাহলে দাম কমতে পারে। ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ বলবত থাকলে দেশের নিম্নশ্রেণির মানুষও ইলিশ খেতে পারবে। কিন্তু সেজন্য নদী ও সাগরে ইলিশ ধরা পড়তে হবে পর্যাপ্ত। আমরা এখন পুরোপুরি লোকসানের মুখে। আমাদের অনেক টাকা ইনভেস্ট করা, সেটা কীভাবে উঠাব, এটা নিয়ে চিন্তা করছি।’

পোর্ট রোড বাজারে ইলিশ কিনতে আসা মো. শহীদ হাওলাদার জানান, ‘আমরা তো ভেবেছি ভারতে ইলিশ যাচ্ছে না, তাই দাম কমে গেছে। কিন্তু এখন বাজারে এসেছি নদীর ইলিশ কিনতে, তবে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি। যে মাছ আগে ১২শ টাকায় কিনেছি, সেটি এখন ১৮শ টাকার নিচে দেবেই না। এই সরকারের শুধু ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করলেই চলবে না, পাশাপাশি বাজার মনিটরিং করে সিন্ডিকেটের দরজা চিরতরে বন্ধ করতে হবে।’

বরিশাল জেলা পোর্ট রোড মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ইয়ার হোসেন বলেন, ‘গত ২৩ জুলাই ইলিশ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। এরপর প্রায় এক মাস হতে চলল জেলেরা নদী-সমুদ্রে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছেন না। তাই আড়তেও মাছ আসছে না। নদীর পানিদূষণ, বৈরী আবহাওয়ার কারণে মাছ আসছে না। তার পরও আমরা আশা করছি, বৃষ্টি আরও বাড়লে মাছ বাড়তে পারে। এখন যে পরিস্থিতি তাতে ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। একটি ট্রলার সাগরে পাঠাতে ৩ লাখ টাকা খরচ হয়, কিন্তু ট্রলার ফাঁকা আসছে, ইলিশ নেই। ব্যাংকঋণ রয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ লাখ টাকার, স্থানীয়ভাবেও ঋণ আছে, এখন ইলিশ ধরা না পরলে আমাদের পালাতে হবে। পোর্টরোড মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে মোট ১৭০টি আড়তে এ ভরা মৌসুমে আগে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হলেও বর্তমানে মাত্র ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার মাছ কেনাবেচা হচ্ছে।’

বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ বলেন, ভারী বর্ষণ হলে ইলিশও প্রচুর ধরা পড়বে। জেলেদের হতাশ হওয়ার দরকার নেই। অপেক্ষা করতে হবে। সরকার ঘোষণা দিয়েছেন ইলিশ বিদেশে পাঠানো কমিয়ে আনার জন্য। এতে করে স্থানীয় বাজারগুলোতে ইলিশ পাওয়া যাবে, তবে সেটি সময়ের ব্যাপার। তিনি বলেন, মাছের উৎপাদন ঠিকই আছে। সমস্যা হচ্ছে সড়ক যোগাযোগ উন্নত হওয়ায় এখন আর আড়তে আসতে হয় না জেলেদের, সরাসরি ঢাকায় মাছ পাঠাচ্ছেন তারা। এজন্য স্থানীয় বাজারগুলোতে চাহিদামাফিক ইলিশ সরবরাহ হচ্ছে না। সূত্র-ইত্তেফাক

সম্পর্কিত পোস্ট

এই সুযোগ নষ্ট হলে দেশ অনেক পিছিয়ে যাবে: ড. ইউনূস

banglarmukh official

রাষ্ট্রপতির বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত হলো উপদেষ্টা পরিষদে

banglarmukh official

বিএনপি-জামায়াতসহ সব দলকে একতাবদ্ধ থাকতে হবে: মামুনুল হক

banglarmukh official

গৌরনদী বিএনপির ৪ নেতাকর্মী গ্রেফতার

banglarmukh official

পায়রা সমুদ্রবন্দরের দিকে এগিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’

banglarmukh official

সংবিধান বাতিল এবং রাষ্ট্রপতির অপসারণ দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক

banglarmukh official