31 C
Dhaka
এপ্রিল ২৩, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
আদালতপাড়া

আইনমন্ত্রীর সঙ্গে একমত নন আইনজ্ঞরা

বিচারপতিদের পদত্যাগের সুযোগ সম্পর্কে সম্প্রতি একটি জাতীয় পত্রিকাকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘এটা সংবিধানে নেই। তাই পদত্যাগ করার স্কোপ (সুযোগ) নেই। সে কারণে ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ পিটিশন ও তার দ্রুত শুনানি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’ তবে মন্ত্রীর এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন আইনজ্ঞরা।

তাদের মতে বিদ্যমান সংবিধানের আলোকেই বিচারপতিদের পদত্যাগ করার সুযোগ আছে। তাছাড়া সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়ের পরও বিচারপতিদের পদত্যাগের উদাহরণ আছে।

গত ২৪ আগস্ট প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে আইনমন্ত্রীর দেয়া ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জানতে চাইলে জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকার দৈনিক জাগরণকে বলেন, ‘আইন তো বলে বিচারপতিরা পদত্যাগ করতে কোনো বাধা নেই। তারা রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগ পত্র সাবমিট করতে পারেন। দ্যাটস অল।’

বিচারপতিদের পদত্যাগ করার সুযোগ নেই বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের দেয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকার আমলের সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেন, ‘কেন পারবেন না! পারবেন। তবে কারও ব্যাপারে যদি তদন্ত চলে, সেটি ভিন্ন কথা।’

কেন ভিন্ন কথা? সংবিধানে তাদের বিষয়ে কি ভিন্ন কিছু লেখা আছে?- এসব প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের ৪ উপ-অনুচ্ছেদ পড়তে বলেন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে বিদ্যমান সংবিধানের ষষ্ঠ ভাগে বিচার বিভাগ সংক্রান্ত অনুচ্ছেদের এই উপ-অনুচ্ছেদে লেখা আছে, ‘কোন বিচারক রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ করিয়া স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।’ এটি পড়ে শোনালে তিনি বলেন, ‘তাহলে সংবিধানে পদত্যাগ করার সুযোগ আছে তো।’

স্পিকার থাকাকালে পদাধিকার বলে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করে আসা জমির উদ্দিন সরকার এই বিষয়ে বলেন, ‘তদন্ত চলাকালেও যদি কোনো বিচারপতি পদত্যাগ পত্র জমা দেন, তবে তা এক্সেপ্টেড হবে। অন্য কোনো কেস থাকলে তা পরে দেখা যাবে। কিন্তু তার পদত্যাগ করার সুযোগ আছে।’

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শফিক আহমেদ আরও বলেন, ‘সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়ের পর বিচারপতিদের পদত্যাগের উদাহরণও আছে। তাদের একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এবং অন্যজন বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা (যিনি নিজেও প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেছেন)।’

তবে বিএনপি সরকার আমলের আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ বর্তমান আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো মন্তব্য করেননি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এই ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না। কিছু মাইন্ড করবেন না। এটা অনেক গভীর ব্যাপার। এসব তর্কে-বিতর্কে যেতে চাই না।’

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৩ জুলাই ষোড়শ সংশোধনীর বিষয়ে আপিল বিভাগের রায় ঘোষণা হয়, পরে পয়লা আগস্ট পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। একই বছরের ২ অক্টোবর এক মাসের ছুটিতে যাওয়ার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা চিঠি দেন। পরের দিন ৩ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনের দায়িত্ব পান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা। ওই বছর ১০ নভেম্বর কানাডায় যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুর থেকে রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগ পত্র পাঠান তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

পরের বছর ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নতুন প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তখন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা পদত্যাগ করেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

এমবিবিএস-বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারবে না

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি অপসারণের নির্দেশ হাইকোর্টের

banglarmukh official

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার নির্দেশ হাইকোর্টের

banglarmukh official

অর্থপাচার মামলায় তারেক রহমান ও মামুনের আপিলের রায় ৬ মার্চ

banglarmukh official

আদালতে সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরান

banglarmukh official

ফিল্মি স্টাইলে আদালত চত্বর থেকে আসামি ছিনতাই চেষ্টা

banglarmukh official