বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক, রাজউক/সিডিএ/কেডিএ এর সদস্য ও বুয়েট এর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত রিভিউ প্যানেল ১৬৩টি কারখানাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২২তম অধিবেশনে সোমবার প্রশ্নোত্তর পর্বে মো. মামুনুর রশিদ কিরণের (নোয়াখালি-৩) প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ ১৬৩টি কারখানার মধ্যে ইতোমধ্যে ৩৯টি কারখানা বন্ধ ও ৪৭টি কারখানাকে আংশিক বন্ধ করা হয়েছে। বাকি কারখানাগুলোর সংস্কার কাজ চলছে।
বর্তমানে একর্ড এর সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতির হার ৮৬ শতাংশ এবং এলায়েন্সের হার ৯০ শতাংশ বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর ইউরোপীয় ক্রেতা সংগঠন একর্ড, উত্তর আমেরিকার ক্রেতা সংগঠন এলায়েন্স ও জাতীয় উদ্যোগের আওতায় তিন হাজার ৭৮০টি কারখানার এসেসমেন্ট সম্পন্ন করেছে।
রফতানির তুলনায় আমদানি তিন গুণ দাবি নাকচ করলেন বাণিজ্যমন্ত্রী :
সরকার দলীয় সদস্য সামশুল আলম চৌধুরীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমাদের অর্থনীতি চমৎকার গতিতে এগুচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের রফতানি ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
রফতানির তুলনায় আমদানি তিন গুণ বেশী এমন দাবি নাকচ করে দিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, কথাটি সত্য নয়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশের আমদানির পরিমাণ ছিল ৫৮ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং রফতানির পরিমাণ ছিল ৩৬ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। উক্ত অর্থবছরে আমদানিতে রফতানির অবদান ছিল ৬৯ দশমিক ২৫ ভাগ।
তিনি আরও বলেন- চীন, ভারত ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আমাদের বড় বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমরা প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার রফতানি করি, কিন্তু ওই দেশটি আমাদের দেশে এক বিলিয়ন ডলারও রফতানি করতে পারে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমরা প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার রফতানি করি, সেক্ষেত্রে তারা আমাদের দেশে এক বিলিয়ন ডলারও রফতানি করতে পারে না। সে কারণে বাণিজ্য ঘাটতি থাকলেই যে খারাপ এটা বলা যাবে না। পাশ্ববর্তী দেশ হওয়ার কারণে চীন ও ভারত থেকে বেশি পণ্যে আমদানি হয়। কিন্তু এখন চীনে তৈরি পোশাকসহ অনেক কিছু রফতানি করি।
মেগাপ্রকল্পের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে :
সরকারি দলের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভোক্তার সক্ষমতা বাড়ার কারণে ভোগ্যপণ্যের আমদানি বেড়েছে। খাদ্যশস্য আমদানি ও সরকারের অগ্রাধিকারভুক্ত মেগাপ্রকল্পের কারণে দেশে আমদানি ব্যয় বেড়েছে।
তিনি বলেন, বাণিজ্যঘাটতি বাড়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। গত বছর বন্যায় বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় ঘাটতিপূরণে বিপুল পরিমাণে খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয়েছে। সরকারের বড় বড় কয়েকটি প্রকল্প, বিশেষ করে পদ্মাসেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প ও পায়রা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য যন্ত্রপাতি ও প্লান্ট আমদানির কারণে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে।
২৩ সেপ্টেম্বর ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে আসছেন :
নবী নেওয়াজের (ঝিনাইদহ-৩) প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানান, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা দুই দেশের পণ্যে বিক্রির উদ্যোগ হিসেবে বর্ডার হাট বসানো হয়। সরকার আরও কয়েকটি জায়গায় বর্ডার হাট বসানোর পরিকল্পনা করছে। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে আসবেন। ওই সফরেই বর্ডার হাটের বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।