ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনের দুই প্রতিষ্ঠান শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ কনসোর্টিয়াম (জোট) ডিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ারের বিপরীতে ৯৬২ কোটি টাকা জমা দিয়েছে। এর মধ্য থেকে সরকারের কোষাগারে স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ ১৫ কোটি টাকা জমা দিয়েছে ডিএসই। বাকি ৯৪৭ কোটি টাকা ডিএসইর সদস্য ব্রোকারদের শর্তহীনভাবে ভাগ করে দেয়া হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান। চীনা জোটের কাছ থেকে অর্থ প্রাপ্তি এবং ডিএসইর শেয়ার হস্তান্তর উপলক্ষে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মাজেদুর রহমান বলেন, কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে দু’টি জোটের কাছ থেকে আমরা উল্লেখযোগ্য প্রস্তাব পায়। সেই প্রস্তাব পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন পেতে শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ কনসোর্টিয়াম প্রস্তাব পাঠানো হয়। বিএসইসি আমাদের প্রস্তাব দ্রুত অনুমোদন করে।
তিনি বলেন, ২৫ শতাংশ শেয়ারের বিপরীতে চীনা জোট ইতোমধ্যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ট ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়েছে। আজ সকালে বোর্ড সভার মাধ্যমে ডিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ার চীনা জোটের অনুকূলে হস্তান্তর করা হয়েছে। শেয়ারের বিপরীতে চীনা জোটের কাছ থেকে ৯৬২ কোটি টাকা এসেছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ কোটি টাকা স্ট্যাম্প ডিউটি হিসেবে সরকারের কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শেয়ার বিক্রির এই টাকা ডিএসইর সদস্য ব্রোকারদের। কোনো প্রকার শর্ত ছাড়াই এ টাকা ব্রোকারদের বুঝিয়ে দেয়া হবে। ব্রোকাররা তাদের ইচ্ছা মতো টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন। তবে তারা যেহেতু শেয়ার ব্যবসা করেন, তাই আমরা আশা করব তারা এ টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করবেন।
তবে কবে নাগাদ শেয়ার বিক্রির টাকা সদস্যদের বুঝিয়ে দেয়া হবে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন এক প্রশ্ন করা হলে তার কোনো উত্তর দেননি মাজেদুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হাশেম, পরিচালক বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান মিয়া, রকিবুর রহমান, মিনহাজ মান্নান ইমন, শরীফ আতাউর রহমান, চীনা জোটর প্রতিনিধি হিসেবে ডিএসইর নতুন পরিচালক নির্বাচিত হওয়া চি ওয়েন হাই প্রমুখ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে চি ওয়েন হাই বলেন, চীনা জোট গভীর গবেষণা ও পারস্পরিক পরামর্শের মাধ্যমে একটি আন্তরিক, সহযোগিতামূলক ও উভয়ের জন্য উপকারী কাজ করবে। দরপত্রে ব্যবসা ও প্রযুক্তিগত সহযোহিতার ভিশন নিয়ে স্পষ্ট ধারণা দেয়া হয়েছে। ডিএসই ও চীনা কনসোর্টিয়াম উভয় দেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সহযোগিতা করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সহযোগিতা করবে চীনের দুই শেয়ারবাজার শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম। এক্ষেত্রে লেনদেনে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, পণ্যের উন্নয়ন ও বাজারের বিভিন্ন বিষয়ের উন্নয়নকে গুরুত্ব দেয়া হবে।
এর আগে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হাশেম বলেন, শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে ডিএসইর অংশীদার হয়েছে বিশ্বের নামকরা শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ। এর মাধ্যমে ডিএসই আন্তর্জাতিকমানের স্টক এক্সচেঞ্জে রূপান্তর হয়েছে।
উল্লেখ্য, চীনা জোটটিকে ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চলতি বছরের ৩ মে অনুমোদন দেয়া নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। বিএসইসির অনুমোদনের পর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে গত ১৪ মে চীনা জোটের সঙ্গে চুক্তি সই করে ডিএসই। ওই চুক্তি অনুযায়ী, কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনা জোট ডিএসইর ২৫ শতাংশ বা ৪৫ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ১২৫টি শেয়ার কিনে নিয়েছে।