31 C
Dhaka
এপ্রিল ২৯, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অপরাধ জেলার সংবাদ ঢাকা বরিশাল

নিমজ্জিত নৌযানে ভয়াবহ ঝুঁকিতে ঢাকা-বরিশাল নৌপথ

দেশের বিভিন্ন নৌপথে একের পর এক দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে নৌযান নিমজ্জিত হলেও তা উদ্ধারে তেমন উদ্যোগ নেই। মূলত নিমজ্জিত নৌযান উদ্ধারে শক্তিশালী নৌযানের অভাবেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আর নিমজ্জিত নৌযানের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে নৌপথ। যাত্রীবাহী লঞ্চ, ট্রলার, পণ্যবাহী কার্গো ও ফেরিডুবির দুর্ঘটনার পর তা নদীর তলদেশেই ধ্বংস হচ্ছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে নৌপথে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটলেও নিমজ্জিত নৌযান উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না

নাব্যসংকট, অদক্ষ চালক, লঞ্চে আধুনিক প্রযুক্তির অভাব, নৌ-মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মনিটরিং সংকটের কারণে নৌপথে দুর্ভোগের সীমা নেই। তার ওপর ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের মেঘনা নদীতে দুর্ঘটনায় নিমজ্জিত কার্গো, বাল্কহেড উদ্ধার না হওয়ায় দিনে দিনে এই ঝুঁকি আরও বাড়ছে। নৌ-মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, নিমজ্জিত বিভিন্ন পণ্যবাহী নৌযানের ওজন ১ হাজার ২০০ টনের ওপরে হওয়ায় ২৫০ টন ধারণক্ষমতার বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজের পক্ষে তা উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। গত ২৫ মে বালুবাহী বাল্কহেড এমভি সিয়াম মেঘনা নদীর মিয়ারচর এলাকায় নিমজ্জিত হলেও গত তিন মাসে তা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গত ৬ আগস্ট মেঘনা নদীর গজারিয়ায় দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে দুটি নৌযান নিমজ্জিত হয়। গজারিয়ায় সারবোঝাই এমভি টপশিপ কার্গো ও গোবিন্দপুরসংলগ্ন অপর একটি মালবাহী কার্গো নিমজ্জিত হয়। মেঘনা নদীতে এ তিনটি কার্গো প্রায় কাছাকাছি স্থানে নিমজ্জিত হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকি আরও বেড়েছে। বিশেষ করে মেঘনা নদীতে ডুবোচরের পাশাপাশি কার্গো নিমজ্জিত থাকায় নদীপথ সরু হয়ে গেছে। সূত্র জানায়, বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী নৌযান হামজা ও রুস্তম অনেক আগেই যৌবন হারিয়েছে। ওই দুটি জাহাজের ক্রেনের উত্তোলন ক্ষমতা ৬০ টন।

হামজা সংগ্রহ করা হয় ১৯৬৫ সালে, যা বর্তমানে আরিচা ফেরিঘাটে রয়েছে। রুস্তম সংগ্রহ করা হয় ১৯৮৪ সালে, যা বর্তমানে মাওয়া ফেরিঘাটে রয়েছে। দীর্ঘ ২৯ বছর পর ২০১৩ সালে কোরিয়া থেকে আমদানি করা হয় নির্ভীক ও প্রত্যয় নামে দুটি উদ্ধারকারী নৌযান। এ দুটির উত্তোলনক্ষমতা ২৫০ টন। প্রয়োজনের তুলনায় কম উত্তোলন ক্ষমতাসম্পন্ন হলেও নতুন দুটি উদ্ধারকারী নৌযান আশার সঞ্চার করেছিল। তবে উদ্ধার অভিযানে এ দুটি যানও সংশ্লিষ্টদের হতাশ করেছে। ৫০০ টন উদ্ধার ক্ষমতা হলেও বরিশালে অবস্থানরত নির্ভীক ও নারায়ণগঞ্জ অবস্থানরত প্রত্যয় পুরনো জলযান রুস্তম ও হামজার মতো একযোগে উদ্ধার অভিযান চালাতে পারে না।

সূত্র আরও জানায়, গভীর পানি ছাড়া নতুন এ দুটি উদ্ধারকারী ভারী জাহাজ চলতে পারে না। রুস্তম ও হামজা সাত-আট ফুট পানিতে চলাচল করতে পারলেও নির্ভীক ও প্রত্যয় চলাচলের জন্য এর দ্বিগুণ গভীরতা প্রয়োজন হয়। চলৎশক্তিহীন এ উদ্ধারকারী জাহাজ কোথাও দুর্ঘটনা ঘটলে টাগ বা অন্য জাহাজের সাহায্যে তাকে টেনে নিয়ে যেতে হয়। এতে জ্বালানির প্রয়োজন হয় প্রতি ঘণ্টায় ৩০০ লিটার। ভাটার সময় এর গতি আরও কমে যায়। ফলে মেঘনা, লক্ষ্মীপুরসহ চাঁদপুরের আনাচকানাচ কিংবা বরগুনার বিষখালী, খাতাচেড়া কিংবা আগুনমুখা নদীতে দুর্ঘটনা ঘটলে বরিশাল ও নারায়ণগঞ্জ থেকে উদ্ধারকারী নৌযানগুলোর অকুস্থলে পৌঁছতে দীর্ঘ সময় লেগে যায় যায়। তা ছাড়া দেশের বিশাল নৌপথ যখন নাব্যসংকটে রয়েছে, তখন গভীর জলে চলাচল উপযোগী প্রত্যয় ও নির্ভীক দুর্ঘটনাস্থলে কীভাবে পৌঁছাবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। জোয়ার-ভাটার হিসাব মিলিয়ে ওই দুটি ইউনিট দুঘর্টনাস্থলে পৌঁছালেও কাজ করতে পারে মাত্র একটি ইউনিট। এদিকে একাধিক লঞ্চ মাস্টার জানান, মিয়ারচর চ্যানেলে বাল্কহেড ডুবির ঘটনার পর বড় লঞ্চগুলোকে মেহেন্দিগঞ্জের কালীগঞ্জ রুট হয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে যেমন সময় বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে খরচও। কালীগঞ্জ রুটটি দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় চালকদের হিমশিম খেতে হয়। যেসব লঞ্চে পানি মাপার যন্ত্র (ইকোসাউন্ডার) নেই তারা বিপদে পড়ছে। আবার কালীগঞ্জ স্থানটি মেঘনার ডেঞ্জার জোন এলাকার মধ্যে। মিয়ারচর দিয়ে যেমন স্বাচ্ছন্দ্যে নৌযান চলাচল সম্ভব হতো, কালীগঞ্জে ঠিক তার উল্টো।

অন্যদিকে নিমজ্জিত নৌযান প্রসঙ্গে বরিশাল নৌ-সংরক্ষণ বিভাগের উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, নিমজ্জিত স্থান বয়া দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। যদিও বিগত ৬ বছরে একাধিক নৌযান নিমজ্জিত হলেও এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তদন্ত কমিটি গঠন ও পরবর্তী সময় উদ্ধার অভিযান পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এতে নিমজ্জিত নৌযানের অধিকাংশ পানির নিচেই ধ্বংস হয়ে যায়।

এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক আজমল হুদা সরকার মিঠু জানান, মিয়ারচরে নিমজ্জিত বাল্কহেড এমভি সিয়াম উদ্ধারে বিআইডব্লিউটিএ ৬০ লাখ টাকার উন্মুক্ত দরপত্র দিয়েছে। কিন্তু নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় তা উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।

সম্পর্কিত পোস্ট

সাতলায় বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে আ’লীগ নেতা মিজানকে অর্থের বিনিময়ে দলীয় সনদপত্র প্রদান করার অভিযোগ

banglarmukh official

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশের বসত ঘরে ভাংচুর

banglarmukh official

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার জানাজায় অংশ নিতে মাগুরায় মামুনুল-হাসনাত-সারজিস

banglarmukh official

বরিশালে দুর্ঘটনায় নিহত ২

banglarmukh official