বাদ পড়েও ফিরে আসতে পারে বরিশাল বুলস। সে কি কথা! তা কিভাবে সম্ভব?
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল চেয়ারম্যান আফজালুর রহমান সিনহা যখন মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই বলে দিয়েছেন, ‘বরিশাল বুলস যেহেতু পাওনা পরিশোধ করতে পারেনি, তাই এবার তারা খেলার যোগ্যতা হারিয়েছে।’ তখন কিভাবে আবার বরিশাল বুলস বিপিএলে ফিরে আসতে পারে?
গভর্নিং কাউন্সিল চেয়ারম্যানের বিকেলের ঘোষণা বিপিএলে হঠাৎ অন্যমাত্রার সংযোজন ঘটিয়েছে। এতে করে এবারের বিপিএলে আট দলের একটি কমে সাত দল হয়েছে; কিন্তু বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সভায় নেয়া এমন সিদ্ধান্ত এবং চেয়ারম্যান আফজালুর রহমান সিনহার বক্তব্যের পরও বরিশাল বুলস ফিরে আসতে পারে।
অতিনাটকীয় ঘটনা ভাবার কোনই কারণ নেই। খোদ বরিশাল বুলস স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল আওয়াল চৌধুরী ভুলু নিজেই আশাবাদী তার দল এবারের বিপিএলে খেলবে। সেটা কিভাবে? ভুলু জানিয়েছেন, ‘আমরা দু-চার দিনের মধ্যে বিপিএলের সমুদয় পাওনা পরিশোধ করে দেব। আশা করছি তখন আমাদের খেলার অনুমতি দেয়া হবে।’
আব্দুল আওয়াল চৌধুরী ভুলু কথামত পূর্ব পাওনা শোধ করতে পারলে বরিশাল বুলস যে আবারো বিপিএলের পঞ্চম আসরে ফিরে আসতে পারে- তার আভাস আছে আফজালুর রহমান সিনহার কথাতেও।
আজ ঢাকা ক্লাবে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সভা শেষে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘আগামীতে পূর্ব পাওনা শোধ করতে পারলে আবার ফিরতে পারবে বরিশাল বুলস।’
কাজেই আব্দুল আওয়াল চৌধুরী ভুলু সে আলোকেই আশাবাদী। আগামীবার পাওনা শোধ করলে যদি ফিরে আসা যায়, তাহলে এবার সব অর্থ শোধ করে দিলে এবার কেন নয়?
এদিকে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল সভায় যত কঠিন সিদ্ধান্তই নেয়া হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত আসরের স্বার্থে খোদ আয়োজকরাও ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের সাথে আপোস রফা করে ফেলে। সেটা যে করে, তার প্রমাণ মিলেছে এই ক’দিন আগেও।
বরিশাল বুলসের গতবারের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের অধিনায়কত্ব নিয়ে নেতিবাচক কথাবার্তা বলে নিন্দিত-সমালোচিত হয়েছিলেন আব্দুল আওয়াল চৌধুরী ভুল। তিনি কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করেই পার পেয়ে গেছেন। তাকে শো‘কজ করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে বড় ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথাও শোনা গিয়েছিল; কিন্তু পরে কিছুই হয়নি।
আর সবশেষ কথা বিপিএল শুরু থেকেই নিয়ম ও আাইন ভঙ্গের আসর। গত আসরেও নিয়ম ভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স আর ঢাকা ডাইনামাইটসের মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচ বৃষ্টিতে ধুয়ে মুছে যায়। নিয়ম অনুযায়ী পয়েন্ট ভাগ করে দেয়াও হয়।
কিন্তু হঠাৎ আবার সেই প্রাকৃতিক কারণে পরিত্যক্ত পয়েন্ট বন্টনের ম্যাচ আবার নতুন করে আয়োজন করা হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, নিয়ম ভঙ্গের এটা নজিরবিহীন ঘটনা।
কাজেই দেশের ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের উন্নতি ও উন্নয়নে কার্যকর ভুমিকা রাখলেও বিপিএলে অনিয়ম ও নিয়ম ভাঙ্গার রেকর্ড আছে। এ আসর যেন সত্যিকার ‘টি-টোয়েন্টি’ আসর; যার শেষ কথা বলে কিছু নেই। কাজেই বরিশাল বুলস বাদ পড়েও এবার আবার ফিরে আসতে পারে!
ক্রিকেট বোর্ডের ভেতরকার খবর, যেহেতু আবদুল আওয়াল চৌধুরী ভুলু বর্তমান বোর্ড পরিচালক এবং যে ক্লাবের সর্বাধিক পরিচালক বিসিবিতে- সেই জনপ্রিয় আবাহনীর সঙ্গেও ভুলুর সম্পর্ক নিবিড়। আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে নব্বই দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত- প্রায় এক দশক আবাহনীর ক্রিকেট ম্যানেজার ছিলেন তিনি। বর্তমান বোর্ডে তাকে আবাহনী লবির লোক বলেই গণ্য করা হয়। কাজেই তাকে একদম ফেলে দেয়া বর্তমান বোর্ডের পক্ষেও একরকম কঠিন ব্যাপার হয়ে থাকবে।
সুতরাং, পাওনা পরিশোধ করে দেয়ার পর অনেক কিছুর মারপ্যঁচে এবারই বরিশাল বিপিএলে ফিরে এলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।