ফের বাড়তে শুরু করেছে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি। এরই মধ্যে ৪টি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া বিপদসীমা ছুঁয়েছে আরও একটি নদীর পানি। এর ফলে উপকূলের নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে তলিয়েছে। ঘর বন্দি হয়ে পড়ছে উপকূলের হাজারো মানুষ।
এদিকে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আগামী দুই-তিন দিনে নদ-নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। বুধবার পূর্ণিমা। তার ওপর বৈরী আবহাওয়ার সাথে বাতাসের গতিবেগ বেশি থাকায় নদীর পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি বিজ্ঞান বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ১৯টি নদ-নদীর পানির পরিমাপ করেছেন তারা। এর মধ্যে ৫টি নদীর ৮টি পয়েন্টের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।
এর মধ্যে বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিষখালী নদীর পানি বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ভোলার দৌলতখান উপজেলার সুরমা-মেঘনা নদীর পানি ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর এ পয়েন্টের বিপদসীমা ২.৭৫ মিটার অতিক্রম করে ৩.৩৪ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
একই উপজেলার তজুমদ্দিন উপজেলাধীন সুরমা-মেঘনা নদীর পানি ৮৭ সেন্টিমিটার বেড়ে ৩ দশমিক ০৯ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বরিশালের হিজলা উপজেলার ধর্মগঞ্জ নদীর বিপদসীমা ২.৫০ মিটার। সেখানে মঙ্গলবার ২৪ সেন্টিমিটার বেড়ে ২.৭৪ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বরগুনা সদরে বিষখালী নদীর পানির বিপদসীমা ১.৯৭ মিটার। সেখানে ৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ২.০১ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নদীর পানি। এছাড়া পাথরঘাটা উপজেলাধীন বিষখালী নদীর বিপদসীমা ১.৮৫ মিটার। সেখানে ২৪ সেন্টিমিটার বেড়ে ২.০৯ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পানির বিপদসীমা ১.৪৯ মিটার। সেখানে ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১.৬০ মিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া বিপদসীমা ছুঁয়েছে উমেদপুরের কচা নদীর পানি। এই নদীর বিপদসীমা ১.৬৫ মিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি বিজ্ঞান বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম জানিয়েছেন, ‘মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ৫টি নদীর ৮টি পয়েন্টের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। এছাড়া কীর্তনখোলাসহ অন্যান্য নদীর পানিও কিছুটা বাড়লেও বিপদসীমা থেকে দূরত্ব রয়েছে।
অপরদিকে, বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। এজন্য পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর এবং বরিশাল নদী বন্দরকে ১ নম্বর সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে’।
তিনি বলেন, ‘লঘুচাপের কারণে মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে পৌনে ৩টা পর্যন্ত বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিলো ২৮ নটিক্যাল মাইল। এছাড়া এদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৭.২ মিলিমিটার। এর আগে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় সর্বোচ্চ ৩৬ মিলিমিটার।