ক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের দাবি মুখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এক নির্দেশনায় আজ (বৃহস্পতিবার) দেশের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম পরেই বৃষ্টিতে ভিজে সকাল থেকে সড়কে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর উত্তরা জসিম উদ্দিন থেকে হাউস বিল্ডিং পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে উত্তরা ইউনিভার্সিটি, মাইলস্টোন কলেজ, স্কলাস্টিকা, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটিসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। এতে উত্তরা থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এ সময় লাব্বাইকসহ বেশ কয়েকটি বাসের চালকদের লাইসেন্স যাচাই করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে পুলিশের দুজন কর্মকর্তাকেও বাস চালকের লাইসেন্স যাচাই করতে দেখা যায়।
রাজধানীর মগবাজার চৌরাস্তায় সড়ক অবরোধ করেছে আদ-দ্বীন ও ড. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় রমনা-ইস্কাটন, মগবাজার ওয়্যারলেস এবং মগবাজার রেলগেট এলাকায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সকাল থেকে রাজধানীর শান্তিনগর মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল এবং সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ধানমন্ডি-২৭ নম্বর সড়কে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ আশপাশের স্কুলের শিক্ষার্থীরাও সড়কে অবস্থান নিয়েছে। রাজধানীর সাইন্সল্যাব ওভারব্রিজের নীচে সিটি কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা কলেজ, গভ. ল্যাবরেটরি এবং ধানমন্ডি আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়েছেন। নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় অনেক অভিভাবককেও সড়কের পাশে বসে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
রাজধানীর অদূরে সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছে এনাম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। যাত্রাবাড়ীতে দনিয়া কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে যানবাহনের কাগজপত্র ও চালকের লাইসেন্স যাচাই করছেন শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর ফার্মগেটেও একই অবস্থা। ফার্মগেটের সড়কে অবস্থান নিয়েছে সরকারি বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সালমান নূর নামে উত্তরার একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থী বলেন, ইউনিফর্ম পড়ে আন্দোলনে আসায় আমাদের অনেক শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) দিয়ে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা আন্দোলন করবই। যদি বেঁচেই না থাকি তাহলে স্কুলের সার্টিফিকেট দিয়ে কী করব।
সোয়েব নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের জন্য শুধু শিশুরা রাস্তায় কেন? তাদের অভিভাবকদের, বড়ভাইদের কি নিরাপত্তার ঘাটতি নেই? তাদের সহযোগিতার জন্য, তাদের অভিভাবক হিসেবে আমরা রাস্তায় নেমেছি।
গত রোববার (২৯ জুলাই) রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাস স্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন শিক্ষার্থী।
মারা যাওয়া দুই শিক্ষার্থী হলেন- শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।
দুর্ঘটনার পর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন স্থানে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। আজ (বৃহস্পতিবার) পঞ্চম দিনের মতো আবারও সড়কে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।