কাঁদতে কাঁদতে ১০১ বছরের মো. জামিরুদ্দিন শেখ জানালেন আল্লাহ এত্ত মানুষেরে নিয়া যায় আমারে ক্যান নিয়া যায় না।
তিনি জানান, ৫২ বিঘা সম্পত্তি থাকার পরও তার ৫ ছেলের মধ্যে ৪ ছেলের হাতেই মার খাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। বড় ছেলে সাহেব আলী তাকে দুই বার মেরেছে, সেজ ছেলে আইয়ুব আলীও তাকে দুই বার মেরেছে, তৃতীয় ছেলে আলতাফ তাকে মেরেছে ৩ বার আর সর্ব কনিষ্ঠ ছেলে মশিয়ার তাকে মেরেছে দুই বার। বেশ কিছুদিন ছিলেন মেজ ছেলের সঙ্গে। কিন্তু ছেলের বৌ অভিযোগ তুলে বলে যখন কেউ তাকে খেতে দেয় না, তখন আমরাও তাকে খেতে দেব না। এই বলে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
তিনি আবারও অঝরে কাঁদতে থাকেন। একটু স্বাভাবিক হয়ে আবার বলতে শুরু করেন জীবনের করুন কাহিনী। তিনি জানান, মেজ ছেলের বাড়ি থেকে বের হয়ে সোজা চলে গেলেন বৃদ্ধাশ্রমে। সেখানে ছিলেন প্রায় দুই মাস। সেখান থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে নিয়ে আসেন বড় ছেলের মেয়ে ও তার জামাই। আবার বড় ছেলের বাড়িতে রেখে আসে তারা। এখন কেউ তার সঙ্গে কোনো কথা বলে না। আর বিভিন্ন অছিলায় আমার উপর চলে শারীরিক নির্যাতন।
শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উসমান গণি জানান, মৃত মাদু শেখের ছেলে মো. জামিরুদ্দিন শেখ। জন্ম ১০ অক্টোবর ১৯১৭ সালে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বিপ্র-বগদিয়া গ্রামে। ৫ ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। জামিরুদ্দিন অভিযোগ এনেছেন, অসুস্থতার সুযোগে ৫২ বিঘা সম্পত্তি জোর করে লিখে নিয়েছেন ছেলেরা। আবার শারীরিক নির্যাতনও করছে প্রতিনিয়ত। এরপর নিজের জমি উদ্ধারের জন্য আদালতে মামলা করেন।
জেলা প্রশাসক মো. জাকির হোসেন জানান, তার কাছেও এসেছিলেন জামিরুদ্দিন শেখ। তার করুন কাহিনী শুনে তিনি শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার। দোষীদের কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না।