হাতুড়িপেটা করে পদত্যাগে বাধ্য করানো ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দী নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সেই অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুর রহমানকে ফুল দিয়ে বরণ করে কলেজে নিয়ে এসেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার বেলা ১১টার দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে থাকা কোয়ার্টারের বাসা থেকে তার গলায় ফুলের মালা পরিয়ে তাকে কলেজে নিয়ে আসেন শতাধিক শিক্ষার্থী।
বাসা থেকে হেঁটে তাকে নিয়ে আসার সময় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে অধ্যক্ষকে কলেজের নিজ কার্যালয়ের চেয়ারে বসিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী মো. হাসিব শেখ, তারিকুল মুন্সী ও নাইমা আক্তার বলেন, আমাদের অধ্যক্ষ স্যার একজন ভালো মানুষ। মিথ্যা অভিযোগ তুলে কিছু দিন আগে অধ্যক্ষ স্যারকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জোর করে তার কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে সই নেয় এলাকার একটি সন্ত্রাসী বাহিনী ও কতিপয় দুষ্কৃতকারী শিক্ষার্থী। এরপর থেকে স্যার অসুস্থ হয়ে বাসায় অবস্থান করছিলেন। রোববার সকালে আমরা শিক্ষার্থীরা স্যারকে তার বাসা থেকে সম্মানের সঙ্গে নিয়ে এসেছি।
তারা আরও বলেন, অন্যায়ভাবে যারা স্যারকে পিটিয়ে পদত্যাগে সই করাতে বাধ্য করেছে আমরা তাদের বিচার চাই। আমরা ২৪ ঘণ্টার সময় দিয়েছি, এর মধ্যে যদি হামলাকারী সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা না হয়, তাহলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
শিক্ষার্থীরা কলেজে নিয়ে আসার পর অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, আমার প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। তারা সজীবতা বুঝতে পেরেছে। তাই আমাকে সম্মান দিয়ে বাসা থেকে কলেজে নিয়ে এসেছে। আমি আমার প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। পাশাপাশি আমার ওপর হামলা ও জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে সই করানোর ঘটনাটি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য ইউএনও স্যার, সেনাবাহিনী ও পুলিশের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
উল্লেখ্য, গত ৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুর রহমানকে হাতুড়িপেটা করে পদত্যাগপত্রে সই নেন স্থানীয় প্রভাবশালী কাইয়ুম মোল্যা ও কামরুল গাজীর সমর্থকরা।