30 C
Dhaka
অক্টোবর ৩১, ২০২৪
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয় প্রশাসন

সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় রবিবার থেকে সারাদেশে ট্রাফিক সপ্তাহ

আগামীকাল রবিবার (৫ আগস্ট) থেকে সারাদেশে ট্রাফিক সপ্তাহ ঘোষণা করেছে পুলিশ। আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এই সপ্তাহে ফিটনেসবিহীন গাড়ি থেকে শুরু করে লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি পর্যন্ত- যে কোনোভাবে আইন লঙ্ঘন হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

শনিবার (৪ আগস্ট ২০১৮) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া এ ঘোষণা দেন। নিরাপদ সড়কসহ ৯ দফা দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনসহ সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ডিএমপি কমিশনার।

তিনি বলেন, আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যে উদ্দেশ্যে আন্দোলনে নেমেছেন তা অত্যন্ত মহৎ। কিন্তু এই আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার জন্য, ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য একটি গোষ্ঠী উসকানিমূলক তৎপরতা চালাচ্ছে। এটা চলতে দেওয়া হবে না। শিক্ষার্থীরা এভাবে রাস্তায় থাকার কারণে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে, অব্যবস্থাপনা দেখা দিয়েছে, এই অবস্থাও চলতে দেওয়া যায় না।

শিক্ষার্থীরা আইন প্রয়োগে আমাদের নৈতিক ভিত্তি দিয়েছে, আমরা এই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে এখন ট্রাফিক রুলের কঠোর প্রয়োগে উদ্যোগ নিয়েছি। এরই অংশ হিসেবে আগামীকাল (রবিবার) থেকে সারাদেশে ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করবে পুলিশ। এখন আমরা শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাই।

গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের পাল্লাপাল্লিতে চাপায় পড়ে দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে সেদিন থেকেই শিক্ষার্থীরা রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে নিরাপদ সড়কের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে। ‘নিরাপত্তাহীনতা’র অজুহাতে অলিখিত ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছে পরিবহন শ্রমিকরা, এতে জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ।

শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য মহৎ। সরকারের পক্ষ থেকে এ আন্দোলনের দাবিতে সাড়া দেওয়া হয়েছে। পুলিশও নৈতিকভাবে এতে সমর্থন করে। কিন্তু গোয়েন্দা প্রতিবেদন, সোশ্যাল মিডিয়া পর্যবেক্ষণে প্রাপ্ত রিপোর্টসহ বিভিন্ন তৎপরতা ঘেঁটে আমরা বুঝতে পেরেছি, এই আন্দোলনে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য, রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার জন্য উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। এতে রাজনৈতিক অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এমনকি আমাদের হাতে যে তথ্য রয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় স্কুল ড্রেস তৈরিরও হিড়িক পড়ে গেছে।

আন্দোলনে পুলিশ ও রাষ্ট্রকে নিয়ে নোংরা ভাষায় প্ল্যাকার্ড তৈরির অভিযোগ তুলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, যে নোংরা ভাষায় পুলিশ ও রাষ্ট্র সম্পর্কে প্ল্যাকার্ড বানানো হয়েছে, সেটা আমরা বলতে পারছি না। কিন্তু শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে কারা পুলিশকে হেয় করতে চাইছে সেটা আমাদের কাছে স্পষ্ট। ২০১২-১৩ সালের পুরনো ছবি এখন শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন বলে চালানো হচ্ছে।

পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা হয়েছে উল্লেখ করে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, পুলিশে আমার ৩১ জীবনের চাকরি জীবনে মিরপুর পুলিশ লাইনে বা রাজারবাগ পুলিশ লাইনে হামলা হবে, ধারণাও করতে পারিনি।

শিক্ষার্থীরা রাস্তায় থাকার কারণে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের লাইসেন্স চেকিংয়ের তৎপরতার কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। কর্মস্থলে যাতায়াতে মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। হজযাত্রীদের ফ্লাইট মিস হচ্ছে, অ্যাম্বুলেন্স যেতে পারছে না।

শিক্ষার্থীরা পুলিশের প্রতিপক্ষ নয় জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, তারা আমাদের পরিপূরক। তাদের আন্দোলনের ফলে ভবিষ্যতে ট্রাফিক আইনকে কঠোরভাবে বাস্তবায়নের সাহস পেয়েছি আমরা। তাদের দাঁড় করানো নৈতিক ভিত্তির ওপর আমরা সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছি। সারাদেশে ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করবো আমরা। এই সময়ে ফিটনেসবিহীন গাড়ি, লাইসেন্স ছাড়া চালক, হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেলসহ কোনোভাবে ট্রাফিক আইনের ব্যত্যয় হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। আইন না মানার যে চেষ্টা, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।

ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সমস্যা দীর্ঘদিনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, বহুবিধ কারণে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সমস্যা রয়েছে, নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা চেষ্টা করছি এ আইন বাস্তবায়নের। অনেক সময় পেশাজীবীদের স্টিকার লাগিয়ে আইন লঙ্ঘন করা হয়। আরও একটি সমস্যা আমাদের ভৌত অবকাঠামো না থাকা। বাস টার্মিনাল নেই, যেসব আছে তা ডিপোতে পরিণত হয়েছে।

‘আইন না মানার সংস্কৃতি সবচেয়ে বড় সমস্যা। একটি এলাকায় গেলে আমরা খুব ট্রাফিক রুল মানি, কিন্তু সেখান থেকে বেরোলে আর মানি না। সবার কাছে আহ্বান জানাই সব জায়গায় ট্রাফিক রুল মেনে চলার। বিশৃঙ্খলা নয়, শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে এ অবস্থা থেকে উত্তরণ আনতে হবে। আইন মানতে হবে, যারা আইন মানে না, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে আইনের প্রয়োগ করতে হবে।’

জনগণের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ সারারাত জেগে থাকে বলে আপনারা নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারেন। সবার কর্মঘণ্টা আছে, পুলিশের কর্মঘণ্টা নেই ১৬-১৭ ঘণ্টাও আমাদের ডিউটি করতে হয়। তাপদাহ, শৈত্য প্রবাহ, ঝড়-বৃষ্টি, সবসময় পুলিশ আন্তরিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে শৃঙ্খলা ধরে রাখার জন্য। আমাদের ত্যাগ খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই।

সম্পর্কিত পোস্ট

ইসি গঠনে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটির প্রজ্ঞাপন জারি

banglarmukh official

সাবেক ২ এমপি ও ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

banglarmukh official

তুরস্কে কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশের মুয়াজ

banglarmukh official

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের মিছিল করায় পাঁচজন ৩ দিনের রিমান্ডে

banglarmukh official

নতুন নাম পেল ৬ সরকারি মেডিক্যাল

banglarmukh official

বিসিএস পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

banglarmukh official