বরিশাল নগরের কাশিপুরে প্লাষ্টিক কারখানার এক নারী শ্রমিককে মেশিনে ফেলে হত্যা করার চেষ্টা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আহতের নাম প্রিয়া আক্তার(১৯)।
প্রিয়া কাশিপুর বাঘিয়া ঝাউতলা এলাকায় অবস্থিত এ.আর.টি.পেট.ট্রেডিং রিসাইকেল কারখানার শ্রমিক ছিলেন।এ ঘটনায় বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ওই নারী শ্রমিকের গোপনে চিকিৎসা চলছে
এলাকাবাসী জানায়, বরিশাল নগরের হাটখোলা এলাকার ভাড়াটিয়া কামাল হাওলাদারের মেয়ে প্রিয়া আক্তার পরিবারের সাথে বসবাস করতেন। বৃহস্পতিবার (২৬সেপ্টেম্বর) কাজে যোগ দেয়ার জন্য প্রিয়া আক্তার ওই কারখানায় যায়। প্রতিদিনের মত প্লাষ্টিক কারখানায় নিজের মত করে কাজ করছিলেন প্রিয়া আক্তার। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কতিপয় শ্রমিক তাকে জোরপূর্বক মুখ চেপে ধরে কারখানার এক কোণে নিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা করে। এ সময় প্রিয়া বাধা দিয়ে চিৎকার শুরু করেন। এতে শ্রমিকরা তাকে বোতল কাটা চলন্ত মেশিনের মধ্যে মাথা চেপে ধরে। মুমূর্ষু অবস্থায় এলাকাবাসী উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানতে চায় প্রিয়ার কীভাবে এমন ঘটনা ঘটেছে ? সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে বলা হয়েছে প্রিয়া আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে,প্রিয়া আক্তারের মাথার খুলী’র চামড়াসহ সমস্ত চুল উঠে গেছে। এসময় কারখানার আরেক নারী শ্রমিক নাসিমা বেগম ও তার স্বামী আনোয়ার হোসেন মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বলেন,“প্রিয়া আমাদের মেয়ে।সে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে। তাছাড়া এসব কথা বলে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা চালায় নাসিমা ও আনোয়ার”।
শনিবার ওই প্লাষ্টিক কারখানায় গিয়ে দেখা যায় তা বন্ধ রয়েছে। পরে স্থানীয়রা জানিয়েছেন এ ঘটনার পর থেকে কারখানাটি ২দিন বন্ধ রয়েছে।
আহত প্রিয়ার প্রকৃত বাবা কামাল হাওলাদার জানান,“সংসারের অভাবের তাড়নায় প্রিয়া প্লাষ্টিক কারখানায় কাজ করত ।কারখানা মালিক আমাকে মোবাইল করে জানিয়েছেন মেশিন পরিস্কার করতে গিয়ে প্রিয়া দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে”।
এসময় প্রিয়া আক্তারের মা নাসিমা বেগম বলেন,“কারখানা মালিক আমার মেয়ের চিকিৎসার সকল খরচ বহন করছে।আমরা কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারবো না”। তবে প্রিয়া মুমূর্ষু অবস্থায় থাকার কারনে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে সে কোনরকম কথা বলতে পারেনি।
বরিশাল নগরের পলাশপুর এ.করীম আইডিয়াল কলেজ এলাকার বাসিন্দা ও কাশিপুর বাঘিয়া ঝাউতলা এলাকায় অবস্থিত এ.আর.টি.পেট.ট্রেডিং রিসাইকেল কারখানার মালিক কবির হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাতে কথা হলে তিনি বলেন, মেশিন পরিস্কার করতে গিয়ে প্রিয়া আহত হয়েছে।
বিষয়টি দুর্ঘটনা হলে কারখানা কেন বন্ধ রয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে কবির বলেন, শ্রমিকরা ভয় পেয়েছে, যে কারনে কারখানা বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া প্লাষ্টিক কারখানার কোন বৈধ কাজপত্র আছে কিনা তারও সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। পরে টাকার বিনিময়ে দু’দফা এ প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালিয়েছে কারখানা মালিক কবির।
বিমান বন্দর থানার ওসি জাহিদ-বিন-আলম বলেন, বিষয়টি ভালভাবে খতিয়ে দেখা হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।