ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির আঘাতে লণ্ডভণ্ড ভিয়েতনাম। এটিকে এশিয়ায় চলতি বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় বলা হচ্ছে। ইয়াগির আঘাতের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রতিবেশী মিয়ানমারও। একদিকে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত, এরমধ্যে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত দেশটি।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, ইতোমধ্যে বন্যায় মিয়ানমারে অন্তত ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং দুই লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নে পাই তাওসহ মিয়ানমারের মোট ৩৪টি অঞ্চল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেখানে ৫৯ হাজার পরিবারের অন্তত দুই লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৮৭ বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে মিয়ানমার নিহতের সংখ্যা ৩৩ জানালেও, এই সংখ্যা আরও বেশি বলে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে রেডিও ফ্রি এশিয়া। তাদের প্রতিবেদনে যে সব ছবি প্রকাশ পেয়েছে, তাতে চলমান বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন সমর্থিত সংবাদমাধ্যমটি শুক্রবার জানিয়েছে, চলমান বন্যা ও ভূমিধসে মিয়ানমারে অন্তত ১৬০ জন নিহত হয়েছে। এতে যুদ্ধ এবং স্থবির অর্থনীতিতে জর্জরিত দেশটিতে ব্যাপক দুর্ভোগের জন্ম দিয়েছে।
জাতিগত সংঘাত এবং গণতন্ত্রপন্থী বিদ্রোহীগোষ্ঠীর আক্রমণের মুখে অঞ্চল ধরে রাখতে লড়াই করছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এরমধ্যে বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি সামরিক জান্তাকে আরও বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। দুর্যোগ মোকাবিলা এবং ত্রাণ সংস্থান কীভাবে সামলাবে জান্তা সরকার, তা নিয়ে গুরুতর বিপর্যয় ধারণা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের মতে, গত তিন বছরের গৃহযুদ্ধের কারণে মিয়ানমারে হাজার হাজার মানুষ নিহত এবং ২৬ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় (ওসিএইচএ) বলছে, মিয়ানমারে বর্তমানে প্রায় এক কোটি ৮৬ লাখ মানুষের জরুরি মানবিক সহায়তা প্রয়োজন রয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, চীন, থাইল্যান্ড, লাওস এবং ফিলিপাইনসহ ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত দেশটির বেসামরিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি।