প্রায় সপ্তাহব্যাপী টানা বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি এলাকার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সড়কের বিভিন্ন অংশ ডুবে যাওয়ায় বাঘাইছড়ি-সাজেক-দীঘিনালা-খাগড়াছড়ি সড়কসহ অভ্যন্তরীণ যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পর্যটন এলাকা সাজেক ঘুরতে যাওয়া অন্তত দুই শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন বলে জানা গেছে।
বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে নিচু এলাকার বহু পরিবারের বাড়িঘর ও ফসলি জমি। পানিবন্দি হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন বহু লোকজন।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, অতি বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঘাইছড়ি উপজেলা সদর, মাস্টারপাড়া, বটতলী, রূপকারি, বারবিন্দু ঘাট, এফব্লক, পুরাতন মারিশ্যা, পশ্চিম মুসলিম ব্লক, কলেজপাড়া, মাদ্রাসাপাড়া, হাজীপাড়া, বাবুপাড়া, লাল্যাঘোনাসহ বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বিস্তীর্ণ ফসলি, স্থাপনা ও বহু পরিবারের বাড়িঘরে পানি ওঠে ডুবে গেছে। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। ডুবে গেছে উপজেলার সাজেক-বাঘাইহাট সড়কের একাধিক স্থানের নিচু অংশ। মঙ্গলবার বিকাল থেকে সড়কটিতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে উপজেলার সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে দুই শতাধিক পর্যটক আটকে পড়েছেন।
এছাড়া পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার নিম্নাঞ্চল। এতে বিভিন্ন এলাকার সড়ক ডুবে দীঘিনালার সঙ্গে রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক, বাঘাইছড়ি এবং লংগদুর সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
মঙ্গলবার ১৭টি জিপ, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলযোগে দুই শতাধিক পর্যটক সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে যান। এদিন দুপুরে ভারি বৃষ্টি হলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঘাইহাট-সাজেক সড়কের বাঘাইহাটবাজার ও মাচালংবাজার এলাকায় সড়ক ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে সাজেক ঘুরতে পর্যটকরা আটকা পড়েন এবং বুধবার কোনো পর্যটক সাজেকে যেতে পারেননি বলে জানান স্থানীয়রা।
সাজেক পর্যটন কেন্দ্রের হিলভিউ কটেজের মালিক ইন্দ্রজিৎ চাকমা বলেন, সাজেক-বাঘাইহাট সড়কে পানি ওঠায় সাজেকে বেড়াতে যাওয়া দুই শতাধিক পর্যটক খাগড়াছড়িতে ফিরতে পারেননি। সড়ক থেকে পানি না সরলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে না।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার বলেন, সাজেকে আটকে পড়া পর্যটকদের খবর নেওয়া হচ্ছে। সড়ক থেকে পানি কমে গেলে তাদের ফিরে যেতে সহায়তা করা হবে। সাজেক-বাঘাইহাট সড়কের মাচালং ও বাঘাইহাটবাজার এলাকায় সড়ক ডুবে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সাজেক ঘুরতে যাওয়া প্রায় আড়াইশ পর্যটক আটকে পড়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। দুর্গত লোকজনের জন্য উপজেলায় ৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্গত লোকজনদের সহায়তায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।