23 C
Dhaka
জানুয়ারি ৩১, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অপরাধ খুলনা জেলার সংবাদ

কাজে ধীরগতিতে বাড়ছে দুর্ভোগ

‘খুলনা প্রতিনিধি//জান্নাতুল ফেরদৌস:

মহানগরীর কেডিএ অ্যাভিনিউয়ের দুই পাশে ড্রেন পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করছে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)। এজন্য গত ২২ জুলাই থেকে পুরাতন ড্রেন ও ফুটপাত ভাঙ্গার কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে সড়কটির পশ্চিমপাশের সম্পূর্ণ এবং পূর্বপাশে কিছু অংশের ফুটপাত ও বিদ্যমান ড্রেন পুরোপুরি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এদিকে পুরাতন ড্রেন ও ফুটপাত ভাঙলেও নতুন ড্রেন নির্মাণ কাজ চলছে ধীরগতিতে। ফলে ভাঙ্গা ফুটপাত ও ড্রেনের ওপর কাঠ-বাঁশের সিঁড়ি তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। এছাড়া অসতর্কভাবে খননযন্ত্র দিয়ে ড্রেনের মাটি খুঁড়তে গিয়ে কয়েকটি প্লটের সীমানা প্রাচীর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বর্ধিতাংশ ধসে পড়েছে। সড়কেও দেখা দিয়েছে ফাটল। ঝুঁকির মুখে পড়েছে বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। স্থানীয়রা জানান, কেডিএ অ্যাভিনিউয়ের দুই পাশে বাণিজ্যিক এলাকা। সেখানে ৪টি বড় হাসপাতাল, দেড় ডজন বেসরকারি ব্যাংকের শাখা, সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে অর্ধশত অফিস এবং শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রায় দেড় মাস আগে স্কেভেটর দিয়ে ড্রেন ও আশপাশের স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলে ঠিকাদার। এর প্রায় একমাস পরে কাজ শুরু হয়েছে। ড্রেন নির্মাণের জন্য গর্ত খুঁড়তে গিয়ে মানুষের ব্যক্তিগত স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া কাজ চলছে খুবই ধীরগতিতে। বর্ষার মধ্যে কাজ শুরু করা এবং এক মাস আগে ড্রেন ও ফুটপাত ভেঙ্গে ফেলায় অফিস, হাসপাতাল, ব্যাংক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন মানুষ। কেসিসি সূত্রে জানা গেছে, ‘মিউনিসিপ্যাল গভর্নেন্স অ্যান্ড সার্ভিসেস (এমজিএস) প্রকল্পের আওতায় নগরীর ভেতরে ৪টি সড়ক সংস্কার ও ড্রেন পুনর্নির্মাণের জন্য ৩৫ কোটি টাকা অর্থ সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এমজিএস প্রকল্পের অধীনেই নগরীর কেডিএ অ্যাভিনিউ এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের আবু আহমেদ সড়কের রাস্তা, ড্রেন ও ফুটপাত পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। এই প্যাকেজের মোট ব্যয় হচ্ছে ১৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। সূত্রটি জানায়, এই প্যকেজের আওতায় নগরীর শিববাড়ি মোড় থেকে রয়েল মোড় পর্যন্ত ১ দশমিক ৮৬ কিলোমিটার সড়কের দুইপাশের ড্রেন নতুন করে নির্মাণ এবং সড়কটি কার্পেটিং করার কথা রয়েছে। প্যাকেজের এই অংশে ব্যয় ধরা আছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। গত ২৭ জুন প্রকল্প এলাকা ও কাজ ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দিয়েছে কেসিসি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ড্রেন পুনর্নির্মাণ করতে ২২ জুলাই থেকে কেডিএ অ্যাভিনিউয়ের দুই পাশের বর্তমান ড্রেন ভাঙার কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। স্কেভেটরসহ বিভিন্ন যন্ত্র দিয়ে বর্তমানে ড্রেন ও ফুটপাতের ওপরের স্লাব ভেঙ্গে ফেলা হয়। পরে ড্রেনও ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এতে সড়ক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, স্কেভেটর দিয়ে ফুটপাত উপড়ে ফেলায় ব্যাংক, অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রতিষ্ঠানগুলো কাঠের মাচা, লোহার সিঁড়ি তৈরি করে চলাচল করছে। ড্রেনের পানি সড়কে চলে আসায় কাদাপানিতে নাকাল হচ্ছেন পথচারীরা। গতকাল রোববার বিকেলেও ট্রিবিউন ও প্রবাহ ভবনের সামনে ড্রেনের ময়লা পানি জমে ছিলো। ইতোমধ্যে নতুন ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। প্রথমে বর্তমান ড্রেনের স্থলে স্কেভেটর দিয়ে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার সড়কের ভারতীয় ভিসা আবেদন গ্রহণ কেন্দ্রের পাশে স্কেভেটর দিয়ে গর্ত খোঁড়া হয়। এতে গণস্বাস্থ্য সংস্থার দুটি প্লটের প্রায় ৯০ ফুট সীমানা প্রাচীর ধসে পড়ে। এরপাশে একটি গাড়ি বিক্রির শো-রুমেরও ফুটপাত ড্রেনে ধসে পড়েছে। মূল সড়কেও বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে। ধস ঠেকাতে নিজ নিজ স্থাপনায় বাঁশ ও গাছ দিয়ে প্রতিরোধক তৈরি করছেন অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা। সূত্রটি জানায়, প্রকল্পের দরপত্রে নির্মাণ কাজে সাবধানতা অবলম্বন, রাস্তার পাশের ব্যক্তিগত স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং সড়ক বন্ধ করে নির্মাণ কাজ না করার শর্ত ছিলো। কিন্তু কাজ শুরুর পর এসব শর্ত মানা হচ্ছে না। ড্রেনের নির্মাণ কাজ পেয়েছে মেসার্স জিয়াউল ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তবে মাঠ পর্যায়ে কাজটি বাস্তবায়নে নিয়েজিত ঠিকাদার পূর্বাঞ্চলকে বলেন, ড্রেন নির্মাণের জন্য ৭ ফুট গর্ত খুঁড়তে হচ্ছে। ড্রেনের আশপাশের যে সব স্থাপনা রয়েছে, সেগুলোর ভিত তিন ফুটেরও কম। গণস্বাস্থ্য সংস্থার সীমানা প্রাচীরটি অল্প সময়ের জন্য হালকা করে বানানো। এজন্য সেটি ধসে পড়েছে। তিনি বলেন, কাজ শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে কাজ করতে পারছি না। আমাদের শ্রমিকরা অলস বসে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। বৃষ্টি কমে গেলে কাজের গতি আরও বাড়বে। ড্রেন নির্মাণ কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা কেসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী-৩ মোঃ মশিউজ্জামান খান বলেন, গর্ত খোঁড়া এবং নির্মাণ কাজে সাবধানতা অবলম্বন করার কথা কয়েকবার ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। তাদের আবারও সাবধান করা হচ্ছে এবং দ্রুত কাজ করতে বলা হবে। সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক পূর্বাঞ্চলকে বলেন, যেভাবে কাজ করুক আগামী মার্চের মধ্যে এই পুরো কাজ তাদের শেষ করতে হবে। না হলে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে ইজারা বহির্ভূতভাবে শেরপুর সীমান্তে বালু উত্তোলনের মহোৎসব

banglarmukh official

খু‌ড়ি‌য়ে খু‌ড়ি‌য়ে চল‌ছে শেরপু‌রের তৃতীয় লি‌ঙ্গের আবাসন কেন্দ্রটি

banglarmukh official

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন

banglarmukh official

জাহাজে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় হত্যা করা হয় ৭ জনকে

banglarmukh official

স্বামীকে ঢাকায় পাঠিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ, আদম বেপারি গ্রেফতার

banglarmukh official

টঙ্গীতে জোড় ইজতেমার আখেরি মোনাজাত কাল

banglarmukh official