প্রধান নেশা শিশু ধর্ষণ। একের পর ৫-১০ বছরের শিশুদের টার্গেট করে তাদের পিছু নিয়ে নানা প্রলোভনে আসক্ত করে সুযোগ বুঝে ধর্ষণ করে পালানোই যেন মহাসিন (৩৫) নামের এক ধর্ষকের প্রধান নেশা। সতের বছর আগে ১৮ বছর বয়সেই সে শিশু ধর্ষণ মামলায় জেলও খেটেছে একবার। তারপর আবার গত বছরের নভেম্বরে এবং এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে পৃথক স্থানে শিশুধর্ষণ করে। ধর্ষণের উদ্দেশ্যে সে বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করতে থাকা এবং তার পরিচয় কেউ যাতে চিহ্নিত না করতে পারে তার জন্য কৌশলে সে বিশেষ পন্থা অবলম্বন করতো।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার রঘুরামপুর গ্রামের আকমত আলি ওরফে আফতাব আলি শেখের ছেলে মহসিন। তবে বহু আগেই বাড়িঘর বিক্রি করে সে ওখান থেকে উধাও হয়। এমনই এক শিশু ধর্ষক অবশেষে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলো বুধবার রাতে। অনেক শিশুর অভিভাবকরা আত্মসম্মানের ভয়ে মামলা না করলেও ইতিমধ্যে ২ শিশুর অভিবাবকরা ধর্ষক মহসিন আলীর বিরুদ্ধে মামলা করে। ওই ২ শিশু ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি মহসিন আলি শেখকে (৩৫) বুধবার মধ্যরাত ৪টার দিকে গ্রেফতার করা হয়। মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় তার বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষণের ৪৩(২)১৮ ও ৫২(১১)১৭ নং দুইটি মামলা রয়েছে। অন্যান্য থানায়ও তল্লাশি দেওয়া হচ্ছে এ জাতীয় আরো মামলা তার বিরুদ্ধে থাকতে পারে এ আশংকায় বলে জানিয়েছেন সদর থানার ওসি মো: আলমগীর হোসোইন।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ইন্সপেক্টর(তদন্ত) গাজী মো. সালাউদ্দিন জানান, ২০০১ সালে শিশু ধর্ষণ মামলায় ৫ বছর জেল খেটে বের হয়েছে বলে মহসিন মৌখিকভাবে স্বীকার করে। তবে মামলাটির সত্যতা যাচাই বাছাই চলছে। আটকের রাতে ১২টার পর মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর এলাকায় ধর্ষণসহ চুরি, ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে ঘুরে বেড়াতে থাকাবস্থায় পুলিশ তাকে আটক করে। এর আগে সে আত্নগোপনে থাকার জন্য নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার ডেমরা এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ভাসমানভাবে অবস্থান করে আসছিলো। নির্দিষ্ট করে তার কোন ঠিকানা নেই। ধর্ষণ মামলা দুইটির সুরাহা না হওয়ায় পুলিশ সুপারের বিশেষ নির্দেশে মামলার তদন্তভার গ্রহন করেন তিনি। মহসিনকে একাধিকবার গ্রেফতার চেষ্টা করা হলেও সে পুলিশি ফাদ বুঝতে পেরে পালিয়ে যায়। ৬ মাস ধরে বিশেষ অভিযান পরিচালনার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, ৫-১০ বছরের শিশুদের ধর্ষণের উদ্দেশ্যে সে বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করতো। তার পরিচয় কেউ যাতে চিহ্নিত না করতে পারে তার জন্য বিশেষ পন্থা অবলম্বন করতো। টঙ্গিবাড়ী উপজেলার রঘুরামপুর এলাকার আকমত আলি ওরফে আফতাব আলি শেখের ছেলে মহসিন। তবে দীর্ঘদিন আগে বাড়িঘর বিক্রি করে চলে যায়।
এদিকে, জোরপূর্বক ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মো. হৃদয়(৩৫) নামের অপর এক ব্যাক্তিকে আটক করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের ডিঙ্গাভাঙ্গা এলাকা থেকে। হৃদয় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিল এবং বরগুনা জেলার আমতলি থানার ত্রিপুরা গ্রামের সেলিম মৃধার ছেলে। ভোর ৬টার দিকে তাকে ডিঙ্গাভাঙ্গা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।