দীর্ঘ আট বছর পর শুক্রবার দুপুরে ৪ হাজার ৭শ মেট্টিক টন চাল নিয়ে ভিয়েতনামের পতাকাবাহী এমভি ‘ডং আন কুইন’ জাহাজটি মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়া এলাকায় ভিড়েছে।
দুর্যোগ ও আপদকালীন সংকট মোকাবেলায় এবং চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত থেকে সরকার এই চাল আমদানি করে। সেই চালানের অংশ হিসেবে শুক্রবার দুপুরে প্রথম দফায় প্রায় ৪ হাজার ৭শ মেট্টিক টন চাল নিয়ে ওই বিদেশি জাহাজ এখন মোংলা বন্দরে অবস্থান করছে।
সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকৃত চালের গুণগতমান পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে শুক্রবার দিবাগত রাতে চাল খালাস করা হতে পারে। ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে আমদানিকৃত চালের গুণগতমান দেখে খাদ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্টরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
খাদ্য বিভাগ ও মোংলা বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানায়, দেশের চলমান দুর্যোগে খাদ্য সংকট মোকাবেলায় সরকারিভাবে ভিয়েতনাম থেকে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্টিক টন এবং ভারত থেকে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৫০ হাজার মেট্টিক টন চাল আমদানির চুক্তি হয়। সম্প্রতি চুক্তি হওয়া ভারতীয় চালের প্রায় ৪ হাজার ৭শ মে: টন চাল নিয়ে গত বুধবার (৯ আগস্ট) মোংলা বন্দরে ভিড়ে ভিয়েতনামের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি ‘ডং আন কুইন’।
গত ৭ আগস্ট ভারতের কলকাতা বন্দর থেকে এ চাল বোঝাই করে মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে বিদেশি ওই জাহাজটি। ইতোমধ্যে খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তরা বন্দর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়ায় আমদানিকৃত চালবাহী জাহাজ পরিদর্শন ও চালের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। জাহাজটিতে প্রায় ৯৪ হাজার ২০ ব্যাগ চাল রয়েছে। প্রত্যেকটি পলি ব্যাগে রয়েছে ৫০ কেজি করে চাল।
জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট মেসার্স খুলনা এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি বিকে চক্রবর্তী পল্টু জানান, আমদানিকৃত চালের গুণগতমান বেশ ভালো। এ চাল খালাসের জন্য শ্রমিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়েছে।
মোংলা শ্রমিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোসার্স খালিদ ব্রাদাসের্র সুপারভাইজার আবুল কাসেম জানান, চাল খালাসের জন্য তাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমতি পেলেই খালাস প্রক্রিয়া শুরু হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকেল এ চাল খালাসে আগামী ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগতে পারে বলে তিনি জানান।
খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, দীর্ঘ প্রায় আট বছর ধরে এ বন্দরে চাল বোঝাই কোনো জাহাজ ভেড়েনি। এবার দুর্যোগকালীন খাদ্য সংকট মোকাবেলায় ভারত থেকে সরকারে আমাদানীকৃত চালের প্রথম চালান নিয়ে জাহাজটি বন্দরে এসেছে। এটি আমাদানিকৃত খাদ্য শস্যের চলমান প্রক্রিয়া।
মোংলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর জানান, লাইটার (নৌযান) জাহাজের মাধ্যমে খালাস হয়ে এ চাল দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাসমূহের বিভিন্ন খাদ্যগুদামে পৌঁছাবে। ভারত থেকে সরকারিভাবে আমদনিকৃত এ চালের দেশীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুব্রি এ্যাগো এ্যানার্জি। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান, লোকাল এজেন্ট ও খাদ্য বিভাগ যৌথভাবে এ চাল খালাসের কাজ এবং দেখভালের দায়িত্ব পালন করছে।
এছাড়াও ভারত থেকে পর্যায়ক্রমে মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরে আসবে আরও প্রায় ৫০ হাজার মেট্টিক টন চাল। বন্দরে এ চাল খালাসের মধ্যে দিয়ে আমদানিকৃত খাদ্য শস্য মোংলা বন্দরে শতকরা ৪০ ভাগ এবং চট্টগ্রাম বন্দরে ৬০ ভাগ খালাস হবে।