ইসরাত জাহান সুমাইয়া:
বরিশাল ব্রজমহন (বিএম) কলেজে সম্মান প্রথম বর্ষে ভর্তিতে বিভাগীয় ফি বাবদ দুই হাজার ২৩০ টাকা নেওয়া হলেও এর মধ্যে ৬৩০ টাকা কোন খাতে যাচ্ছে- এর হদিস পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের এক হাজার ৬০০ টাকা গ্রহণের রশিদ দিচ্ছে। বাকি টাকার কোনো রশিদ দেওয়া হচ্ছে না। কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছেও এর কোনো সদুত্তর নেই।
তবে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারা জানান, সেমিনার ফি, শিক্ষা সফর ও ইনকোর্স ফির ৬৩০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। তবে রশিদের সংকট থাকায় তা শিক্ষার্থীদের দেওয়া যাচ্ছে না। কলেজ কর্তৃপক্ষের এ বক্তব্য বিশ্বাস করছেন না শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, শিক্ষকরা ভর্তি-বাণিজ্য হিসাবে শিক্ষার্থীপ্রতি ৬৩০ টাকা করে নিচ্ছেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সম্মান প্রথম বর্ষে ভর্তি কার্যক্রম ২৩ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয় গতকাল শনিবার। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত প্রথম মেধা তালিকায় বিএম কলেজে পাঁচ হাজার ২০০ জনের মধ্যে তিন হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রকাশিত ভর্তি নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফি তিন হাজার ২০৫ টাকা জমা দিতে হবে শিওর ক্যাশের মাধ্যমে। তা ছাড়া বিভাগীয় ফি (সেমিনার-শিক্ষা সফর ও ইনকোর্স ফি) বাবদ শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বিভাগে দুই হাজার ২৩০ টাকা জমা দিতে হবে।
তবে একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তারা দুই হাজার ২৩০ টাকা জমা দিলে তাদের এক হাজার ৬০০ টাকা উল্লেখ করে প্রাপক রশিদ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও ভবিষ্যতে শিক্ষকদের উদ্দেশ্যমূলক হয়রানির আশঙ্কায় শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নুসরত জাহান বলেন, বিষয়টি আপাতত প্রশ্নবিদ্ধ হলেও পরে সব শিক্ষার্থীকে ওই ৬৩০ টাকার রশিদ দেওয়া হবে।
ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ইতিহাস বিভাগের প্রধান আবু সাদেক মোহাম্মদ শাহ আলম প্রথমে দাবি করেন, এক হাজার ৬০০ টাকার রশিদ ছাড়া আরও দুটি পৃথক রশিদের মাধ্যমে মোট দুই হাজার ২৩০ টাকার হিসাব শিক্ষার্র্থীদের দেওয়া হচ্ছে। তার এ বক্তব্য সঠিক নয় বলা হলে একপর্যায়ে তিনি জানান, তার বিভাগসহ অনেক বিভাগে রশিদ দেওয়া হচ্ছে। অন্য বিভাগে কেন রশিদ দিচ্ছে না তিনি এর খোঁজ নেবেন।
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, আহ্বায়কের এ বক্তব্যও মিথ্যা। ইতিহাস বিভাগেও তাদের শুধু এক হাজার ৬০০ টাকারই রশিদ দেওয়া হয়েছে।