পবিপ্রবি প্রতিনিধি//মো. ইমরান হোসেন:
সুপারি ও নারকেলগাছে ক্ষতিকর পোকা শনাক্ত করলেন গবেষকরা পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলায় সুপারি ও নারকেলগাছে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রজাতির ব্যাগওয়ার্ম শনাক্ত করেছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ও অধ্যাপক ড. এস এম হেমায়েত জাহানের নেতৃত্বে কয়েকজন গবেষক নতুন প্রজাতির ক্ষতিকারক মথ নিয়ে গবেষণা করেন। তাঁদের গবেষণাপত্রটি এ বছরের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইনোভেটিভ রিসার্চে’ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাপত্র থেকে জানা যায়, লেপিডোপটেরা বর্গের সিকিডি পরিবারে এখন পর্যন্ত প্রায় এক হাজার ৩৫০টি প্রজাতির ক্ষতিকারক ব্যাগওয়ার্ম রয়েছে। এদের মধ্যে মাহাসিনা করবেটি (Mahasena corbetti) প্রজাতির ব্যাগওয়ার্মটি মারাত্মক ক্ষতিকর। এ প্রজাতির পোকা শুধু অর্থকরী ফসল যেমন সুপারি, নারকেল কিংবা পামজাতীয় গাছের পাতাই খায় না, একই সঙ্গে সৌন্দর্যবর্ধনকারী গাছ মেহেদি ও ড্রসিনার পাতাও খেয়ে গাছকে পল্লবহীন করে মেরে ফেলে। বাংলাদেশে সুপারি ও নারকেলগাছে ক্ষতিকারক প্রজাতির ব্যাগওয়ার্ম মথ শনাক্তকরণ ও এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে গবেষণা প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘২০১৮ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের খামারের সুপারিগাছে সর্বপ্রথম এ প্রজাতির ব্যাগওয়ার্ম দৃষ্টিগোচর হলে তা সংগ্রহ করে গবেষণাগারে লালন-পালন করে এর পূর্ণাঙ্গ জীবনচক্র দেখা হয়। কারণ মুক্তাবস্থায় পূর্ণাঙ্গ মথ খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন এবং প্রজাতি শনাক্তকরণে পূর্ণাঙ্গ পুরুষ মথ প্রয়োজন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গবেষকরা নিশ্চিত হয় যে এটি মাহাসিনা করবেটি (Mahasena corbetti) প্রজাতির মারাত্মক ক্ষতিকারক ব্যাগওয়ার্ম। গবেষণা চলাকালে গবেষকরা এ প্রজাতির পোকার উপস্থিতি নারকেল, মেহেদি ও ড্রসিনাগাছেও লক্ষ করেন। এ পোকার হোস্টপ্ল্যান্টের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিভাবে এ পোকা দমন করা যায়—এ প্রশ্নের জবাবে ড. আতিকুর রহমান বলেন, ‘এ পোকা দমন করতে হলে শুরুতেই সিস্টেমিক কীটনাশক প্রয়োগ করে লার্ভা এবং সঠিক ফেরোমন/আলোফাঁদ ব্যবহার করে পূর্ণাঙ্গ মথ মেরে ফেলতে হবে; ব্যাগের ভেতর থাকাকালে মারা একটু কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে যাবে। সঠিক দমন পদ্ধতি উদ্ভাবনে আমাদের গবেষণা কার্যক্রম চলমান। ’ এ গবেষণায় অন্য গবেষকরা হলেন কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী মো. সাব্বির তালুকদার, মো. রুবেল কাজী ও মো. সাদিকুল ইসলাম।