এপ্রিল ২০, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অপরাধ আইটি টেক জেলার সংবাদ প্রশাসন

ডিসির পর এবার ‘ওসির আপত্তিকর ভিডিও’

অনলাইন ডেস্ক ::

জামালপুরের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নারী কেলেঙ্কারির ঘটনার পর এবার কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শামা মো. ইকবাল হায়াতের সঙ্গে এক নারীর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও নিয়ে তোলপাড় চলছে। তবে ওসি আবু শামা মো. ইকবাল হায়াতের দাবি- এটি আসল ছবি নয়, কম্পিউটারে এডিট করে তার ছবির মতো করা হয়েছে।

এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ দুইজনকে আসামি করে সোমবার রাতে কটিয়াদী মডেল থানায় জিডিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। মামলা দায়েরের পর রাতেই মামলার প্রধান আসামি হিমেল এবং কটিয়াদী প্রেসক্লাবের সভাপতি ও বাংলা টিভির কটিয়াদী প্রতিনিধি সৈয়দ মুরসালিন দারাশিকোকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে রাতেই মুচলেকা নিয়ে সাংবাদিক দারাশিকোকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।

মামলায় ওই নারী উল্লেখ করেন, তার ও কটিয়াদী মডেল থানার ওসির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে আপত্তিকর ছবিতে তাদের মুখমণ্ডল লাগানো হয়েছে। তবে মামলার এজাহারে ভিডিওর কথা উল্লেখ করা হয়নি।

এদিকে থানার ওসির সঙ্গে ওই নারীর ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। নানাজনের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ছড়িয়ে পড়েছে এ অশ্লীল ভিডিও। এ ব্যাপারে কটিয়াদী মডেল থানার ওসি একটি জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, কটিয়াদী পৌর এলাকার ওই নারীর স্বামী দেশের বাইরে থাকেন। একই এলাকার হিমেল নামে এক যুবকের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। হিমেলের পরিবারের দাবি, হিমেলের কাছ থেকে ওই নারী মোটা অংকের টাকা ধার নেন। ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হলে হিমেল তার পাওনা টাকা আদায়ের জন্য কটিয়াদী থানা পুলিশের সাহায্য চায়। কটিয়াদী মডেল থানার ওসি আবুশামা মো. ইকবাল হায়াত ওই নারীকে থানায় ডেকে এ নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু হিমেল টাকা ফেরত পায়নি।

তবে ওসির দাবি- থানায় বসে টাকার বিষয়টি ফায়সালা করে দেয়া হয়েছিল। এ ঘটনার কিছুদিন পর ওই নারীর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হয় বিভিন্ন মাধ্যমে।

এ ঘটনায় ওই নারী গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে কটিয়াদী মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। মামলায় কটিয়াদী পৌর এলাকার আসাদ মিয়ার ছেলে হিমেল ও সৈয়দ সামছুদ্দোহার ছেলে কটিয়াদী প্রেসক্লাবের সভাপতি সৈয়দ মুরছালিন দারাশিকোর নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে হিমেলের সঙ্গে ওই নারীর সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত হিমেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। হিমেল গোপনে তার মোবাইল ফোন থেকে স্বামীর সঙ্গে মেলামেশার কয়েকটি ছবি নিজের মোবাইলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সম্পর্ক করতে রাজি না হওয়ায় ২০১৭ সালের শেষের দিকে সাংবাদিক দারাশিকোর সহযোগিতায় হিমেল তার নগ্ন ছবি বিভিন্ন মোবাইলে দিয়ে ভাইরাল করে দেয়।

গত ২৯ আগস্ট হিমেল তার মোবাইলের ইমু আইডি থেকে ওই নারীর এক দেবরের মোবাইলে এক পুরুষের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দুটি ছবি পাঠায়। ওই নারীর দাবি ছবির মুখমণ্ডল তার হলেও শরীর অন্য কারও। এতে বলা হয়, গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রিয়া সুলতানা নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে আমাকেসহ ওসি সাহেবের নামে বিভিন্ন অপবাদ ছড়ানো হয়। আসামিরা আমার ছবি বিকৃত করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন ও আমার মর্যাদা ক্ষুণ্ন করছে। ওসি সাহেব একজন সরকারি কর্মচারী হওয়ায় তার সুনামও ক্ষুণ্ন করেছে।’

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কটিয়াদী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শামা মো. ইকবাল হায়াত জানান, এ ঘটনায় একজন নারী বাদী হয়ে দুইজনের নামে থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ মামলার প্রধান আসামি হিমেলকে গ্রেফতার করেছে। তাকে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, হিমেলের সঙ্গে ওই নারীর দুই বছর সম্পর্ক ছিল। সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাওয়ায় সে তার ছবি বিকৃত করে ছড়িয়েছে।

ওই নারীর সঙ্গে থাকা পুরুষের ছবিটি তার নয় উল্লেখ করে ওসি বলেন, আমাকে এসবের সঙ্গে কেন জাড়ানো হচ্ছে। এর পেছনে কারা কাজ করছে সেটি তদন্তের পরই জানা যাবে।

মামলার দ্বিতীয় আসামি সাংবাদিক সৈয়দ মুরছালিন দারাশিকোকে রাতে বাড়ি থেকে আটক করে এনে আবার থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হলো কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি আবু শামা মো. ইকবাল হায়াত বলেন, আসলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কোনো আসামি অপরাধের সঙ্গে জড়িত কি-না সেটা নিশ্চিত হয়েই তাকে গ্রেফতার করতে হয়। সাংবাদিক দারাশিকোকে গ্রেফতার করা হয়নি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। তদন্তের পর দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে যেহেতু ওসির বিষয় নিয়ে কিছুটা অস্পষ্টতা আছে তাই বিষয়টি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (ক্রাইম) তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার জানাজায় অংশ নিতে মাগুরায় মামুনুল-হাসনাত-সারজিস

banglarmukh official

অটোরিকশায় ছাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ, ভিডিও ভাইরাল

banglarmukh official

বগুড়ায় স্কুলছাত্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যা

banglarmukh official

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার নির্দেশ হাইকোর্টের

banglarmukh official

বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার শিশু, ভগ্নিপতি ও শ্বশুর আটক

banglarmukh official